উল্লাস: গোল করে কোলাদোর নাচ। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ইস্টবেঙ্গল ১ • ইন্ডিয়ান অ্যারোজ ০
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে গোল করেই সতীর্থ জবি জাস্টিনকে খুঁজছিলেন খাইমে সান্তোস কোলাদো। দুর্দান্ত পাস দেওয়ার জন্য অভিনন্দন জানাতে চাইছিলেন সতীর্থকে। কিন্তু লাল-হলুদ স্ট্রাইকার তখন সতীর্থদের সঙ্গে নাচতে ব্যস্ত। জবিকে খুঁজে বার করে কোলাদোও শুরু করে দিলেন নাচ।
শুক্রবার বিকেলে যুবভারতীতে উৎসবের আবহে এক জনই ছিলেন আশ্চর্যজনক ভাবে উচ্ছ্বাসহীন। তিনি, ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া। গোলটা হওয়ার পরে জলের বোতলে চুমুক দিয়ে হাত নেড়ে ফুটবলারদের দ্রুত ম্যাচে মনঃসংযোগ করার নির্দেশ দিলেন। চেন্নাই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার পরেও যে ভাবে হারতে হয়েছে, সেই আতঙ্ক ভুলতে পারেননি তিনি।
লাল-হলুদ কোচের উদ্বিগ্ন হওয়াই স্বাভাবিক। বিদেশিহীন ইন্ডিয়ান অ্যারোজের ফুটবলারদের গড় বয়স ১৯। সেই দলের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে তারকাখচিত ইস্টবেঙ্গলের যা পারফরম্যান্স, তাতে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ডার্বির আগে একেবারেই স্বস্তিদায়ক নয়। এর জন্য কিছুটা হলেও দায়ী স্প্যানিশ কোচের পরিকল্পনা। সামনে একা জবিকে রেখে প্রথমার্ধে দল সাজিয়েছিলেন তিনি। ফলশ্রুতি— ম্যাচের ২৫ মিনিটে বিপক্ষের গোল লক্ষ্য করে প্রথম শট নেন ইস্টবেঙ্গলের লালডানমাউইয়া রালতে। প্রথম কর্নার ৩২ মিনিটে। এর তিন মিনিট পরে জটলার মধ্যে থেকে নেওয়া কাশিম আইদারার শট ধাক্কা খায় পোস্টে। বাকি সময় রোহিত দানু, বিক্রম প্রতাপ সিংহদের গতিময় ফুটবল ও পাসের গোলকধাঁধায় পথ হারানো ইস্টবেঙ্গলকে রক্ষা করে গেলেন ম্যাচের সেরা বোরখা গোমেস পেরেস।
কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতো দ্বিতীয়ার্ধে গতির বিরুদ্ধে গতিকেই অস্ত্র করলেন আলেসান্দ্রো। ফরোয়ার্ডে জবির সঙ্গে কোলাদোকে জুড়ে দিলেন। লালডানমাউইয়াকে তুলে নামালেন ব্রেন্ডন ভানলালরেমডিকাকে। ছন্দ ফিরল ইস্টবেঙ্গলে।
৪৮ মিনিটে গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দিলেন কোলাদো। ৬৪ মিনিটে অসাধারণ পাস দিয়েছিলেন জবিকে। কিন্তু তিনি বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি। ৭২ মিনিটে ফের সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেন জবি। ইন্ডিয়ান অ্যারোজের গোলরক্ষক প্রভসুখন গিলকে কাটিয়ে বল গোলে ঠেলার আগে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। ৮৪ মিনিটে কোলাদো অবিশ্বাস্য ভাবে ক্রসবারের উপর দিয়ে বল উড়িয়ে না দিলে অন্তত তিন-চার গোলে জিতত ইস্টবেঙ্গল।
প্রথমার্ধে কী সমস্যা হয়েছিল? সাংবাদিক বৈঠকে আলেসান্দ্রো বললেন, ‘‘ইন্ডিয়ান অ্যারোজের গতিময় ফুটবল সমস্যায় ফেলেছিল। হাফটাইমে ছেলেদের বলেছিলাম, আমাদেরও গতি বাড়িয়ে আক্রমণাত্মক হতে হবে।’’ ইন্ডিয়ান অ্যারোজের কোচ ফ্লয়েড পিন্টোর কথায়, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের মতো দলের বিরুদ্ধে ভুলের মূল্য দিতেই হবে।’’
ডার্বির আগে আই লিগ টেবলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেও লাল-হলুদ শিবিরের উপর থেকে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ সরছে না! ইন্ডিয়ান অ্যারোজের বিরুদ্ধে সংযুক্ত সময়ে লাল কার্ড (দ্বিতীয় হলুদ কার্ড) দেখেন ডিফেন্ডার মনোজ মহম্মদ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, চোটের শুশ্রূষার পরে রেফারির অনুমতি না নিয়েই মাঠে ঢুকেছেন। যদিও ইস্টবেঙ্গল কোচ কাঠগড়ায় তুললেন রেফারিকেই। বললেন, ‘‘রেফারির ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়েছে মনোজ। ও লাইন্সম্যানের অনুমতি নিয়েই মাঠে ঢুকেছিল।’’ দ্বিতীয়ত, এ দিন আইজল এফসি-কে ৪-৩ হারিয়ে খেতাবি দৌড়ে চেন্নাইয়ের আরও এগিয়ে যাওয়া।
ইস্টবেঙ্গল: রক্ষিত ডাগার, লালরাম চুলোভা, বোরখা গোমেস পেরেস, জনি আকোস্তা, মনোজ মহম্মদ, লালডানমাউইয়া রালতে (ব্রেন্ডন ভানলালরেমডিকা), কমলপ্রীত সিংহ (সিয়াম হাঙ্গাল), কাশিম আইদারা, আন্তোনিয়ো রদ্রিগেস দোভাল (সামাদ আলি মল্লিক), খাইমে সান্তোস দোভাল ও জবি জাস্টিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy