Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বেঙ্গালুরুর বৈঠকে আজ হয়তো ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ইস্টবেঙ্গলের

সুপার কাপকে কেন্দ্র করে বিভাজন স্পষ্ট লাল-হলুদ শিবিরে। এক দিকে ক্লাবের কর্তারা। যাঁরা এই প্রতিযোগিতায় খেলার পক্ষে। অন্য দিকে বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রধান কর্তা। যিনি ক্লাব জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুপার কাপে খেলতে রাজি নন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৭
Share: Save:

ইস্টবেঙ্গল সুপার কাপে শেষ পর্যন্ত খেলবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। তবে আজ, বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুতে বোর্ড মিটিংয়ে যে ঝড় উঠবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

সুপার কাপকে কেন্দ্র করে বিভাজন স্পষ্ট লাল-হলুদ শিবিরে। এক দিকে ক্লাবের কর্তারা। যাঁরা এই প্রতিযোগিতায় খেলার পক্ষে। অন্য দিকে বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রধান কর্তা। যিনি ক্লাব জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুপার কাপে খেলতে রাজি নন। শুধু তাই নয়। ইস্টবেঙ্গল সচিবের দেওয়া চারটি চিঠিরও কোনও জবাব দেননি। অনুপস্থিত ছিলেন ক্লাবের কর্মসমিতির সভাতেও। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে, বিনিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে বিচ্ছেদের সম্ভাবনাও তৈরি হয়। এ বার বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রধান নিজেই আলোচনায় বসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ক্লাব কর্তাদের। যা নিয়ে উত্তাপ বাড়ছে ফুটবলমহলে।

কী হতে পারে বেঙ্গালুরুর বৈঠকে?

কলকাতা থেকে তিন শীর্ষ কর্তা যাচ্ছেন বোর্ড মিটিংয়ে যোগ দিতে। সুপার কাপ, আইএসএল থেকে মোহনবাগানের সঙ্গে জোটে যোগ দেওয়া— একাধিক বিষয় নিয়ে অসন্তোষ জানাবেন তাঁরা। বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রধানকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হবে, না খেলে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পক্ষে নন তাঁরা। ক্লাব কর্তাদের যুক্তি, ‘‘নয়াদিল্লিতে ফেডারেশনের দফতরের সামনে ধর্নায় বসতে আমরা রাজি। কিন্তু কোনও প্রতিযোগিতা থেকে দল তুলে নেওয়া ইস্টবেঙ্গলের ঐতিহ্য বিরোধী। তা ছাড়া না খেলে ফুটবলের উন্নতি কখনও করা সম্ভব নয়।’’

ক্লাব কর্তাদের অন্ধকারে রেখে মোহনবাগানের সঙ্গে আলোচনা করে জোটে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রধান তা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে সমর্থকদের মধ্যেও। তাঁদের প্রশ্ন, ইস্টবেঙ্গলের কর্মসূচি কি এখন সবুজ-মেরুনের কর্তারা ঠিক করে দেবেন? উঠবে সম্প্রতি মাঠ বিভ্রাটের জেরে অনুশীলন ভেস্তে যাওয়ার প্রসঙ্গও। ক্ষুব্ধ লাল-হলুদ কর্তারা বলছেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবর মাঠ খেলার অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও রাতারাতি অনুশীলন করার সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হল? ক্লাবের নিজস্ব মাঠ রয়েছে। জিম ও ড্রেসিংরুমের প্রশংসা সবাই করেছেন। অথচ ফুটবলারদের তা ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ তাঁরা যোগ করেন, ‘‘আই লিগে চেন্নাই সিটি এফসি বনাম মিনার্ভা এফসি ম্যাচে গড়াপেটা হয়েছে বলে ম্যাচ কমিশনার ও রেফারি অ্যাসেসর সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। অথচ এখনও পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের তরফে কোনও অভিযোগ জানানো হল না ফেডারেশনে?’’

বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তারাই এই মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এবং তা ক্লাব কর্তাদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখেই। এমনকি, আগামী মরসুমে দল কি হবে তা-ও জানেন না ক্লাবের কর্তারা। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হবে, বিনিয়োগকারী সংস্থা নয়, ক্লাব পরিচালনা করবেন কর্মসমিতির সদস্যরাই। বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তারা দেখবেন তাঁরা যে উদ্দেশে এসেছেন, তা পূরণ হচ্ছে কি না।

বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রধান দাবি না মানলে কি বিচ্ছেদ? লাল-হলুদ কর্তারা বললেন, ‘‘বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রধান অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যবসায়ী। আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হবে এই আশা নিয়েই বেঙ্গালুরু যাচ্ছি।’’ এর পরেই তাঁরা যোগ করলেন, ‘‘বিচ্ছেদ হলেও চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। বিকল্প তৈরি আছে। ইস্টবেঙ্গলের সম্মান সবার আগে।’’

বেঙ্গালুরুর বৈঠকের দিকে তাকিয়ে কোচ ও ফুটবলারেরা। বুধবার সকালে সল্টলেকের সাই মাঠে অনুশীলনের পরে আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া বললেন, ‘‘সুপার কাপে খেলব কি না, বৃহস্পতিবারই স্পষ্ট হয়ে যাবে। তবে মাঠে নেমে যাতে সমস্যা না হয়, তার জন্য ফুটবলারদের তৈরি রাখছি।’’ জবি জাস্টিন নির্বাসিত। এনরিকে এসকুয়েদা আর ফিরবেন না। স্ট্রাইকার বলতে এক মাত্র বালি গগনদীপ সিংহ। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে দল নামাবেন? লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ বলে দিলেন, ‘‘এনরিকের না থাকা নিয়ে আমি একবারেই চিন্তিত নই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football AIFF East Bengal Super Cup
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE