অস্ত্র: গতি এবং বাউন্স হাতিয়ার বুমরার।ভুবনেশ্বরের সঙ্গে অ্যান্ডারসনের তুলনা। ফাইল চিত্র
আসন্ন ভারত-অস্ট্রেলিয়া দ্বৈরথে দু’দেশের পেস আক্রমণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছেন প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় মিডিয়াম পেসার ড্যামিয়েন ফ্লেমিং। একই সঙ্গে ফ্লেমিং দু’জনের নাম করছেন, যাঁরা আসন্ন সিরিজে ভারতের তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন। এই দুই পেসার হলেন, যশপ্রীত বুমরা এবং ভুবনেশ্বর কুমার।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এই জুটি বিশ্বের অন্যতম সেরা হয়ে উঠেছে। এ বার টেস্টেও এই দুই পেসার বিপক্ষের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারেন বলে মনে করছেন ফ্লেমিং। এঁদের একজন— বুমরাকে তিনি বলছেন, ভারতীয় বোলিংয়ের ‘এক্স ফ্যাক্টর’। অন্য জন, ভুবনেশ্বরের সঙ্গে ইংল্যান্ডের জেমস অ্যান্ডারসনের তুলনা করেছেন ফ্লেমিং।
অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদপত্রে ফ্লেমিং বলেছেন, ‘‘ছ’টা টেস্টে ২৮টি উইকেট পেয়েছে বুমরা। ও কিন্তু আসল এক্স ফ্যাক্টর হতে চলেছে এই সিরিজে।’’ বুমরাকে নিয়ে ফ্লেমিং আরও বলেছেন, ‘‘আমি ওকে আইপিএলে দেখেছি। অদ্ভুত অ্যাকশন, অদ্ভুত রান আপের জন্য ও ব্যাটসম্যানদের সমস্যায় ফেলে দেয়। ব্যাটসম্যানরা ঠিক করে ওর গ্রিপ দেখতে পায় না। কী ভাবে বলটা ধরেছে, সেটা বোঝা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে ব্যাটসম্যানদের পক্ষে।’’
দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট অভিষেক হওয়ার পরে ভারতের অন্যতম সেরা অস্ত্র হয়ে উঠেছেন বুমরা। ইংল্যান্ড সফরেও বুমরার বলে সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরা। ফ্লেমিং বলছেন, ‘‘এর সঙ্গে রয়েছে বুমরার গতি এবং বাউন্স। আরও একটা অস্ত্র আছে বুমরার। সেটি হল ইয়র্কার। আমি নিশ্চিত, শেষের দিককার ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে ওই বলটা কাজে লাগাবে বুমরা।’’
তবে শুধু বুমরা নয়, ভুবনেশ্বরের কথাও আলাদা করে বলেছেন ফ্লেংমিং। তুলে এনেছেন তাঁর দু’দিকে বল সুইং করানোর ক্ষমতার কথাও। ইংল্যান্ড এবং বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা সুইং বোলার— জেমস অ্যান্ডারসনের সঙ্গে ভুবনেশ্বরের তুলনা টেনে এনে ফ্লেমিং বলেছেন, ‘‘ভুবির বোলিং দেখতেও আমার খুব ভাল লাগে। আমি তো বলব, জেমস অ্যান্ডারসন আর ভুবনেশ্বর হল এই মুহূর্তে দুনিয়ার সেরা দুই সুইং বোলার। ডান হাতি, বাঁ হাতি দু’ধরনের ব্যাটসম্যানকেই আউটসুইং, ইনসুইং করাতে পারে ভুবি।’’ একই সঙ্গে ফ্লেমিং মনে করছেন, এই ভারতীয় পেসারের গতিও আগের চেয়ে বেশ বে়ড়েছে। ফ্লেমিংয়ের মন্তব্য, ‘‘ভুবি যখন টেস্ট খেলা শুরু করেছিল, তখন ওর গতি একটু কম ছিল। এর পরে ও নিজের গতি বাড়িয়ে নিতে পেরেছে। যা দারুণ ভাবে কাজে দিচ্ছে।’’
ভারতের বিরুদ্ধে প্রচুর ওয়ান ডে এবং টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে ফ্লেমিংয়ের। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলছেন, ‘‘এত ভাল পেস আক্রমণ নিয়ে এর আগে ভারত কোনও দিন অস্ট্রেলিয়া এসেছিল বলে আমার মনে পড়ছে না। পাশাপাশি ভারতীয় পেসাররা এখন যথেষ্ট অভিজ্ঞও।’’ ভুবনেশ্বর, বুমরা ছাড়াও টেস্ট সিরিজে ভারতীয় দলে আছেন মহম্মদ শামি, ইশান্ত শর্মা এবং উমেশ যাদব। ফ্লেমিং বলেছেন, ‘‘দু’জন ভাল পেসারকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকতে হবে। এটা অবশ্য ভারতীয় দলের পক্ষে একটা ভাল দিক।’’
ফ্লেমিং মনে করছেন, দু’দেশের আসন্ন দ্বৈরথে পেস বোলারদের ভূমিকাটা বড় হতে চলেছে। ‘‘আমাদের দেশের পেস আক্রমণও যথেষ্ট ভাল। আমার মনে হয়, লড়াইটা দু’দেশের পেসারদের মধ্যে হতে যাচ্ছে।’’ অস্ট্রেলীয় পেস আক্রমণ সামলানোর কথা মিচেল স্টার্ক, জশ হেজেলউড, প্যাট কামিন্সের।
শুধু ফ্লেমিংই নন, ভারতীয় পেস আক্রমণের প্রশংসা শোনা গিয়েছে এক অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তির মুখেও। তিনি অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। একটি ওয়েবসাইটে গিলক্রিস্ট বলেছেন, ‘‘ভারতীয় পেসাররা সবাই খুব ভাল, আগ্রাসী বোলার। সবাই ফিট, গতিও ভাল আছে ওদের। এইটুকু বলতেই পারি, ভারতীয় পেসারদের দক্ষতা আছে অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের মোকাবিলা করার।’’
তবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতীয় পেসাররা সফল হবেন কি না, এই নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি গিলক্রিস্ট। তিনি বলেছেন, ‘‘এই ভারতীয় পেসাররা একটা দল হিসেবে কখনও অস্ট্রেলিয়ায় খেলেনি। তাই বলা কঠিন, ওরা কী রকম করবে। তবে অস্ট্রেলীয় পেসাররা কিন্তু এই পরিবেশে দারুণ সফল হয়েছে।’’ আসন্ন সিরিজটা বিরাট কোহালি বনাম মিচেল স্টার্কের লড়াই হতে চলেছে, এমনও মনে করেন না গিলক্রিস্ট। তিনি বলেছেন, ‘‘শুধু স্টার্ক কেন, প্যাট কামিন্সও খুব ভাল বোলার। তা ছাড়া হেজেলউড আছে। ছেলেটা গ্লেন ম্যাকগ্রার মতোই এক জায়গায় বল করে যেতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy