যুদ্ধং দেহি বিকাশ। বুধবার রিওতে। -পিটিআই
শেষ রাউন্ডে যুক্তরাষ্ট্রের বক্সারের জ্যাব আর আপার কাট সামলাতে রীতিমতো পরিশ্রম করতে হচ্ছিল তাঁকে। আশঙ্কা হচ্ছিল লন্ডন অলিম্পিক্সের মতোই তিনি বিদায় নেবেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সফল তিনি— বিকাশ কৃষাণ যাদব। আশঙ্কার মেঘ উড়িয়ে ছেলেদের ৭৫ কেজি বিভাগে বিকাশ জিতলেন ৩-০।
ফল একেবারে কানের পাশ দিয়ে। ২৯-২৮, ২৯-২৮, ২৯-২৮। তবুও তো মধুর প্রতিশোধ। ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিযোগী তরুণ। ও আক্রমণে আসবে জানতাম। সে জন্যই শুরুর দু’রাউন্ডেই আমি যা করার করব ঠিক করেছিলাম। আমি অভিজ্ঞ এই সুযোগটা আমাকে নিতেই হতো,’’ ডোপ টেস্ট দিতে যাওয়ার আগে বলে গেলেন বিকাশ।
লন্ডন অলিম্পিক্সে যুক্তরাষ্ট্রেরই এক বক্সারের বিরুদ্ধে জিতেও টেকনিক্যাল কারণে বিকাশকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী রিভিউয়ের আবেদন করেছিলেন। তাই বিকাশের হাত তুলে রেফারি প্রথমে বিজয়ী ঘোষণা করার পরও অন্য পরীক্ষকরা তা বাতিল করে দেন। সে জন্যই এ দিন রিও সেন্টারের প্যাভিলিয়ান ফাইভে যুক্তরাষ্ট্রের চার্লস কর্নেলের বিরুদ্ধে যেন আলাদা জোশ নিয়ে নেমেছিলেন বিকাশ। গোটা স্টেডিয়ামের অস্থায়ী অ্যালুমিনিয়াম গ্যালারিতে অসংখ্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থক হাজির ছিল। গ্যালারিতে পা ঠুক ঠুকে তারা এমন একটা শব্দব্রহ্ম তৈরি করছিল যে, কান পাতাই দায়। তবে বিকাশকে উৎসাহ দিতে ভারতের পতাকা নিয়ে হাজির ছিলেন অন্য বক্সাররা। শিব থাপা থেকে শুরু করে সবাই। কিন্তু লাল-জার্সি পরে আসা বিকাশ লক্ষ্যে এতটাই অবিচল ছিলেন যে, মনে হচ্ছিল এ সবের কোনও তোয়াক্কাই করছেন না।
বিশ্ব বক্সিংয়ে ব্রো়ঞ্জজয়ী বিকাশকে এর পর প্রি-কোয়ার্টারে লড়তে হবে তুরস্কের সিপাল ওন্ডার সঙ্গে। সেই বাধা টপকালে তাঁর সামনে পড়তে পারেন গত বারের অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন। তবে বিকাশ এ সব নিয়ে এখন মাথা ঘামাতে চাননি। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ালি মোজেস অ্যাকাডেমিতে দু’মাস ট্রেনিং করে এসেছেন। বলছিলেন, ‘‘হার্ড ট্রেনিংয়ের জন্য ওখানে সবাই যায়। তাই গেছি। অলিম্পিক্সে সবাই পদক জিততে চায়। আমিও। কিন্তু কাজটা সোজা নয়। আমি চেষ্টা করব।’’
তাঁর কোচ গুরবক্স সিংহ সাঁধু এসেছিলেন ছাত্রের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘‘আমাদের বক্সাররা কঠিন গ্রুপে পড়েছে। তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ওরা এর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই নেমেছে।’’ বুধবার ভারতীয় সময়ে ভোরের দিকে নামবেন কমনওয়েলথ গেমসের সোনাজয়ী বক্সার মনোজ কুমার। তারপর শিব থাপা। তবে যা পরিস্থিতি দু’এক রাউন্ড এগোলেও বক্সিং থেকে পদক পাওয়ার সম্ভাবনা কঠিন বলে মনে হচ্ছে অনেকেরই। বিকাশদের তাই রিংয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হচ্ছে তাদের ভুল প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy