গোটা দেশ তাকিয়ে ছিল। কিন্তু থামতে হল চতুর্থ স্থানে। দীপার পয়েন্ট ১৫.০৬৬। দীপার সাহসী প্রদুনোভা অলিম্পিক্সে জিমন্যাস্টের প্রথম পদকটা এনে দেবে দেশকে। কিন্তু সে স্বপ্ন অপূর্ণ রেখেই রিও থেকে ফিরতে হচ্ছে দীপাকে। ফাইনালে যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন অষ্টম হয়ে। ফাইনাল শেষ করলেন চতুর্থ হয়ে। পদকটাই শেষ কথা হলেও ফাইনালের আসরে চার ধাপ উঠে আসাটাও যে সহজ ছিল না।
পদক জেতাটা সহজ ছিল না ত্রিপুরার এই বাঙালি কিশোরীর। রিওর ফাইনালে প্রতিযোগী ছিল আট জন। ফাইনালে ওঠার পর্বে বাকি সাত প্রতিপক্ষই এগিয়ে ছিল দীপার থেকে। পদক জিততে হলে অনেকটা ছাপিয়ে যেতে হত নিজেকে। সেই ছাপিয়ে যাওয়াটা হল না। প্রদুনোভা ভল্টে নিজের সেরাটাই দিলেন। কিন্তু তাঁকে ছাপিয়ে গেলেন বাকিরা। ভারতের অলিম্পিক্স ইতিহাসে চতুর্খ স্থানে নাম লিখিয়ে ফেললেন আরও একজন। মিলখা সিংহ, পিটি উষা, জয়দীপ কর্মকার, অভিনব বিন্দ্রার পর এবার দীপা কর্মকার।
রিওয় পদক এল না এল না ঠিকই। কিন্তু দীপার প্রাপ্তির ঝুলিও নেহাত হেলাফেলার নয়। অলিম্পিক্সের আসরে অনেক, অনেক কিছুতেই দীপা হয়ে রইল দেশের প্রথম। দীপাই প্রথম ভারতীয় মহিলা জিমন্যাস্ট যে অলিম্পিক্সে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। দীপাই প্রথম ভারতীয় জিমন্যাস্ট যে অলিম্পিক্সের ফাইনালে উঠেছে। দীপার আগে আরও ১১ জন ভারতীয় জিমন্যাস্ট অলিম্পিক্সে গেলেও তাদের কেউ ফাইনালে উঠতে পারেনি।
বছর খানেক আগেও দেশের ক্রীড়ামহলে কজন চিনত এই মেয়েকে! এ দেশে স্বদেশি জিমন্যাস্টদের কদর এমনিতেই খুব একটা নেই। দীপার আগে আলোচিত হওয়ার মতো কোনও নাম খুঁজে পাওয়া ভার। দীপা কর্মকার পাদপ্রদীপের আলোয় এল অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জনের পর। দেশি প্রচারমাধ্যম, এমনকী বিদেশি প্রচারমাধ্যমেও খবরে এল দীপা। আমরা জানলাম, আমাদেরই একটা সাধারণ ঘরের মেয়ে অসাধারণ হয়ে উঠেছে নীরবে, প্রচারের আড়ালে, গভীর নিষ্ঠায় আর আত্মনিবেদনে, কঠিন পরিশ্রমে। সেই পরিশ্রম ব্যর্থ হয়নি। দীপা অনেক কিছু পেয়েছে। অনেক কিছু দিয়েছে দেশকে। রিওর পদক না আসার আক্ষেপ নিয়েই বলা যায়, দীপা আরও অনেক কিছু দেবে দেশকে।
এদিন দারুণ খেললেও শেষ রক্ষা হল না। তাঁকে ছাপিয়ে গেলেন বিশ্বের সেরা ইউএসএ-র সিমোন বাইলস। তাঁর পয়েন্ট ১৫.৯৬৬। দ্বিতীয় রাশিয়ার মারিয়া পাসেকা। পয়েন্ট ১৫.২৫৩। তৃতীয় সুইজারল্যান্ডের জিউলিয়া স্টেইনবার্গার। পয়েন্ট ১৫.২১৬। এ বার শুটিংয়ে পদক কান ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছিল অভিনব বিন্দ্রার। চতুর্থ স্থানে থামতে হয়েছিল তাঁকে। তার পর দীপাকেও থামতে হল পদকের থেকে মাত্র কয়েক পয়েন্ট পিছনে। পদক না পেলেও আত্মবিশ্বাসী দীপা বলে দিলেন, ‘‘আমি আমার সেরা ভল্টটাই দিয়েছি ঠিক যতটা আমি পারি। ২০২০ অলিম্পিক্সে এর থেকে ভাল করব।’’
আরও খবর
দুই ভল্টে যাঁদের সঙ্গে লড়বেন দীপা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy