Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ধীরাজে মুগ্ধ মোহনবাগান ভক্তরা

খেলার শুরুতে যাঁকে সবুজ-মেরুন উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নিয়েছিলেন মোহনবাগান কর্তারা, সেই অ্যারোজ কোচ নর্টন দ্য মাতোসও তো উচ্ছ্বাসে ভাসলেন।

নায়ক: শরীর শূন্যে ভাসিয়ে ক্রোমার হেড বাঁচাচ্ছেন ধীরাজ সিংহ। এ ভাবেই বারবার ইন্ডিয়ান অ্যারোজ গোলরক্ষকের হাতে আটকে গেল মোহনবাগানের জয়ের স্বপ্ন। ছবি: শৌভিক দে

নায়ক: শরীর শূন্যে ভাসিয়ে ক্রোমার হেড বাঁচাচ্ছেন ধীরাজ সিংহ। এ ভাবেই বারবার ইন্ডিয়ান অ্যারোজ গোলরক্ষকের হাতে আটকে গেল মোহনবাগানের জয়ের স্বপ্ন। ছবি: শৌভিক দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৬
Share: Save:

সেরার পুরষ্কার হাতে নিয়ে ধীরাজ সিংহের মুখ থেকে বেরোল, ‘‘মোহনবাগানের বিরুদ্ধে সেরা হয়েছি। আমার স্বপ্ন স্বার্থক। বিশ্বকাপ অতীত। এটাই বর্তমান।’’ অসাধারণ সেভ করে ইউরোপের ক্লাবের দিকে পা বাড়িয়ে থাকা ইন্ডিয়ান অ্যারোজের গোলকিপার যে শুক্রবারও মন জিতে নিয়েছেন গ্যালারির। তাঁকে ছোঁয়ার জন্য মোহনবাগান সমর্থকদের সে কী আকুলতা! আর সেটা দেখে ঠিক অক্টোবরের দিল্লিতে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের দিন গুলোর মতোই মণিপুরী গোলকিপারের মুখে বারবার দেখা যাচ্ছিল উচ্ছ্বাসের অভিব্যক্তি।

আর যাঁর গোলে মোহনবাগান তাঁবু শুক্রবার ইতিহাস তৈরির দিনে অতৃপ্ত থাকল, সেই রাহুল কানুলিও বললেন, তাঁর স্বপ্ন পুরণের কথা। বলে দিলেন, ‘‘সবাই বলে কলকাতায় না খেললে তারকা হওয়া যায় না। সেখানে মোহনবাগানের মতো টিমের বিরুদ্ধে গোল করেছি। অসাধারণ অনুভূতি।’’

খেলার শুরুতে যাঁকে সবুজ-মেরুন উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নিয়েছিলেন মোহনবাগান কর্তারা, সেই অ্যারোজ কোচ নর্টন দ্য মাতোসও তো উচ্ছ্বাসে ভাসলেন। বলে গেলেন, ‘‘আমাকে বা আমার ছেলেদের যেভাবে ম্যাচের পর দাঁড়িয়ে উঠে হাততালি দিয়ে বাহবা জানিয়েছে গ্যালারি, তাতে আমি অভিভূত। কলকাতায় না খেললে এটা দেখতে পেতাম না।’’ সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘মোহনবাগানের পেনাল্টি নিয়ে আমারও সংশয় আছে।’’

ম্যাচের পরে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের অভিনন্দন। ছবি: সুমন বল্লভ

সঞ্জয় সেনের টিমের থেকে দু’পয়েন্ট কেড়ে নেওয়ার পর অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপার সমৃদ্ধ অ্যারোজ ফুটবলারদের চোখ-মুখে যখন স্বপ্নপূরণের রং মশাল, তখন প্রধান ফটকের বাইরে চলছে সবুজ-মেরুনের একদল সমর্থকের বিক্ষোভ। কখনও কোচ সঞ্জয় সেনের নামে স্লোগান, কখনও ফুটবলারদের উদ্দ্যেশে। নিয়মমেনে আনসুমানা ক্রোমা-সহ মোহনবাগান ফুটবলাররা মিক্সড জোনে এলেন, কিন্তু মুখে ভাষা নেই। ফ্যাশন শো-এর ঢঙে হেঁটে এলেন, আবার ফিরেও গেলেন তাঁবুতে। আর ড্রেসিংরুমে পুরো টিমকে বসিয়ে কর্তারা রীতিমতো কার্ড দেখালেন ফুটবলারদের। ইঙ্গিত দিলেন এই বলে যে, ‘‘ম্যাচ জিততে না পারলে এ বার আর্থিক শাস্তির মুখে পড়তে হবে।’’ অর্থাৎ কার্যত মাইনে কাটার হুমকি।

আর যাঁর বিরুদ্ধে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান উঠেছে ম্যাচের পর, সেই মোহনবাগান কোচ বলে দিলেন, ‘‘এতে আমি একেবারেই চিন্তিত নই। না জিততে পারলে এটা তো হবেই। ডার্বি জেতার পর যাঁরা মাথায় তুলে নেচেছিল, তাঁরাই গালাগালি দেবে। সমর্থকদের আবেগ তো এটাই। ওদের কোনও দোষ নেই।’’ তিন সপ্তাহ আগেই আই লিগ ডার্বি জিতেছেন। গত তিন বছরে একটা করে আই লিগ ও ফেড কাপ জিতেছেন। সেই মোহনবাগান কোচ এ দিন মেনে নিয়েছেন, বিশ্বকাপারদের সামনে তাঁর টিম চাপে পড়ে গিয়েছিল। ‘‘বারবার বলা সত্ত্বেও টিমটা চাপ থেকে বেরোতে পারল না। মাটিতে বল রেখে খেলতে বললেও খেলতে পারেনি। যদি বলেন সব দোষ আমার, মেনে নিচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE