Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হারের মধ্যেও অবাক হলাম ধোনি-হার্দিকের ব্যাটিংয়ে

কুলদীপ এবং ভারতীয় স্পিনারদের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের সামনে নুইয়ে না পড়ে ক্রিজে পড়ে থাকলেন রুট। আর লম্বা ইনিংস খেলে ভারতীয় স্পিনারদের সঙ্গে লড়াইয়ে জিতলেন।

দুরন্ত: ভারতের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ওয়ান ডে-তে সেঞ্চুরির পরে উচ্ছ্বসিত জো রুট। শনিবার লর্ডসে। গেটি ইমেজেস

দুরন্ত: ভারতের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ওয়ান ডে-তে সেঞ্চুরির পরে উচ্ছ্বসিত জো রুট। শনিবার লর্ডসে। গেটি ইমেজেস

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ০৬:০৮
Share: Save:

শনিবার লর্ডসের ম্যাচটা দেখতে বসে মনে হচ্ছিল, ট্রেন্ট ব্রিজের প্রথম ওয়ান ডে-রই যেন অ্যাকশন রিপ্লে দেখছি। কুলদীপ যাদবের একাদশ ওভারে বল করতে আসা। সঙ্গে সঙ্গে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের কুলদীপ-আতঙ্কে ভুগতে শুরু করা। প্রথম ওভার থেকেই কুলদীপের আক্রমণাত্মক বোলিং— সব কিছুই আগের ম্যাচের মতো চলছিল।

কিন্তু জো রুট পুরনো সেই ছবিকে পাল্টে দিয়ে নতুন পথ তৈরি করে দিলেন ইংল্যান্ড দলের জন্য। কুলদীপ এবং ভারতীয় স্পিনারদের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের সামনে নুইয়ে না পড়ে ক্রিজে পড়ে থাকলেন রুট। আর লম্বা ইনিংস খেলে ভারতীয় স্পিনারদের সঙ্গে লড়াইয়ে জিতলেন। ১১৩ রানের এই ইনিংসটাই কার্যত ভারতকে কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। কুলদীপ প্রথম দু’টি উইকেট তোলার পরে রুট এবং অইন মর্গ্যান মিলে তৃতীয় উইকেটে ১০৩ রান যোগ করে ম্যাচে ফিরিয়ে আনল ইংল্যান্ডকে। শেষের দিকে ডেভিড উইলির ৩১ বলে ৫০ নট আউটের দাপটে ৩২২-৭ তুলল ওরা।

জবাবে ভারত ২৩৬ রানে শেষ হয়ে গেল। ৮৬ রানে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজ বাঁচিয়ে রাখল ইংল্যান্ড। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির জন্মদিনে তাঁকে জয় উপহার দিতে পারেননি তাঁর সতীর্থরা। শুক্রবার তাঁর ওয়ান ডে-তে ১০ হাজার রান ও তিনশো ক্যাচ পূর্ণ করার দিনেও প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের মুখে জয়ের হাসি দেখতে পাওয়া গেল না। সেই সঙ্গে ধোনি নিজেও অবাক করলেন তাঁর বিভ্রান্তিকর ব্যাটিংয়ে। ধোনির ৫৯ বলে ৩৭ আর হার্দিক পাণ্ড্যর ২২ বলে ২১ রানের ইনিংস দু’টো সেরা আশ্চর্য হিসেবেই থেকে গেল এ দিন। ৩২২ তাড়া করতে নেমে এই মন্থর ব্যাটিংয়ের কী ব্যাখ্যা? ধোনির খেলার ভঙ্গি হয়তো এ রকমই। ধৈর্য ধরে শেষের দিকে গিয়ে মারের জন্য পড়ে থাকেন। কিন্তু সেই মার আর এ দিন দেখা যায়নি। মোট ৩১টি ডট বল খেলেছেন, যেটা খুবই আশ্চর্যজনক। ম্যাচ জেতা যদি কঠিনও হয়ে গিয়ে থাকে, তা হলেও এমন ব্যাটিং না দলের মনোবলের জন্য, না ভাল দর্শকদের জন্য।

কুলদীপ ও যুজবেন্দ্র চহালকে মাঝের ওভারগুলোতে সামলানোর জন্যই রুটকে দলে রাখা হয়েছিল। রুট যে-হেতু ব্যাকফুটে শক্তিশালী, তাই কুলদীপ, চহালদের সামলানো তাঁর পক্ষে সতীর্থদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত সোজা। ইংল্যান্ডের অন্যান্য ব্যাটসম্যানরা কিন্তু বেশির ভাগই ফ্রন্টফুটে স্বচ্ছন্দ। ব্যাকফুটে ভাল খেলেন বলে রুট একেবারে শেষ পর্যন্ত বলটার ওপর নজর রাখতে পারেন। যার ফলে কুলদীপ, চহালদের পক্ষে তাঁকে পরাস্ত করা কিছুটা হলেও কঠিন। শনিবারও সেটাই হয়। তবে কুলদীপ আগের দিনের মতো নিখুঁত লেংথে বলও করতে পারেননি এ দিন।

টিভিতে দেখলাম, উইকেটে ঘাস ছিল। লর্ডস বরাবরই শুরুর দিকে পেসারদের সাহায্য করে। কিন্তু আশ্চর্য ভাবে দেখা গেল ভারতীয় পেসাররা সাদা কোকাবুরা বল তেমন ভাবে ‘মুভ’ করাতে পারছেন না। অথচ ইংল্যান্ডের পেসাররা শনিবার ব্যাটসম্যানদের ভালই সামলেছেন। হয়তো সিম তেমন চওড়া নয় বলেই ওঁদের অসুবিধে হচ্ছে। সারাক্ষণই ডেভিড উইলিরা চাপে রেখেছিলেন রোহিত শর্মাদের। বিশেষ করে লিয়াম প্লাঙ্কেট। মঙ্গলবার সিরিজের শেষ ম্যাচ যে ভারতের কাছে বড় পরীক্ষা, তার ইঙ্গিত পাওয়া গেল লর্ডসেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket India England
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE