Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জোড়া সোনা জিতেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্রাত্য স্বপ্না

গত বছর কোনও রকম ট্রায়াল ছাড়াই টুর্নামেন্টে গিয়েছিলেন রাখি মণ্ডল। এ বার কোনও এক অজ্ঞাত কারণে উলটপুরাণ। ট্রায়াল না দেওয়ায় বাংলা এবং ভারতের অন্যতম সেরা অ্যাথলিট স্বপ্না বর্মনকে ছেঁটে ফেলা হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাথলেটিক্স দল থেকে।

স্বপ্না বর্মন।

স্বপ্না বর্মন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
স্বপ্না বর্মন। শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:১৪
Share: Save:

গত বছর কোনও রকম ট্রায়াল ছাড়াই টুর্নামেন্টে গিয়েছিলেন রাখি মণ্ডল।

এ বার কোনও এক অজ্ঞাত কারণে উলটপুরাণ। ট্রায়াল না দেওয়ায় বাংলা এবং ভারতের অন্যতম সেরা অ্যাথলিট স্বপ্না বর্মনকে ছেঁটে ফেলা হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাথলেটিক্স দল থেকে। সেই স্বপ্না, যিনি গত বার সর্বভারতীয় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় জোড়া সোনা সহ রেকর্ড গড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে যা কখনও হয়নি। এই ঘটনায় তোলপাড় কলেজগুলোতেও। অ্যাথলিট নির্বাচন নিয়ে ঝামেলার জের পৌঁছচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপচার্যের কাছেও। জমা পড়েছে অভিযোগের চিঠি। তাতে দেখানো হয়েছে বিস্তর অনিয়ম।

শুধু স্বপ্নাই নয়, বাদ পড়েছেন জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতার পদকজয়ী ডলি বিশ্বাস, রিন্টু গায়েনরা। সর্বভারতীয় স্তরে পদক পেলেও ময়দানের এবড়ো খেবড়ো বিশ্ববিদ্যালয় মাঠের ২৮০ মিটারের ট্র্যাকে নিজস্ব সময় করতে পারেননি ডলি-রিন্টুরা। চোট লাগার আশঙ্কায় নিজেদের উজাড় করে দিতে ভয় পেয়েছেন সবাই। কিন্তু কেন স্বপ্না বাদ? প্রশ্ন করা হলে নির্বাচক কমিটির অন্যতম সদস্য প্রাক্তন অ্যাথলিট মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমি কিছু জানি না। কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করুন। ওরা তো বলছে যে ট্রায়াল দেয়নি তাঁকে নেওয়া যাবে না।’’ কিন্তু গত বছর হেপ্টাথলনে রাখি মণ্ডল কী ভাবে গেলেন? ওই নির্বাচকের মন্তব্য, ‘‘আমার তো মনে হয় স্বপ্নাকে পাঠানো উচিত।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সার্টিফিকেট থাকলেই চাকরি পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। নানা সুযোগসুবিধা মেলে। সে জন্যই বিভিন্ন দলে ঢোকার জন্য নানা বেনিয়ম চলে বলে অভিযোগ উঠেছে বহু বার। স্বপ্নাদের বাদ দেওয়া তারই একটি নমুনা। স্বপ্না নিজে বললেন, ‘‘আমি আন্তর্জাতিক স্তর থেকে দেশের জন্য পদক আনি। পিঠের ব্যথার জন্য ট্রায়ালে নামতে পারিনি। সে জন্য বাদ দেওয়া হয়েছে শুনেছি। বাংলা এবং দেশের হয়ে পদক এনেছি। তার পরও আমাকে ট্রায়াল দিয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে! আমি গেলে দু’টি পদক তো আনতামই। বিশ্ববিদ্যালয় টিমেরই ক্ষতি হচ্ছে।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস অফিসার প্রেমা লামাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে যাঁর বিরুদ্ধে অন্যায় ভাবে দলে অ্যাথলিট ঢোকানোর অভিযোগ জমা পড়েছে সহ উপাচার্যের কাছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া বিভাগের সেই কর্মী প্রদীপ চৌধুরী বললেন, ‘‘আমি কিছু জানি না। সব নির্বাচকরা করেছেন। এর বাইরে সরকারি ভাবে আমি কিছু বলতে পারি না।’’ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে অবশ্য লেখা হয়েছে, নির্বাচকদের ছাড়াই দল নির্বাচন হয়েছে।

এ বারের সর্বভারতীয় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা হচ্ছে চেন্নাইয়ের আন্না ইউনিভার্সিটিতে। কলকাতা থেকে ইতিমধ্যেই ১৪ জনের নাম পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Swapna Barman Athlete
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE