Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ইস্টবেঙ্গল ১ : চার্চিল ব্রাদার্স ১

ড্র করে শুরু থেকেই চাপে ইস্টবেঙ্গল

অভিযান শুরুর দিনই বিপর্যয় ইস্টবেঙ্গলের। চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে ড্র করে ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন প্রথম দিনেই ধাক্কা খেল। এখন যা পরিস্থিতি তাতে শেষ দু’টো ম্যাচ জিততেই হবে মেহতাব হোসেন-দের।

শুভজিৎ মজুমদার
কটক শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৭ ০৪:৩২
Share: Save:

অভিযান শুরুর দিনই বিপর্যয় ইস্টবেঙ্গলের।

চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে ড্র করে ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন প্রথম দিনেই ধাক্কা খেল। এখন যা পরিস্থিতি তাতে শেষ দু’টো ম্যাচ জিততেই হবে মেহতাব হোসেন-দের। একটা হার অথবা ড্র মানেই স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়ে কলকাতা ফেরার টিকিট নিশ্চিত করে ফেলা।

ইস্টবেঙ্গল কি পারবে এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে?

জৌলুস ও উন্মাদনাহীন ফেডারেশন কাপের মতোই বিবর্ণ লাল-হলুদের পারফরম্যান্স।

আই লিগ থেকে ফেডারেশন কাপ। ডিফেন্ডারদের ভুলে গোল খাওয়া থেকে স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতা— ইস্টবেঙ্গল আছে ইস্টবেঙ্গলেই!

আই লিগে ঘরের মাঠে চার্চিল ব্রাদার্সের কাছে হেরে খেতাবের দৌড়ে পিছিয়ে পড়া শুরু হয়েছিল ওয়েডসন আনসেলমে-দের। ফেডারেশন কাপেও সেই ছবিটা বদলাল না। পার্থক্য একটাই, এ দিন অন্তত হারের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়নি তাঁদের।

ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের জমানায় উইলিস প্লাজা ও রবিন সিংহ ছিলেন আক্রমণভাগের সেরা অস্ত্র। ওয়েডসন খেলতেন একটু পিছন থেকে। তাঁর পাস থেকেই অধিকাংশ গোল করেছিলেন প্লাজা। মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, তুষার রক্ষিত, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় ও রঞ্জন চৌধুরীরা সেই স্ট্র্যাটেজিতে খেলাচ্ছিলেন। হঠাৎ করেই ফেডারেশন কাপের প্রথম ম্যাচে তাঁরা বদলে ফেললেন পরিকল্পনা। ফরওয়ার্ডে একা থাকলেন প্লাজা। কিন্তু ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগো জাতীয় দলের স্ট্রাইকার ম্যাচের ১২ মিনিটে সামনে একা চার্চিল গোলরক্ষককে পেয়েও গোল করতে পারেননি। সেই শুরু। ৮৪ মিনিটে উঠে যাওয়ার আগে অন্তত পাঁচটি নিশ্চিত গোল নষ্ট করলেন তিনি।

৬৫ মিনিটে বিশ্বমানের গোল করে প্লাজার ব্যর্থতা ঢেকে দিয়েছিলেন ওয়েডসন। কিন্তু ফের ডিফেন্ডারদের ভুলে জয়ের স্বপ্ন শেষ লাল-হলুদের। হতাশ ওয়েডসন খেলা শেষ হওয়ার পর ম্যান অফ দ্য ম্যাচের ট্রফিটাই ছুড়ে ফেলে দিলেন রিজার্ভ বেঞ্চে।

চার্চিলের বিরুদ্ধেই আই লিগের ম্যাচে বারাসত স্টেডিয়ামে ডিফেন্ডারদের ব্যর্থতায় গোল খেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। রবিবার বরাবাটি স্টেডিয়ামেও লাল-হলুদের জয়ের পথে কাঁটা হয়ে থাকলেন সেই ডিফেন্ডাররাই। গতিতে রাহুল ভেকে-কে পিছনে ফেলে সেন্টার করলেন। চোট পেয়ে উঠে যাওয়া গোলরক্ষক শুভাশিস রায়চৌধুরীর পরিবর্তে নামা রেহনেশ টি পি-র হাতে লেগে বেরিয়ে যাওয়া বল গোলে ঠেলে দিলেন ঘানেফা ক্রোমা।

এক বছর আগেই পিয়ারলেসের হয়ে কলকাতা লিগে খেলেছেন লাইবেরিয়ার ক্রোমা। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে নামলেই অদ্ভুত ভাবে জ্বলে ওঠেন জর্জ উইয়া-র দেশের মিডফিল্ডার। আই লিগেও গোল করেছিলেন তিনি। ম্যাচের পরে ক্রোমা বলছিলেন, ‘‘ভাল খেলা সত্ত্বেও কলকাতার দুই প্রধান কখনও আমাকে নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি। শুধু ইস্টবেঙ্গল নয়, মোহনাবাগানের বিরুদ্ধেও গোল করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামি।’’’

ইস্টবেঙ্গলের সহকারী কোচ বলেই ফেললেন, ‘‘আমাদের রক্ষণের সমস্যাটা থেকেই যাচ্ছে। আজও এগিয়ে গিয়ে জয় ধরে রাখতে পারলাম না। কেন বারবার এ রকম হচ্ছে, বুঝতে পারছি না।’’

ম্যাচের আগের দিনই রঞ্জন উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন চার্চিল কোচ ডেরেক পেরিরা-কে নিয়ে। তাঁর আশঙ্কা যে অমূলক ছিল না, সেটা প্রমাণ হয়ে গেল। চোটের জন্য অ্যান্টনি উল্‌ফ-কে তুলে নিয়ে ক্রোমা-কে স্ট্রাইকার করে দেন তিনি। ডেরেক-এর একটা চালেই ম্যাচের রং বদলে গেল। ম্যাচের পর চার্চিল কোচ বলছিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গোল খেয়েও আমরা হাল ছাড়িনি। ফুটবলারদের বলেছিলাম, গোল শোধ করার জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপাও। ওরা আমার কথা রেখেছে। তবে জিতে মাঠ ছাড়তে পারলে বেশি খুশি হতাম।’’

প্রথম ম্যাচে ড্র। কুঁচকিতে চোট পেয়ে প্রধান গোলরক্ষক শুভাশিস অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। রঞ্জন অবশ্য হাল ছাড়তে নারাজ। বললেন, ‘‘এখনও দু’টো ম্যাচ বাকি আছে। আশা করছি, ফুটবলাররা ঠিক ঘুরে দাঁড়াবে। আমাদের এখন সব ম্যাচই ফাইনাল। যে ভাবে হোক জিততেই হবে।’’ রবিবাসরীয় বরাবাটিতে প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের যা পারফরম্যান্স তাতে রঞ্জনের স্বপ্ন কতটা পূরণ হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

ইস্টবেঙ্গল: শুভাশিস চৌধুরী (রেহনেশ টি পি), রাহুল ভেকে, ইভান বুকেনিয়া, গুরবিন্দর সিংহ, নারায়ণ দাস, নিখিল পূজারি (রোমিও ফার্নান্দেজ), মেহতাব হোসেন, রওলিন বর্জেস, বিকাশ জাইরু, উইলিস প্লাজা (রবিন সিংহ) ও ওয়েডসন আনসেলমে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE