Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

অলিম্পিক্সে সফল হও, স্বপ্নাকে শুভেচ্ছা দীপার

বুধবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের অনুষ্ঠান যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠল দুই তারকা অ্যাথলিটের ফোনালাপে। দীপা বলেন, ‘‘এশিয়াডের সাফল্যের জন্য তোমাকে অভিনন্দন। এ ভাবেই এগিয়ে যাও। চাই টোকিয়ো অলিম্পিক্স থেকেও পদক নিয়ে ফেরো।’’

সম্মান: কলকাতায় সরস্বতী সাহার সঙ্গে স্বপ্না। নিজস্ব চিত্র

সম্মান: কলকাতায় সরস্বতী সাহার সঙ্গে স্বপ্না। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২৯
Share: Save:

ফোনটা আসতেই হেসে উঠলেন স্বপ্না বর্মণ।

এশিয়াডের হেপ্টাথলনে সোনা জয়ী তখন সংবর্ধনা নিতে ব্যস্ত। তখনই ফোন করেন দীপা কর্মকার। কিছুক্ষণ কথা হয় দু’জনের। ভারতীয় জিমন্যাস্ট স্বপ্নাকে এশিয়াডের সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি টোকিয়ো অলিম্পিক্সের আগাম শুভেচ্ছা দেন স্বপ্নাকে।

বুধবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের অনুষ্ঠান যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠল দুই তারকা অ্যাথলিটের ফোনালাপে। দীপা বলেন, ‘‘এশিয়াডের সাফল্যের জন্য তোমাকে অভিনন্দন। এ ভাবেই এগিয়ে যাও। চাই টোকিয়ো অলিম্পিক্স থেকেও পদক নিয়ে ফেরো।’’

দীপার ফোন পেয়ে আপ্লুত স্বপ্না। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তিনি বলে ওঠেন, ‘‘দীপাদিদি তুমিও দ্রুত চোট সারিয়ে ওঠো। আমিও চাই ২০২০ টোকিয়ো অলিম্পিক্সে তুমি সফল হও।’’ দীপার যেমন হাঁটুতে চোট রয়েছে। তেমনই চোট রয়েছে স্বপ্নারও। তাই আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর মুম্বই উড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে স্বপ্নার। হাঁটুর চোট গুরুতর না হলেও তা ভবিষ্যতে সমস্যায় ফেলতে পারে এশিয়াডের সোনা জয়ী অ্যাথলিটকে। তাই দ্রুত এমআরআই স্ক্যান করিয়ে চোটের মাত্রা জেনে নিতে চান স্বপ্না ও তাঁর কোচ সুভাষ সরকার। দ্রুত সুস্থ না হয়ে উঠলে সমস্যা হবে অলিম্পিক্সের প্রস্তুতিতেও। প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারও করাতে প্রস্তুত স্বপ্না।

তবে জলপাইগুড়ির মেয়ে এখন দু’তিন সপ্তাহ বিশ্রাম চান। পেটপুরে মিষ্টি খেতে চান। মিষ্টি তাঁর ভীষণ প্রিয়। এশিয়াডের প্রস্তুতির জন্য যা এত দিন বারণ ছিল। তিনি বলেন, ‘‘এশিয়াডের সময়ে বেশ কড়া ডায়েট মানতে হয়েছিল। একটাও মিষ্টি খেতে পারিনি। এখন কয়েক দিন মিষ্টি খেয়ে নেব। শপিংয়েও যাব। অনেক দিন ধরেই একটা ভাল শাড়ি কেনার কথা ভাবছি। সেটা আজই কিনে নেব।’’

এশিয়াডের সাফল্যের পরেই স্বপ্নার কাছে একের পর এক প্রস্তাব এসেছে। বাংলার এক চিত্রপরিচালকও ফোন করেছিলেন তাঁকে। স্বপ্নাকে নিয়ে একটি বায়োপিক তৈরির ইচ্ছেপ্রকাশ করে। তাই স্বপ্নার অনুমতি চাই। ‘না’ বলতে পারেননি স্বপ্না। সেই ছবিতে ছোট চরিত্রে অভিনয় করতেও আপত্তি নেই স্বপ্নার। কোচের দিকে ভিতু চোখে তাকিয়ে স্বপ্না বলেন, ‘‘ছোট চরিত্রে অভিনয় করতে পারলে ভালই লাগবে। আমার অভিনয় করতে খারাপ লাগে না। অবশ্য স্যর অনুমতি দিলে তবেই ।’’

স্বপ্নার কোচ সুভাষের চোখ আবার অন্য দিকে। তাঁর লক্ষ্য ছাত্রীকে যত দ্রুত সম্ভব চোট সারিয়ে অলিম্পিক্সের প্রস্তুতিতে নামানো। সেখানে যোগ্যতা অর্জন করাই যে বেশ কঠিন, তা পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন কোচ। সুভাষ বলেন, ‘‘এশিয়াডের আগে স্বপ্না নিজেও জানত না, ও ছয় হাজার পয়েন্ট ছুঁতে পারবে। আমি তো এখনও বলব যে ওর মধ্যে ৬৪০০ পয়েন্ট পাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু তার জন্য ওর স্প্রিন্ট ভাল করতে হবে। স্প্রিন্টে উন্নতি করার জন্য বেঙ্গালুরুতে এক প্রশিক্ষকের কাছে নিয়ে যাওয়া হতে পারে স্বপ্নাকে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জন করতেই ৬২০০ পয়েন্ট প্রয়োজন। আর পদক জিততে হলে তো ৬৭০০ থেকে ৬৮০০ পয়েন্ট পেতেই হবে। যা এখন ওর পক্ষে কঠিন।’’

যতই অসম্ভব শোনাক না কেন, স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি স্বপ্না। ‘‘জীবনে অসম্ভব বলে কিছু হয় না। অসম্ভবকে সম্ভব করাই তো আমাদের কাজ,’’ আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ে স্বপ্নার কথায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE