জানি না কেন ঝুলন গোস্বামীকে প্রথম দেখেই মনে হয়েছিল, ও পেস বোলার হওয়ার জন্যই যেন জন্মেছে। ও রকম লম্বা মেয়ে তো আমাদের দেশে তেমন দেখতে পাওয়া যায় না। আর একজন পেস বোলারের জন্য উচ্চতাই যেখানে অন্যতম সেরা গুণ, সেখানে ও ভাল কিছু করতেই পারে।
মঙ্গলবার যখন শুনলাম, ঝুলন ওয়ান ডে-তে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক হয়েছে, তখন সে দিনের সেই কথাগুলো মনে পড়ছিল। যখন আমি ওকে প্রায়ই বলতাম, ‘তুই ভাল করে প্র্যাকটিস কর, সাফল্য পাবিই।’
আমি শেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছি ১৯৯৩ সালে। তার ন’বছর পরে ঝুলন ভারতের হয়ে খেলা শুরু করেছে। কিন্তু ওকে ঘরোয়া ক্রিকেটে আমি দেখেছি। আমি খেলতাম রেলওয়েজের হয়ে আর ঝুলন ছিল এয়ার ইন্ডিয়া দলে। দুই দলের মধ্যে ছিল চরম শত্রুতা। যেখানেই মুখোমুখি হতাম, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হত। সে রকমই এক ঘরোয়া ম্যাচে ওকে প্রথম দেখি। লম্বা, ছিপছিপে চেহারার মেয়েটাকে দেখে অবাক হয়েছিলাম। পরে যখন ওর বিরুদ্ধে খেলি, তখন বুঝলাম ওর মধ্যে বড় ক্রিকেটার হওয়ার মশলা আছে।
আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দলে শামি, তৈরি সেরা ফর্মের জন্য
সালটা ঠিক মনে নেই। তবে নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে ইডেনে একটা ম্যাচ হয়েছিল রেলওয়েজ বনাম এয়ার ইন্ডিয়া। ঝুলন সেই ম্যাচে এয়ার ইন্ডিয়াকে একা জিতিয়ে দেয়। ম্যাচের পর ওকে অভিনন্দন জানাতে গেলে ঝুলন খুব লজ্জা পেয়ে গিয়েছিল। আমি তো অবাক। যে মেয়েটাকে ক্রিকেট মাঠে দেখে এত ডাকাবুকো মনে হয়, সেই মেয়েটা এমন লাজুক! এতই শান্ত ও সাধারণ মেয়েটি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমি কাটিয়েছি ২০ বছর। ঝুলনের হয়ে গেল ১৫ বছর। যা ফর্মে রয়েছে ও, তাতে আমার ধারণা ও আমার চেয়েও বেশি দিন ধরে খেলবে। ঝুলনের মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটার আমার সব থেকে বেশি খেলার রেকর্ড ভাঙলে আমার চেয়ে বেশি খুশি আর কেউ হবে না। এগিয়ে চলো ঝুলন। (সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অনুলিখন)
চাকদহ এক্সপ্রেস
ওয়ান ডে ১৫৩, উইকেট ১৮১, সেরা ৬-৩১, ইকনমি রেট ৩.১৮।
২০০৭-এ আইসিসির বর্ষসেরা মেয়ে ক্রিকেটার। অর্জুন এবং পদ্মশ্রী জয়ী।
টেস্ট, ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টিতে মোট ২৭১ উইকেট নিয়ে মেয়েদের ক্রিকেটে সবচেয়ে সফল উইকেটশিকারি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy