Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Manoj Tiwari

অভিমন্যুর হাতে রঞ্জি ট্রফি দেওয়া লক্ষ্য আমার

কটকে ওড়িশার বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফি কোয়ার্টার ফাইনালের দু’দিন আগে অনুশীলন শেষে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন তিনি।

প্রত্যয়ী: শেষ আটের দ্বৈরথে মনোজদের বড় অস্ত্র আত্মবিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র

প্রত্যয়ী: শেষ আটের দ্বৈরথে মনোজদের বড় অস্ত্র আত্মবিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত
কটক শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:১৩
Share: Save:

সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে তাঁর ব্যাট। গত মরসুমে সিএবি-র পক্ষ থেকে চূড়ান্ত শর্ত দিয়ে বলে দেওয়া হয়েছিল, ‘‘দু’ম্যাচের মধ্যে নিজেকে প্রমাণ করো।’’ ডাবল সেঞ্চুরি করে জবাব দিয়েছিলেন। চলতি মরসুমে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একটি ট্রিপল সেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছে। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে কঠিন পিচে যখন সবাই ব্যর্থ, সেখানে এক ইনিংসে ৭৩ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৫ রান করে দলকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন। তিনি মনোজ তিওয়ারি। কটকে ওড়িশার বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফি কোয়ার্টার ফাইনালের দু’দিন আগে অনুশীলন শেষে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন তিনি।

প্রশ্ন: রঞ্জি ট্রফির বেশ কয়েকটি কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার অভিজ্ঞতা হয়ে গিয়েছে। কখনও সাফল্য এসেছে, কখনও ব্যর্থতা। এ বারের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে কী আশা করছেন?

মনোজ: এই দলটা একটু আলাদা। প্রত্যেকের মধ্যে জেতার খিদে লক্ষ্য করছি। পিছিয়ে পড়লেও ভেঙে পড়ছে না। জেতার জন্য নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছে প্রত্যেকে। জানি না কেন, মন বলছে এ বার অন্য রকম কিছু হতে চলেছে।

প্রশ্ন: অন্য রকম মানে? ক্রিকেটজীবনে প্রথম রঞ্জি ট্রফির স্বাদ?

মনোজ: অবশ্যই। আমি অধিনায়ক থাকাকালীন এই স্বপ্নপূরণ করতে পারিনি। সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে কেউই পারেননি। কিন্তু এই দলটির মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রসদ রয়েছে। তারুণ্যের সঙ্গে অভিজ্ঞতার এক অদ্ভুত ভারসাম্য দেখতে পাচ্ছি। প্রত্যেকে ফুরফুরে মেজাজে। এটাই তো একটি ভাল দলের উদাহরণ।

প্রশ্ন: অধিনায়ক হিসেবে আপনি বাংলাকে রঞ্জি ট্রফি দিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তা হয়নি। এ বার ক্রিকেটার হিসেবে সেই স্বপ্নপূরণের হাতছানি?

মনোজ: ক্রিকেটার মনোজের অনেক কিছুই পাওয়া উচিত ছিল, কিন্তু পায়নি। বিতর্কে জড়াতে চাই না। তবে হ্যাঁ, খেলোয়াড় জীবনে যদি রঞ্জি ট্রফি জিততে পারি, কিছুটা হতাশা তো মিটবেই। আমার এখন একটাই দায়িত্ব। অভির (অভিমন্যু ঈশ্বরন) হাতে ট্রফিটা তুলে দেওয়া। সারা বছর যাঁরা এত সমর্থন করেন, সেই বাংলা ক্রিকেটের সমর্থকদের জন্যই এখনও সাবলীল ভাবে খেলে যেতে পারছি। তাঁদের হাসি মুখে দেখতে চাই।

প্রশ্ন: ৩৪ বছর বয়স হয়ে গিয়েছে। এখনও আপনার মধ্যে আগের মতো রানের খিদে লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ কোনও প্রেরণার কথা বলবেন?

মনোজ: প্রেরণা আমার ছেলে। ওর জন্যই ক্রিকেট খেলছি। বড় হয়ে যেন বুঝতে পারে ওর বাবা খারাপ খেলত না। চাইলে ক্রিকেট ছেড়ে দিতেই পারতাম। বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব পেয়েছি সেখানে গিয়ে কোচিং করানোর। শুধুমাত্র রঞ্জি জেতার খিদে মাঠে রেখে দিয়েছে।

প্রশ্ন: বাংলা দলের এ রকম আমূল পরিবর্তন হওয়ার কারণ কী?

মনোজ: লালজি (অরুণ লাল) আসার পর থেকে দলের পরিবেশই পাল্টে গিয়েছে। মরসুমের দু’মাস আগে থেকে ফিজিক্যাল ট্রেনিং করানো হয়েছে। তার ফল পাচ্ছি প্রত্যেক ম্যাচে। ফিল্ডিং করেই অনেক দলের মনোবল নষ্ট করে দিচ্ছি। তার উপরে লালজির অভিজ্ঞতা আমাদের বড় সম্পদ। তিরিশ বছর আগে রঞ্জি জয়ী দলের সদস্য তিনি। উনি যখন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলেন, আমরা মন দিয়ে শুনি।

প্রশ্ন: আপনি তিনটি প্রজন্মের দলে খেলেছেন। উৎপল চট্টোপাধ্যায়দের সঙ্গে খেলেছেন। লক্ষ্মীরতন শুক্ল, দীপ দাশগুপ্তরাও আপনার এক সময়ের সতীর্থ। এখন একেবারে তরুণ ব্রিগেড। এই দলটির মধ্যে আগামী তারকা হিসেবে কাকে দেখছেন?

মনোজ: অনেকেই আছে। ঈশান পোড়েল, আকাশ দীপ, মুকেশ কুমার ও শাহবাজ আহমেদ। এই চারটি ছেলে কিন্তু দুরন্ত পারফর্ম করছে। ঈশান গত দু’বছর ধরেই ভাল খেলছে। এ বছর থেকে জ্বলে উঠতে শুরু করেছে শাহবাজরা। আশা করি, নির্বাচকেরা ওদের পারফরম্যান্সে নজর রাখছেন। তাঁরা মাঠে এলে বুঝতেন, কোন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিচ্ছে ওরা। সেঞ্চুরি অথবা উইকেটসংখ্যা দিয়ে সবাইকে বিচার করা যায় না। এক জনের পারফরম্যান্সে দল কতটা সাহায্য পেল, সেটাই আসল। ওদের পারফরম্যান্সে দল লাভবান হচ্ছে।

প্রশ্ন: প্রতিপক্ষ ওড়িশা। শেষ আটে তুলনামূলক সহজ দলের বিরুদ্ধে নামবেন?

মনোজ: কোনও দলই খারাপ নয়। হতে পারে ‘সি’ গ্রুপ থেকে উঠেছে। তবুও শেষ আটে খেলা কঠিন, আমরা যদিও আত্মবিশ্বাসী। পঞ্জাব, কেরল, রাজস্থান, হায়দরাবাদের মতো দলকে হারিয়ে এখানে পৌঁছেছি। ম্যাচ না জিতে কটক ছাড়ছি না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manoj Tiwari Cricket Bengal Cricket Ranji Trophy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE