আতঙ্ক: যশপ্রীত বুমরার বল লাগল এলগারের হেলমেটে। ছবি: এএফপি
শেষ পর্যন্ত ওয়ান্ডারার্স পিচ নিয়ে আশঙ্কা সত্যিতেই পরিণত হল শুক্রবার। টেস্টের তৃতীয় দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁ হাতি ওপেনার ডিন এলগারের মাথায় লাগে যশপ্রীত বুমরা-র বাউন্সার। এলগার শুশ্রূষা নেওয়ার ফাঁকেই ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট নেমে আসেন মাঠে। আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলে তিনি শুক্রবারের মতো দিনের খেলা ওখানেই ভণ্ডুল করার সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু ম্যাচ রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে ভারতীয় শিবিরে। এলগারের মাথায় লাগার পরে যখন খেলা শুরু করা হচ্ছে না, তখনই মাঠের মধ্যে আম্পায়ারদের সঙ্গে বেশ উত্তেজিত ভাবে কথা বলতে দেখা যায় বিরাট কোহালি-কে। তার পরেও অবশ্য ম্যাচ রেফারির সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। ক্রিকেটের আইন অনুযায়ী, পিচ যদি বিপজ্জনক মনে হয় বা ক্রিকেটারদের আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়, তা হলে আম্পায়াররা এবং ম্যাচ রেফারি মিলে নিজেরাও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন খেলা বন্ধ করার। সেটাই হয়েছে শুক্রবারের ওয়ান্ডারার্সে।
কিন্তু তাতে যে ভারতীয় দল মোটেও খুশি হতে পারছে না, সেটা পরিষ্কার। দিনের খেলা স্থগিত হওয়ার পরেই কোহালিকে দেখা যায় কোচ রবি শাস্ত্রীকে নিয়ে আম্পায়ার এবং ম্যাচ রেফারির ঘরে ছুটছেন। ঘরের বাইরে তখন প্রচুর ভারতীয় সমর্থক দাঁড়িয়ে। তাঁরা কোহালি এবং শাস্ত্রীকে দেখে উত্তেজিত ভাবে বলতে থাকেন, খেলা চালু করতে হবে। শাস্ত্রী বিড়বিড় করতে থাকেন, ওরা নিজেদের দেশে খুব আগুন ঝরাতে গিয়েছিল ফাস্ট পিচ বানিয়ে। এখন পাল্টা আগুনে পুড়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে! এ বার খেল না দেখি।
সিদ্ধান্ত: ভারতীয় ক্রিকেটারদের মাঠ ছেড়ে বেরোনোর নির্দেশ দিচ্ছেন আম্পায়ার মাইকেল গঘ। শুক্রবার জোহানেসবার্গে। ছবি: এপি
কিছুক্ষণ পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে প্রশাসনিক ম্যানেজার সুনীল সুব্রহ্মণম বলে যান, ‘‘এই পিচ আমরা বানাইনি। ওরা বানিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলা হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বানানো পিচ। আমরা কোনও অভিযোগ না জানিয়ে খেলে গিয়েছি। ওরাও খেলুক।’’ উত্তেজিত ভাবে তিনি এর পর যোগ করছেন, ‘‘আমাদের ব্যাটসম্যানেরা সারাক্ষণ একই পিচে শর্ট বল খেলে গিয়েছে। আমরা খেলা চালিয়ে যেতে চাই।’’
আরও পড়ুন: ধোনি-গাওস্করকে ছাপিয়ে নয়া রেকর্ড কোহালির
ভারতীয় দলের ম্যানেজার জানান, চা-পানের সময় প্রথম ম্যাচ রেফারি কথা বলেন তাঁদের সঙ্গে। জানান যে, পিচের পরিস্থিতি যদি খারাপ হতে থাকে তা হলে দু’দলের অধিনায়ককে ডেকে কথা বলা হতে পারে। ভারতীয় শিবিরের বক্তব্য হচ্ছে, পিচের পরিস্থিতি মোটেও দুম করে খারাপ হয়নি। শুরু থেকেই কঠিন ছিল ব্যাটসম্যানদের জন্য। এ দিনও তার তারতম্য ঘটেনি। ম্যানেজার আরও বলছেন, ‘‘তিন দিন ধরে পিচ যেমন ছিল, আজও সেরকমই ছিল। এ দিনই সব চেয়ে কম উইকেট পড়েছে। সব চেয়ে দ্রুত রান উঠেছে। সব চেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেট ছিল আজ। তা হলে কী করে পিচ খারাপ হয়ে গেল?’’
ভারতীয় শিবিরের খারাপ লাগার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। দেশের মাঠে ঘূর্ণি বানিয়ে জেতার জন্য আজও কোহালিদের কথা শুনতে হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় অতিরিক্ত পেস ও বাউন্সের উইকেটে তাঁদের খেলতে হলেও কোনও অভিযোগ জানাননি কেউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy