Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
টেস্ট থাকুক পাঁচ দিনেরই, মন্তব্য কোহালিদের হেড কোচের

ম্যাঞ্চেস্টারের ১৫ মিনিট বাদ দিলে ২০১৯-ই সেরা, বললেন শাস্ত্রী

ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা বছরগুলোর একটা আমরা পেরিয়ে এলাম।

প্রস্তুত: নতুন বছরের চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি হও, বলছেন শাস্ত্রী। ফাইল চিত্র

প্রস্তুত: নতুন বছরের চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি হও, বলছেন শাস্ত্রী। ফাইল চিত্র

সুমিত ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:২২
Share: Save:

ফেলে আসা ২০১৯। কেমন গেল? নতুন শপথের ২০২০। কী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে? স্বপ্নপূরণের অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপে স্বপ্নভঙ্গের ম্যাঞ্চেস্টার। টেস্ট ম্যাচকে চার দিনের করে দেওয়ার আইসিসি প্রস্তাবকে স্বাগত জানাবেন না বিপক্ষ শিবিরে বসবেন? কোন দিকে তিনি? মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভবিষ্যৎ কী? ক্যাপ্টেন কোহালি এখন কতটা পরিণত? আনন্দবাজারের পাঠকদের জন্য নতুন বছরের গোড়ায় একগুচ্ছ প্রশ্নের জবাব দিতে হাজির রবি শাস্ত্রী। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নতুন টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য গুয়াহাটি রওনা হওয়ার আগের রাতে, বৃহস্পতিবার খোলামেলা, একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন কোহালি, পুজারা, বুমরাদের হেড কোচ।

প্রশ্ন: ফেলে আসা ২০১৯-এর পারফরম্যান্সকে কী ভাবে ব্যাখ্যা করতে চাইবেন হেড কোচ?

রবি শাস্ত্রী: আমার তো মনে হয়, ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা বছরগুলোর একটা আমরা পেরিয়ে এলাম। কী অসাধারণ ধারাবাহিকতা নিয়ে ছেলেরা খেলেছে দেখুন। এবং, সেটা সব ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে। ভারতীয় ক্রিকেটে অনেক ভাল বছরই হয়তো রয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে তিনটে ফর্ম্যাটে এতটা ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলে যাওয়া অনেক দিন দেখা যায়নি। ম্যাঞ্চেস্টারের ওই পনেরো মিনিটের পর্বটা বাদ দিলে, আমার মনে হচ্ছে, এটাই সেরা বছর। শুধু বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের ওই পনেরো মিনিটের পর্বের কাঁটাটা খচখচ করছে। গোটা বিশ্বকাপে দারুণ খেলেও ওই সময়টুকুর জন্য স্বপ্নভঙ্গ হল। কিন্তু কী করা যাবে, এটাই তো ক্রিকেটারদের জীবন। স্কোরকার্ড কখনও তোমার বন্ধু, কখনও তোমার প্রতি নির্মম!

প্র: আপনি নিজে ক্রিকেটার হিসেবে দু’টো সেরা বছরের সঙ্গে যুক্ত। তিরাশি এবং পঁচাশি। প্রথমটায় ভারত বিশ্বকাপ জেতে, দ্বিতীয়টায় ভারত জেতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ। যেখানে আপনার সেই ‘চ্যাম্পিয়ন অফ চ্যাম্পিয়ন্স’ হয়ে বিখ্যাত আউডি জেতা। ওই দু’টো ঐতিহাসিক বছরের থেকেও ২০১৯-কে এগিয়ে রাখবেন?

শাস্ত্রী: একই সঙ্গে তিন ধরনের ক্রিকেটে এতটা সাফল্য অন্য কোনও বছরে আছে বলে আমি জানি না। আর আমি মোটামুটি চল্লিশ বছর ধরে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত। কখনও খেলেছি, কখনও কোচিং করেছি, কখনও আবার কমেন্ট্রি বক্সে বসেছি। তাই আমিও অল্পবিস্তর জানি, সেরা বছর বলতে ঠিক কী বোঝায়। তিরাশি এবং পঁচাশি দারুণ বছর ছিল, সন্দেহ নেই। আমি নিজে সেই সময়ে ছিলাম। কিন্তু তখনও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আসেনি। এবং, কুড়ি ওভারের ক্রিকেট এখন একটা বড় ব্যাপার। তখন শুধু টেস্ট আর ওয়ান ডে ছিল। তা ছাড়া আমি সারা বছর ধরে দেখানো ধারাবাহিকতার উপর জোর দিতে চাইছি। একাত্তর বছর অপেক্ষার পরে আমরা প্রথম বার অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ জিতেছি। অস্ট্রেলিয়া-নিউজ়িল্যান্ডে গিয়ে ওয়ান ডে সিরিজ জিতেছি। বিশ্বকাপে দারুণ খেলছিল টিম। কিন্তু ওই পনেরো মিনিট আমাদের স্বপ্ন শেষ করে দিয়ে যায়। হ্যাট্‌স অফ টু দ্য প্লেয়ার্স। যে রকম তীব্রতা নিয়ে ওরা সারা বছর খেলে গিয়েছে, অভাবনীয়! তবে চূড়ান্ত বিচারের ভার মানুষের হাতে ছেড়ে দেব। তাঁরাই বিচার করবেন, ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা বছরগুলোর মধ্যে ২০১৯ থাকতে পারে কি না!

প্র: ২০১৪-তে আপনি দায়িত্ব নেন। তখন টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারতীয় দল ছয়-সাত নম্বরে পড়ে ধুঁকছে। এখন টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর। এই পাঁচ বছরের যাত্রায় সেরা বছর কি ২০১৯?

শাস্ত্রী: ইয়েস, আমার মতে ২০১৯। পাঁচ বছর আগে ইংল্যান্ডে যখন আমি টিম ডিরেক্টর হিসেবে আসি, ছেলেরা মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডে দুরমুশ হয়েছে। সেখান থেকে পুনর্গঠনের প্রতিজ্ঞা নিয়েছিলাম আমরা। সম্পূর্ণ কৃতিত্ব ছেলেদের। ওরা চরিত্রের কাঠিন্যটা দেখিয়েছিল। সকলে একযোগে শপথ নিয়েছিল, সেরা হয়েই দেখাব। পরিশ্রমের অন্ত রাখব না, দায়বদ্ধতা থেকে সরব না, রণে ভঙ্গ দেব না, এই যুদ্ধের শেষ দেখে ছাড়ব। ইংল্যান্ডে ওয়ান ডে সিরিজটাই আমরা জিতি এবং কামব্যাক প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর পরে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে আমরা চোখে চোখে রেখে লড়াই করি। তখন সিরিজ হেরে গেলেও আমি বলেছিলাম, এই টিম এক দিন দুনিয়া শাসন করবে। তখন সবাই ভেবেছিল, আমি ফরাসি ভাষায় কথা বলছি।

পরিণত: অধিনায়ক কোহালির অগ্রগতি দেখে উচ্ছ্বসিত শাস্ত্রী। ফাইল চিত্র

প্র: ২০১৪ থেকে এই দলটার বিবর্তন নিয়ে কী বলবেন?

শাস্ত্রী: ছেলেরা এখন অনেক বেশি পরিণত। অনেক বেশি টিম হিসেবে খেলছে। খুব ভাল বোঝাপড়া তৈরি হয়ে গিয়েছে। তরুণ রক্তের স্রোত বইতে শুরু করেছে। একটার পর একটা প্রতিভা আমরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ছুড়ে দিচ্ছি। সেই তরুণরা দারুণ ভাবে সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। একটা টিমের সব চেয়ে ভাল সময় আসে, যখন তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতার সার্থক মিশেল ঘটে। আমাদের টিমে এখন সেটাই ঘটছে।

প্র: ২০১৪-’১৫ মরসুমে অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ হারার পরেও আপনি যে বলে যাচ্ছিলেন, এই ছেলেরাই দারুণ একটা টিমে পরিণত হবে, সেটা কী দেখে বলেছিলেন?

শাস্ত্রী: আমি খুব সহজেই বুঝে গিয়েছিলাম, ছেলেদের মধ্যে প্রতিভা বা নৈপুণ্যের কোনও অভাব নেই। শুধু মানসিক ভাবে ওদের ঠিক জাযগায় আনতে হবে। সাহস ফেরাতে হবে। বিশ্বাস তৈরি করতে হবে যে, আমরা পারি। ফাস্ট বোলিং ইউনিট তৈরি করার সিদ্ধান্তটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বোলিং কোচ বি অরুণের ভূমিকা এ ব্যাপারে অতুলনীয়। আজ অনেকেই বলছেন, ভারতের হাতে বিশ্বসেরা ফাস্ট বোলিং আক্রমণ রয়েছে। রোম এক দিনে গড়া হয়নি। এর পিছনে একটা প্রক্রিয়া রয়েছে। অরুণ সেই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছে। আমাদের মনে হয়েছিল, যদি ভাল ফাস্ট বোলারদের গ্রুপ তৈরি করতে পারি, তা হলে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে গিয়ে আমরা যে কোনও দলের সঙ্গে চোখে-চোখ রেখে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব।

প্র: এ বার ২০২০-তে আসি। নতুন বছরের লক্ষ্য কী? শপথ কী?

শাস্ত্রী: প্রথম লক্ষ্য, ২০১৯-এর সাফল্যের পুনরাবৃত্তি ঘটানো। প্রার্থনা করি, যেন চোট-আঘাতের পরিমাণটা কমে। গত বছরের শেষ দিক থেকে অনেকগুলো চোট-আঘাতের ধাক্কা সামলাতে হয়েছে। আমরা ভাগ্যবান যে, গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারদের মাঠের বাইরে কাটাতে হলেও খুব সাংঘাতিক কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যশপ্রীত বুমরা, হার্দিক পাণ্ড্যরা ফিরে আসার মুখে। ২০২০ নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে উপস্থিত হচ্ছে। বছরের শুরুতে নিউজ়িল্যান্ড সফর। বছরের শেষের দিকে অস্ট্রেলিয়া যাবে দল। মাঝখানে অস্ট্রেলিয়াতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এই সব চ্যালেঞ্জকে আমাদের বুকে জড়িয়ে নিতে হবে। ঠিক যে ভাবে ছেলেরা ২০১৯-এ বুক চিতিয়ে সমস্ত চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়েছে।

প্র: আরও একটি বিশ্বকাপের বছর। এই টিমের যা এখনও অধরা...

শাস্ত্রী: ইয়েস, ওয়ার্ল্ড কাপ। আমার মনে হয়, এই ভারতীয় দলের এ বার একটা বিশ্বকাপ প্রাপ্য। যে ভাবে গত পাঁচ বছরে ওরা পরিশ্রম করে গিয়েছে আর ধারাবাহিক ভাবে সমস্ত ফর্ম্যাটে পারফর্ম করে গিয়েছে, তার পরে ওদের ট্রফি ক্যাবিনেটে বিশ্বকাপ না থাকাটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আর শুনুন, ছেলেরাও জানে, বিশ্বকাপ হল বিশ্বকাপ এবং সেটা জিততে গেলে ক্রিকেটের নির্মম স্কোরবোর্ডে পনেরো মিনিটের ব্যর্থতাও রাখা চলবে না। সেটাই ২০১৯-এর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকে শিক্ষা। ম্যাঞ্চেস্টার আমাদের সকলের কাছে বিরাট ধাক্কা ছিল। হঠাৎ করে ঘরের আলো নিভে যাওয়ার মতো। আগের মুহূর্ত পর্যন্তও ভারতীয় দল ছিল ফেভারিট। কেউ এই ধাক্কার জন্য প্রস্তুত ছিল না। ছেলেদের মুখের দিকে তখন আমি তাকাতে পারছিলাম না। ড্রেসিংরুমে বসে মনে হয়েছিল, নীরবতার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয়েছে পুরো ঘরটা। সব চেয়ে বেশি করে স্বপ্ন ছিল আমাদের ক্রিকেটারদেরই চোখে। কাপ জেতার জন্য ওদের চেয়ে বেশি পরিশ্রম কেউ করেনি। সেই নিস্তব্ধতা কাটিয়ে ওরা ফের উঠে দাঁড়িয়েছে। আবার টগবগিয়ে চলতে শুরু করেছে। সেটাই বলে দেয়, এই টিমের চরিত্র কতটা অনমনীয়।

প্র: সামনে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তার পরে অস্ট্রেলিয়া আসছে সংক্ষিপ্ত সফরে। কিন্তু নিউজ়িল্যান্ড সফর অনেক কঠিন?

শাস্ত্রী: একদমই তাই। নিউজ়িল্যান্ড কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে উপস্থিত হবে। ঘরের মাঠে, নিজেদের পরিবেশে ওরা প্রায় অপ্রতিরোধ্য। কী টেস্ট, কী ওয়ান ডে— গোটা সিরিজেই কঠিন চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি থাকতে হবে। ওয়ান ডে-তে দারুণ সব অলরাউন্ডার রয়েছে ওদের। সন্দেহ নেই, আমাদের নতুন বছর শুরুই হচ্ছে বড় পরীক্ষা দিয়ে।

প্র: টেস্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন তর্ক চালু হয়েছে। আইসিসি প্রস্তাব দিয়েছে, পাঁচ দিনের বদলে চার দিনের টেস্ট হোক। এই প্রস্তাব নিয়ে আপনার মতামত কী?

শাস্ত্রী: আমার মনে হচ্ছে, টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে অযথা বড্ড বেশি খোঁচাখুঁচি করা হচ্ছে। দরকারটা কী? পাঁচ দিনের টেস্ট নিয়ে সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে? ভালই তো চলছে বেশ। গত এক দশকের উদাহরণ যদি দেখেন, অসাধারণ সব টেস্ট ম্যাচ আমরা দেখেছি, যেখানে পঞ্চম দিনের শেষ সেশনে গিয়ে রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তি ঘটেছে। আমাদের এই ভারতীয় দলও কয়েকটা অসাধারণ পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচে অংশ নিয়েছে। পঞ্চম দিনে টেস্ট ম্যাচের এই রুদ্ধশ্বাস পরিণতিটার মজাই আলাদা। সেটাকে পাল্টে ফেলার বিপক্ষে আমি। সব কিছু যখন ঠিকঠাক চলছেই, তখন শুধু শুধু বর্তমান প্রক্রিয়াকে বিরক্ত করব কেন?

প্র: সারা দেশ মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভবিষ্যৎও জানতে চায়। হেড কোচ কী বলবেন?

শাস্ত্রী: একটাই কথা বলব। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে ধোনির ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা করার দরকারই নেই। আইপিএল-ই যা বলার বলে দেবে। আমি তাই সকলের উদ্দেশে বার্তা দিতে চাই, ধৈর্য ধরে আইপিএল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুধু ধোনির ভবিষ্যৎ বলে নয়, আমার বিশ্বাস, আইপিএল আচমকা অন্য কাউকেও দৌড়ে এনে দিতে পারে। যাদের কথা হয়তো এখন কেউ ভাবছেই না। আইপিএলে দুর্ধর্ষ কিছু করে কেউ অভাবনীয় ভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দৌড়ে চলে আসতে পারে।

প্র: ধোনির সঙ্গে এ নিয়ে আপনি কি কোনও কথা বলেছেন?

শাস্ত্রী: না, না। সে ভাবে কোনও কথা বলিনি। রাঁচীতে এম এস ড্রেসিংরুমে এসেছিল। হ্যালো-হাই আর সাধারণ কথোপকথন। তার বেশি কিছু নয়।

প্র: বুম বুম বুমরাকে দলে ফিরে পেয়ে নিশ্চয়ই গোটা দল খুব খুশি?

শাস্ত্রী: অবশ্যই। বুমরা অসাধারণ বোলার এবং গত এক বছর ধরে সেরা বোলিং করেছে। বিশ্বকাপে কী দারুণ বোলিং করেছে, নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যায়নি। তার পরে চোটের জন্য ছিটকে যাওয়াটা ওর জন্যও বড় ধাক্কা ছিল। আমি খুব খুশি ওকে ফিরতে দেখে। বিশাখাপত্তনমে নেট প্র্যাক্টিসে আমরা ওকে ডেকেছিলাম। দারুণ বোলিং করল। আগের মতো ফাইটিং ফিট। আশা করব, যত দিন যাবে, ততই আমরা পুরনো বুমরাকে দেখতে পাব।

প্র: শেষ প্রশ্ন। ক্যাপ্টেন কোহালিকে নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী? সেই অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে আপনি দেখছেন। এখন কতটা পরিণত অধিনায়ক বিরাট?

শাস্ত্রী: অবিশ্বাস্য! তিন ধরনের ক্রিকেটে এ রকম ধারাবাহিকতা আমি কোনও ক্রিকেটারের কাছ থেকে দেখিনি। বিরাটের বিভিন্ন ফর্ম্যাট এবং নানা রকম পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার গুণ অতুলনীয়। এবং কী অনায়াস ভঙ্গিতে সেটা করে চলেছে ও! কী অসাধারণ দায়বদ্ধতা ক্রিকেটের প্রতি! প্রত্যেকটা ম্যাচে মাঠে নেমে দু’শো শতাংশ দেবে। কী অসামান্য মনঃসংযোগ! দুর্ধর্ষ খিদে। আজ সেঞ্চুরি করে উঠল তো পরের মুহূর্তেই সেই উৎসবকে অতীত করে দিল। তক্ষুনি যেন মনকে বলে দেয়, বিরাট, তুমি আবার ০ ব্যাটিং। শারীরিক শৃঙ্খলা তো আছেই। কিন্তু মানসিক বন্ধনটাও বিরাটকে আজ বিশ্বের এক নম্বর করে তুলেছে। অধিনায়কত্বেও এই মানসিকতাই আমদানি করেছে ও এবং গোটা দলের মধ্যে সেই ঘ্রাণ ছড়িয়ে দিয়েছে। বিরাটকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সব বিশেষণই বহু বার ব্যবহার হয়ে গিয়েছে। নতুন অভিধান আবিষ্কার করতে হবে এ বার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE