Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বুমরা আতঙ্ক কাটাতে নেটে ‘বুমরা’ এনে মহড়া রুটদের

প্রথমে মনে হয়েছিল, অশ্বিন পুরো ফিট না হলে রবীন্দ্র জাডেজা খেলতে পারেন ভেবে বুঝি বাঁ হাতি স্পিনার নিয়ে এসেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু যত সময় গড়াল, বোঝা গেল, উদ্দেশ্য বুমরার অ্যাকশনের বিরুদ্ধে অভ্যস্থ হওয়া। বুমরার মতো গতিসম্পন্ন পেসার রাতারাতি খুঁজে পাওয়া কঠিন।

ইংল্যান্ডের চিন্তা বাড়িয়েছেন বুমরা।ছবি এএফপি।

ইংল্যান্ডের চিন্তা বাড়িয়েছেন বুমরা।ছবি এএফপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাউদাম্পটন শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৫১
Share: Save:

ট্রেন্ট ব্রিজের বুম বুম বুমরা আতঙ্ক যে তাঁদের কিছুতেই ছেড়ে যাচ্ছে না, তার প্রমাণ মিলল বুধবার জো রুটদের প্রস্তুতিতে। তাঁদের নেটে দু’জন বোলারকে দেখা গেল অদ্ভুত বোলিং অ্যাকশন নিয়ে এসেছেন। তাঁরা ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের কোনও খেলোয়াড় নন অবশ্যই। বোঝাই গেল স্থানীয় ক্লাব থেকে তাঁদের ধরে আনা হয়েছে।

দু’জনেরই বোলিং অ্যাকশন বুমরার মতো বিদঘুটে। কানের পাশ দিয়ে হাতের প্যাঁচ দিয়ে বল ছাড়ছেন। এক জন বাঁ হাতি। অন্য জন ডান হাতি।

সমস্যা হচ্ছে, দু’জনের কেউ জোরে বোলার নন। স্পিন করাচ্ছেন। ইংল্যান্ডের অনেক ব্যাটসম্যানই দেখা গেল অজ্ঞাত এই দুই বোলারকে মন দিয়ে খেলছেন।

প্রথমে মনে হয়েছিল, অশ্বিন পুরো ফিট না হলে রবীন্দ্র জাডেজা খেলতে পারেন ভেবে বুঝি বাঁ হাতি স্পিনার নিয়ে এসেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু যত সময় গড়াল, বোঝা গেল, উদ্দেশ্য বুমরার অ্যাকশনের বিরুদ্ধে অভ্যস্থ হওয়া। বুমরার মতো গতিসম্পন্ন পেসার রাতারাতি খুঁজে পাওয়া কঠিন। ইংল্যান্ড যেটা করেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার পল অ্যাডামসের মতো স্পিনার নিয়ে এসেছে। কিন্তু নেটে সেই দুই বোলারকে গুরুত্ব দিয়ে খেলা থেকেই পরিষ্কার, বলের চেয়েও বুমরার অ্যাকশনের সঙ্গে তাল মেলানোর চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন রুটরা।

ভারতীয় বোলারদের মধ্যে নানা বৈচিত্রই রয়েছে। ইশান্ত শর্মা বাঁ হাতি ব্যাটসম্যানদের দারুণ বল করেন। বাঁ হাতির ক্ষেত্রে বল বাইরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে মাস্টার ইশান্ত। দলের মধ্যে দ্রুততম পেসার মহম্মদ শামি। প্রবল সাংসারিক বিতর্কের মধ্যে যাঁর কাছে ক্রিকেটই এখন একমাত্র সম্বল। হার্দিক পাণ্ড্য লেট সুইংয়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের ধরাশায়ী করেছেন ট্রেন্ট ব্রিজে। কিন্তু সব চেয়ে বেশি করে প্রভাব সৃষ্টি করেছে বুমরার গতি এবং বাউন্স। শরীর লক্ষ্য করে ধেয়ে আসা তাঁর কোণাকুণি ডেলিভারি সকলকে অস্বস্তিতে রেখেছিল ট্রেন্ট ব্রিজে। এমনকি, রুটও একেবারেই বুঝতে পারছিলেন না বুমরার কোন বলটা শরীরের দিকে ঢুকে আসবে, কোনটা সোজা বেরিয়ে যাবে। অন্য রকম বোলিং অ্যাকশনের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য অনুশীলন করা যদি তাঁদের ধাঁধার সমাধান করতে পারে!

রুট অবশ্য মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ আগে থেকে হেরে বসতে নারাজ। সাংবাদিকদের সামনে অকুতোভয় থাকার চেষ্টা করলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। বললেন, ‘‘অতীতে আমরা অনেক বারই চাপের মুখ থেকে ফিরে এসেছি। সাউদাম্পটে জিতলে সিরিজ আমাদের, সেটাও কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না।’’ বোলিংয়ে জেমস অ্যান্ডারসনের মতোই ব্যাটিংয়ে তাঁর পূর্বসূরি অ্যালেস্টেয়ার কুকের দিকে তাকিয়ে রুট। মনে করিয়ে দিলেন, চার বছর আগে হ্যাম্পশায়ারের কাউন্টি মাঠে ভারতের বিরুদ্ধে কুকের অবদানের কথা। ‘‘সে বারও খুব খারাপ সময় যাচ্ছিল কুকের। তার পর এখানেই দুর্দান্ত দু’টো ইনিংস খেলল। যখনই দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায় ওর, দারুণ কিছু করে কুক,’’ বললেন তিনি।

২০১৪-তে এই মাঠে আসার আগে পর্যন্ত কুক ৯টি টেস্ট ইনিংসে একটা হাফ সেঞ্চুরিও করতে পারেননি। সেই টেস্টে ৯৫ এবং ৭০ অপরাজিত করে দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন। তখন কুকই ছিলেন অধিনায়ক এবং সে সময় প্রবল চাপে ছিলেন নিজের ব্যাটে রান না থাকায়। ফলে চাপ নিয়ে খেলেছিলেন তিনি।

কুকের মতো রুটকে নিয়েও কথা উঠতে শুরু করেছে। উল্টো দিকে কোহালি সেঞ্চুরি করে মাইলস্টোন গড়ছেন। আর তিনি পঞ্চাশ পেরিয়েও সেঞ্চুরিতে পরিণত করতে পারছেন না। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু চতুর্থ টেস্টে যদি কোহালির মতো সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে না পারেন, সেই বাজনা আরও জোরাল হবে না কে বলতে পারে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE