বেলের জন্য হয়তো নতুন স্ট্র্যাটেজি হজসনের।
ম্যাচটার ইউএসপি হওয়ার কথা ছিল ওয়েন রুনি বনাম গ্যারেথ বেল।
কিন্তু মার্সেইয়ের অশান্তির জেরে আপাতত ছবিটাই পাল্টে গিয়েছে।
অশান্তির আশঙ্কা। চাপা টেনশন। মদ্যপান নিষিদ্ধ করা। অতিরিক্ত চার হাজার পুলিশ নিয়োগ। ইংল্যান্ড আর ওয়েলসের বৃহস্পতিবার ইউরোয় যুদ্ধে নামার আগে এগুলোই মাঠের লড়াইকে ছাপিয়ে এখন সবচেয়ে উপরে উঠে আসছে।
ইংল্যান্ড আর ওয়েলসের ১৩৭ বছরের রেষারেষির ইতিহাসে বড় কোনও টুর্নামেন্টে এই প্রথম মুখোমুখি হচ্ছে দু’দল। প্রথম ম্যাচে ওয়েলস স্লোভাকিয়াকে হারালেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড ১-১ ড্র করেছে। তাই এই লড়াই জিততে মরিয়া ইংল্যান্ড। রুনিদের কোচ রয় হজসন তো এতটাই সতর্ক যে বুধবার প্র্যাকটিসে ওয়েলস কোনও গুপ্তচর পাঠিয়েছে কি না সে নিয়ে প্রবল চিন্তায় ছিলেন।
শেষ পর্যন্ত শাঁতিলি শহরে ইংরেজদের প্র্যাকটিসে কড়া পুলিশি প্রহড়া দেখে কিছুটা আশ্বস্ত হন ইংরেজ কোচ। ফরাসি পুলিশ কোনওরকম অশান্তি এড়াতে শুধু মাউন্টেড পুলিশের ব্যবস্থাই নয়, সঙ্গে ইংল্যান্ডের প্র্যাকটিসে ড্রোনের সাহায্যে নজরদারির ব্যবস্থাও রেখেছিল। বিশেষ করে কাছেই লিলে শহরে রাশিয়া-স্লোভাকিয়ার বুধবারের ম্যাচ ঘিরে প্রচুর রুশ সমর্থকের জমায়েত ছিল তাই।
এ তো নয় গেল মাঠের বাইরের ছবিটা। কিন্তু মাঠের ভিতরে? সেখানে পরিস্থিতিটা কী? ওয়েলস যে তাদের প্রতিবেশীদের পছন্দ করে না সেটা ইংরেজ ফুটবলাররাও ভাল করে জানেন। যার রেশ মাঠেও দু’দলের রেষারেষির মাত্রাটা আরও কয়েক ধাপ চড়িয়ে দিয়েছে। ইংরেজ মিডফিল্ডার জ্যাক উইলশেয়ার আবার ব্রিটিশ মিডিয়ায় বলেছেন, ‘‘আমরা জানি ওয়েলস আমাদের পছন্দ করে না। কিন্তু আমরাও কি ওদের পছন্দ করি? না বোধহয়।’’ কথাটা তাঁর আর্সেনাল সতীর্থ অ্যারন র্যামসির শুনলে খারাপ লাগতে পারে। কিন্তু তাতেও কিছু যায় আসে না বলে মনে হল উইলশেয়ারের। উল্টে তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘আমরা জানি ম্যাচটা খুব কঠিন। প্রচুর ট্যাকল হবে। ওদের প্রচুর প্লেয়ার ইপিএলে খেলে। তাই বৃহস্পতিবারের লড়াইটা আসলে ডার্বির মতো। আমরা যেমন ওদের অনেক প্লেয়ারকে চিনি, ওরাও তাই।’’
মাঠের বাইরে হামলা আটকাতে ড্রোন নজরদারির পাশাপাশি মাঠের ভিতরে রয় হজসনদের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা কিন্তু বেল। যে আবার প্রথম ম্যাচে স্লোভাকিয়ার বিরুদ্ধে ফ্রি-কিক থেকে গোলও করেছিলেন। ওয়েলস উইজার্ডকে আটকাতে ইংল্যান্ড কোচের প্ল্যান ‘এ’ হতে পারে ডায়মন্ড ফর্মেশন। পাশাপাশি প্ল্যান ‘বি’ হয়তো কেহিল-স্মলিং জুটি। ব্যাটল অব ব্রিটেনে নামার আগে এটাই পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
তবে পরিস্থিতি যতই আগুনে হোক, ইংল্যান্ড ক্যাপ্টেনকে দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। ওয়েলসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার আগের দিন ওয়েন রুনিকে গল্ফ খেলতেও দেখা গিয়েছে। সতীর্থদেরও যে ক্যাপ্টেনের উপর অগাধ আস্থা সেটা উইলশেয়ারের কথাতেই স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, ‘‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে রুনিই আমাদের সেরা ফুটবলার ছিল। ও খেলাটা খুব ভাল বোঝে। কখন কাকে পাস দিতে হবে সেটা জানে। ওর খেলা দেখতে তাই আমার যেমন ভাল লাগে তেমনই ওর সঙ্গে একই দলে খেলতেও।’’ ইংল্যান্ডের দলে এ বার অনেক তরুণ খেলোয়াড়ও রয়েছে। যাদের এ রকম বড় মঞ্চে নামার অভিজ্ঞতা কম। তাঁদের তাতাতেও ক্যাপ্টেন বড় ভূমিকা নিচ্ছেন বলে ফাঁস করেছেন উইলশেয়ার।
তবে ইংরেজদের সঙ্গে লড়াইয়ে সম্ভবত সবচেয়ে বড় গোলাটা ছুড়েছেন ওয়েলস ক্যাপ্টেন গ্যারেথ বেল। রিয়াল মাদ্রিদ তারকাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ওয়েলসে যদি এখনকার ইংল্যান্ড দলের ফুটবলারদের খেলানোর সুযোগ থাকত তা হলে কত জন থাকতেন বলে তাঁর মনে হয়। মিটিমিটি হেসে বেলের উত্তর, ‘‘এক জনও নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy