Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অভিজ্ঞতা বড় অস্ত্র হবে আমাদের

পুরনো কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। মনে পড়ে যাচ্ছে, ২০০৫ সালের অস্ট্রেলীয় ওপেন খেলতে নামার সময় কী রকম নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। ওটাই ছিল আমার প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম। ৪৯টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম পরে ঠিক সে রকমই নার্ভাস বোধ করছি। সামনের সপ্তাহে যখন ফ্লাশিং মেডোজে নামব, তখনও কিন্তু মনে একটা চাপা উত্তেজনা থাকবে।

চ্যালেঞ্জ: যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে এ বার লড়াই সানিয়ার। ফাইল চিত্র

চ্যালেঞ্জ: যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে এ বার লড়াই সানিয়ার। ফাইল চিত্র

সানিয়া মির্জা
শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৩১
Share: Save:

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে খেলতে নামার আগে মনে হচ্ছে, আরে এই না ক’দিন আগে পেশাদার টেনিসে খেলতে শুরু করেছিলাম!

ঘটনা হল, পনেরো বছর হয়ে গিয়েছে আমি পেশাদার টেনিস খেলছি। সময় সত্যিই কত তাড়াতাড়ি চলে যায়। আরও একটা বছরটাও তো প্রায় শেষ হয়ে এল। বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলতে নামব এ বার।

পুরনো কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। মনে পড়ে যাচ্ছে, ২০০৫ সালের অস্ট্রেলীয় ওপেন খেলতে নামার সময় কী রকম নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। ওটাই ছিল আমার প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম। ৪৯টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম পরে ঠিক সে রকমই নার্ভাস বোধ করছি। সামনের সপ্তাহে যখন ফ্লাশিং মেডোজে নামব, তখনও কিন্তু মনে একটা চাপা উত্তেজনা থাকবে। তবে এত দিনকার অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে, কী ভাবে এই অনুভূতিকে সেরা পারফরম্যান্সে বদলে দিতে হয়।

গত পাঁচ বছরে আমি যে দুর্দান্ত সাফল্য পেয়ে এসেছি, তার তুলনায় এই বছরটা নিষ্প্রভ কেটেছে। আশানুরূপ ফল বা ট্রফি পাইনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও ব্রিসবেনে ট্রফি জেতার পরে তিনটে ফাইনালে খেলেছিলাম। অস্ট্রেলীয় ওপেনের মিক্সড ডাবলসের ফাইনালে উঠে হেরে গিয়েছিলাম। ফলে অন্তত গত চার বছর ধরে একটা না একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে ওঠার রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রাখতে পেরেছি।

আমার সৌভাগ্য, পেশাদার টেনিসে আমার কেরিয়ারটা বেশ উজ্জ্বলই। এত লম্বা কেরিয়ারে উত্থান-পতন থাকবেই। কিন্তু এ বছরে যেন আমার ডাবলস সঙ্গীরা বিশেষ ভাবে দুর্ভাগ্যের শিকার হচ্ছে।

এ বছরের ফরাসি ওপেন থেকে শুরু। ইয়ারোস্লোভা শ্বেদোভা গোড়ালির চোটে কাবু হয়ে পড়ল। দুর্ভাগ্যের ওখানেই শেষ নয়। উইম্বলডনেও একই ব্যাপার চলল। এমনকী যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের আগে প্রস্তুতি টুর্নামেন্টেও দুর্ভাগ্য আমার পিছু ছাড়েনি। সপ্তাহ দু’য়েক আগে রজার্স কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়াকওভার দিয়ে দিতে হল। আমার সঙ্গী, চিনের শুয়াই পেংয়ের হাঁটুর চোটটা ওকে ভোগাতে শুরু করল। জার্মানিতে উড়ে গিয়ে ইনজেকশন নিয়ে আসতে হল ওকে।

পেং দিন দুই বাদে ফিরে এল। তার পর আমরা আবার সিনসিনাটি ওপেনে একসঙ্গে খেললাম। সেমিফাইনালেও উঠলাম। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের আগে আমাদের প্র্যাকটিসটাও মোটামুটি হল। এর আগে পেং না থাকায় রোমানিয়ার মনিকা নিকুলেস্কুর সঙ্গে জুটি বেধে ওয়াশিংটনেও খেলি। ওখানেও শেষ চারে একটা উত্তেজক ম্যাচ হারি।

মেনে নিচ্ছি, এখনও পর্যন্ত হার্ডকোর্ট মরসুমটা আমার সে রকম ভাল যায়নি। তাই যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে একটা ভাল কিছু করে বছরটা শেষ করতে চাই। ইতিহাস বলছে, এই গ্র্যান্ড স্ল্যামটায় আমি ভাল ফলই করে এসেছি। এখানেই বেশ কিছু বছর আগে সিঙ্গলসের প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিলাম। তার পর হেরে যাই মারিয়া শারাপোভার কাছে। তা ছাড়া ২০১৫ সালে ডাবলস ট্রফিটা জিতি। তার আগের বছর জিতেছিলাম মিক্সড ডাবলস ট্রফি।

শুয়াই পেংয়ের বিরুদ্ধে আমি প্রথম খেলেছিলাম মায়ামিতে, অরেঞ্জ বোল-এ। তখন আমরা জুনিয়র পর্যায়ে খেলছিলাম। সিনিয়র সার্কিটে আমার কয়েক মাস আগে পেং বিশ্বের এক নম্বর ডাবলস খেলোয়াড় হয়েছিল। আমরা দু’জনেই সার্কিটে অনেক দিন থেকে আছি। আমাদের দু’জনের অভিজ্ঞতা এ বার বড় অস্ত্র হতে চলেছে। এই অভিজ্ঞতার ওপর ভরসা করেই বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে ভাল কিছু করতে চাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE