অতীত: তখন দু’জনে একসঙ্গে। চেলসিতে থাকাকালীন অ্যাজ়ার এবং মোরিনহো। ফাইল চিত্র
জোসে মোরিনহো যখন কার্যত তোপের মুখে। প্রায় তিন দশক পরে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সবচেয়ে খারাপ শুরুর জন্য যথেচ্ছ সমালোচিত। যখন এমনও শোনা যাচ্ছে, পল পোগবা-সহ দশজন ক্লাব ছাড়ার জন্য পা বাড়িয়ে আছেন। তাঁরা নাকি এতটাই বিরক্ত ম্যানেজারের উপর। ঠিক তখনই অপ্রত্যাশিত ভাবে মোরিনহোর এক প্রাক্তন শিষ্য মন্তব্য করলেন, ‘‘আবার জোসের কোচিংয়ে খেলতে চাই।’’
যে সে লোক নন বক্তা। চেলসির এডেন অ্যাজ়ার।
মোরিনহোর প্রশিক্ষণে দু’বছর খেলেছেন বেলজিয়ামের এই তারকা ফুটবলার। ২০১৩ থেকে ২০১৫। যে বার ইপিএল জিতেছে চেলসি। সঙ্গে লিগ কাপ। অ্যাজ়ার গোল করেছিলেন ১৪টি। দশ বার সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছেন। যদিও মোরিনহোর অধীনে দ্বিতীয় বছরটা একেবারেই ভাল যায়নি। ইপিএলে সে বার মাত্র চারটি গোল করেছিলেন অ্যাজ়ার। চেলসি চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়। মোরিনহোও বরখাস্ত হন।
বেলজিয়ামের এক সাংবাদমাধ্যমে অ্যাজ়ার বলেছেন, ‘‘মোরিনহোর অধীনে শেষ মরসুমটা সুখকর হয়নি। জিততে পারছিলাম না। অনুশীলনও একঘেয়ে হয়ে উঠেছিল। হাসি-ঠাট্টা থাকত না। সবার জন্য ভাল হয়েছিল ম্যানেজারের চলে যাওয়া।’’ যদিও মোরিনহোর প্রতি নিজের দুর্বলতা গোপন না করে পরিষ্কার বলেছেন, ‘‘যদি কেউ বলেন, নতুন করে কোন কোচের সঙ্গে আবার কাজ করতে চাই তা হলে বলব জোসে মোরিনহোর নামটাই।’’
অ্যাজ়ার অবশ্য এটাও স্বীকার করেছেন, দল হারতে থাকলে মোরিনহো ফুটবলারদের বড্ড বেশি সমালোচনা করতে শুরু করেন, ‘‘দল খারাপ খেললেই উনি ফুটবলারদের সমালোচনা শুরু করেন। সবাই অবশ্য তা জানে। তবে চেলসিতে ওঁর অধীনে একটা সময়ের পরে ব্যাপারটা মেনে নিতে শিখেছিলাম। বুঝেছিলাম, এটা ওর স্বভাব। কিছু করার নেই।’’
দলের সুসময়ে মোরিনহো কেমন তাও বলেছেন অ্যাজ়ার, ‘‘যদি তুমি জেতো, তা হলে ওঁর চেয়ে ভাল কেউ হতে পারে না। তখন ফুটবলারদের কাছের লোক হয়ে ওঠেন। বন্ধুর মতো ব্যবহার করেন। যা ইচ্ছে তাই করা যায়। একদিন ছুটির দরকার হলে উনি দু’দিন দেবেন। সব কিছু ঠিকঠাক এগোলে আর দল জিততে থাকলে মোরিনহো আমাদের মতোই ফুটবলটা উপভোগ করেন। তা ছাড়া ওঁকে যে প্রচণ্ড রক্ষণাত্মক কোচ বলা হয়, সেটাও খুব খারাপ কিছু নয়। এটা ঘটনা, গুয়ার্দিওলার (পেপ) সঙ্গে ওঁর মিল নেই। মোরিনহো একেবারেই পেপের মতো দুঃসাহসী আক্রমণের তত্ত্বে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু যে বার চেলসি ইপিএল জিতল, সে বার কিন্তু দারুণ খেলে প্রচুর গোল করেছিলাম আমরা।’’
অ্যাজ়ার আরও বলেছেন, ‘‘ফুটবল জীবন নিয়ে আফসোসের বেশি জায়গা নেই। তবে চেলসিতে মোরিনহোর প্রশিক্ষণে আরও খেলতে না পারার দুঃখ আছে। আমাদের দলটার দারুণ কিছু করার আরও সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু শেষটা মধুর হয়নি।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘পেশাদার ফুটবলার হওয়ার পরে আমার একটা মরসুমই খুব খারাপ গিয়েছিল। ঘটনাচক্রে সেটা চেলসিতে মোরিনহোর শেষ বছরে। কিন্তু আমার সেই খারাপ খেলায় ম্যানেজারের কোনও দোষ ছিল না। সম্পূর্ণ দোষ আমার। বিশ্বকাপের পরে ক্লাবের অনুশীলনে এসেছিলাম অনেক দেরি করে। তাই একেবারেই ছন্দে ছিলাম না। খারাপ খেলেছিলাম নিজের আলস্য আর দোষে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy