Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
বাংলার অর্জুন: করোনার কঠিন সময় পেরিয়ে মাঠে ফেরার অপেক্ষায়
Cricket

দাদার আত্মত্যাগই অনুপ্রেরণা দীপ্তির

ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন দীপ্তি। তাঁর একমাত্র অনুপ্রেরণা দাদা, সুমিত শর্মা।

আত্মবিশ্বাসী: সম্মান পেয়ে আরও উন্নতির লক্ষ্য দীপ্তির। ফাইল চিত্র

আত্মবিশ্বাসী: সম্মান পেয়ে আরও উন্নতির লক্ষ্য দীপ্তির। ফাইল চিত্র

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২০ ০৫:৪৫
Share: Save:

আগরার মতো ছোট শহর থেকে উঠে এসে ভারতীয় দলে ডাক। সেখান থেকে বিশ্বকাপ যাত্রা। দেশের হয়ে একাধিক ম্যাচে পারফর্ম করার পরে তাঁর হাতে উঠতে চলেছে অর্জুন পুরস্কার। ২৯ অগস্ট যা হাতে পাবেন ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার দীপ্তি শর্মা।

ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন দীপ্তি। তাঁর একমাত্র অনুপ্রেরণা দাদা, সুমিত শর্মা। পেস বোলার হিসেবে উত্তরপ্রদেশের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২৩ দলে খেলেছেন সুমিত। দাদা যখনই অনুশীলনে যেতেন, পিছু পিছু দেখতে যেতেন দীপ্তি। একদিন অনুশীলনের সময় দীপ্তির কাছে একটি বল আসে। দূর থেকে তাঁর দাদার হাতে বলটি ছুড়ে দেন দীপ্তি। মাত্র ১২ বছর বয়সে বোনের হাতের জোর দেখে বিস্মিত হন দাদা। পরের দিন থেকে কানপুরের একলব্য স্পোর্টস স্টেডিয়ামে ছোট বোনকে অনুশীলনে নিয়ে আসেন সুমিত। বাকিটা ইতিহাস।

দীপ্তির প্রতিভা নজর কাড়ে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার হেমলতা কলার। মাত্র ১৩ বছর বয়সে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গে নেট করতে শুরু করেন দীপ্তি। সেখানেও বাকিদের ছাপিয়ে গিয়ে রাজ্য দলে সুযোগ পান এই তরুণী। জুনিয়র স্তরে পারফর্ম করে ডাক পান উত্তরপ্রদেশের সিনিয়র ও ভারতীয় ‘এ’ দলে। মাত্র ১৭ বছর বয়সে ভারতীয় জার্সিতে অভিষেক হয় তাঁর।

আরও পড়ুন: বাবা ঠেলাগাড়ি চালাতেন, বেঁচে থাকাটাই ছিল কঠিন, বলছেন খেলরত্ন পাওয়া রানি

দীপ্তির দাদা সুমিত, তত দিনে ক্রিকেট ছেড়ে চাকরি করছেন। বোনের উন্নতি তাঁকে এতটাই প্রভাবিত করে যে, চাকরি ছেড়ে তিনি ফিরে আসেন আগরায়। বোনের জন্য ক্রিকেট অ্যাকাডেমি তৈরি করার লক্ষ্যে। যাতে কোনও ভাবে পরিকাঠামোর দিক থেকে সমস্যা না হয় দীপ্তির। তাই অর্জুন পুরস্কারের তালিকায় তাঁর নাম ঘোষণা করার পরে দাদাকে ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি বোন দীপ্তি। শনিবার আনন্দবাজারকে ফোনে তিনি বলেন, ‘‘দাদাই আমার অনুপ্রেরণা। ও না সাহায্য করলে এত দূর আসতে পারতাম না। ২০১৭ বিশ্বকাপ খেলার সময় বুঝতে পেরেছি, দাদার শিক্ষা কতটা কাজে লেগেছে। আজ আমি অর্জুন পুরস্কার পেতে চলেছি, বিশ্বাসই হচ্ছে না। আমার এই সাফল্যের জন্য দাদার অবদান ভুলতে পারব না।’’

ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ান ডে-তে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড তাঁর। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে ১৮৮ রান করেছিলেন ২০১৭ সালে। সেই ইনিংসের পর থেকেই দীপ্তিকে চিনতে শুরু করে ভারতীয় ক্রিকেটমহল। বলছিলেন, ‘‘ভারতের হয়ে সেই ইনিংস আমাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তার পরেই বিশ্বকাপে খেলার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। সেই ইনিংস আমার জীবনের বিশেষ অধ্যায় হিসেবে থেকে যাবে।’’ ২০১৭ বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে ২১৬ রান করার পাশাপাশি ১২টি উইকেটও ছিল এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান ও অফস্পিনারের।

বিশ্বকাপের পরেই তিনি চলে এসেছেন বাংলায়। শেষ তিন বছর বাংলার হয়েই রাজ্য স্তরের ম্যাচ খেলছেন। তিনি যোগ দেওয়ার পর থেকেই ট্রফি জিততে শুরু করে বাংলা। ২০১৯-এ অনূর্ধ্ব-২৩ ওয়ান ডে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন দীপ্তিরা। সে বছরই সিনিয়র ওয়ান ডে-তেও চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলা ঝুলন গোস্বামীর নেতৃত্বে। প্রতিযোগিতায় ৪৮৭ রান করে সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন দীপ্তি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket Cricketer Deepti Sharma Arjuna Award
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE