তারকা: আইএসএলের দ্রুততম হ্যাটট্রিকের মালিক এফসি গোয়ার ফেরান কোরোমিনাস। নিজস্ব চিত্র
গত চার বছরে আইএসএল-এর দ্রুততম হ্যাটট্রিকের মালিকের নাম জানতে চাইলে উঠে আসে ওঁদের চারজনের নাম। যে তালিকায় রয়েছেন রেইনাল্ডো, ডুডু ওমাগবেমি, ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী এবং মার্সেলিনহো-রা।
এ বার এই চার জনকেই পিছনে ফেলে দিয়েছেন এফসি গোয়ার স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ফেরান কোরোমিনাস। সতীর্থদের কাছে যিনি পরিচিত কোরো নামেই।
নভেম্বরের শেষ দিনে বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেই গোটা ভারতে সংবাদ-শিরোনামে এসেছিলেন কোরো। কিন্তু তার পরেই গত চার বছরের দ্রুততম হ্যাটট্রিককারীদের কোরো পিছনে ফেলে দিয়েছেন নয় ডিসেম্বরের দিন। সে দিন ঘরের মাঠ মারগাও-এর ফতোরদা স্টেডিয়ামে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে মাত্র সাত মিনিটে হ্যাটট্রিক করে আইএসএলের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়েছেন কোরোমিনাস।
যে সম্পর্কে এফসি গোয়ার এই ফুটবলার বলছেন, ‘‘ফুটবল কেরিয়ারে সব সময় ডান কিংবা বাঁ প্রান্তে খেলেছি। ফলে গোল করে অনেক সময় দলকে সাহায্য করতে পারিনি। কিন্তু এখানে গোল করে দলকে জেতাতে পেরে দারুণ লাগছে। তবে হ্যাটট্রিকের নেপথ্যে রয়েছে সতীর্থদের বাড়ানো ঠিকানা লেখা পাসগুলি। যা বাড়াচ্ছিল ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজ, আহমেদ জোহু এবং ম্যানুয়েল লানজারোতে।’’
দু’বছর আগে আইএসএলের প্রথম দ্রুততম হ্যাটট্রিক করেছিলেন রেইনাল্ডো। সময় নিয়েছিলেন ৩২ মিনিট। সেই বছর যা ভেঙে দিয়ে প্রথমে নতুন রেকর্ড গড়েন ডুডু। তিনি সময় নিয়েছিলেন ২৫ মিনিট। কয়েক দিন পর ফের তা ভেঙে দেন সুনীল ছেত্রী। হ্যাটট্রিক করতে তাঁর সময় লেগেছিল ২৩ মিনিট। গত বছর মার্সেলিনহো তাঁর হ্যাটট্রিক করার আরও পাঁচ মিনিট এগিয়ে এনে করেন ১৮ মিনিটে। কিন্তু এ বার সব রেকর্ড ফিকে করে দিয়ে সাত মিনিটে যে হ্যাটট্রিকের রেকর্ড গড়েছেন কোরো, তা বহু বছর অক্ষত থাকতে পারে বলে অভিমত ফুটবল বিশেষজ্ঞদের।
কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে গত শনিবার এফসি গোয়া প্রথমার্ধ শেষ করেছিল ২-২। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হতেই প্বল গোলক্ষুধা নিয়ে কোরো ঝাঁপিয়ে পড়েন বিপক্ষ রক্ষণে। ৪৭ থেকে ৫৫ এই সাত মিনিটে হ্যাটট্রিক করেন কোরো। যার সুবাদে ৫-২ জিতে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে চার ম্যাচের পর নয় পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে এফসি গোয়া।
জোড়া হ্যাটট্রিকের ফলে সাত গোল করে এই মুহূর্তে গোলদাতাদের শীর্ষে ফেরান কোরোমিনাস। যিনি চার ম্যাচে ৩৬০ মিনিট মাঠে থেকে বাড়িয়েছেন দু’টো গোলের অব্যর্থ পাসও। তাঁর বাড়ানো মোট পাসের সংখ্যা ১৩৮ টি।
ফুটবলে কোরো-র প্রাথমিক পাঠ আরসিডি এস্প্যানিয়ল-এর হয়ে। বড় হয়ে এই দলেরই সিনিয়র টিমের হয়ে পেশাদার ফুটবলে প্রথম আত্মপ্রকাশ কোরোর। ২০০৫-০৬ মরসুমে লা লিগায় দলের শেষ ম্যাচে রিয়াল সোসিদাদ-এর বিরুদ্ধে গোল করে দলের অবনমন বাঁচিয়েছিলেন কোরো। সেই বছরেই এস্প্যানিয়লের হয়ে কোপা দেল রে জয়ী দলের সদস্য ছিলেন এই স্প্যানিশ ফুটবলার। দেশের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৭, ১৯ ও ২০ দলের খেলেছেন তিনি।
আইএসএলে এই মুহূর্তে জোড়া হ্যাটট্রিক তাঁর। ভারতে আসার আগে ফুটবল কেরিয়ারে মাত্র দু’টি হ্যাটট্রিক ছিল কোরো-র। যার একটি এস্প্যানিয়ল-এর রিজার্ভ টিমের হয়ে। দ্বিতীয়টি জিরোনা-র জার্সি গায়ে খেলার সময়।
ভারতে এসে মাঠের মধ্যে এত দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার রহস্য কী তা জানতে চাইলে কোরো দেখিয়ে দিচ্ছেন তাঁর স্প্যানিশ কোচ সের্জিও লোবেরা-কে। বলছেন, ‘‘দলে আমি ছাড়াও আরও ছয় জন স্প্যানিশ ফুটবলার রয়েছে। তার উপর রয়েছেন কোচ সের্জিও। যেহেতু ইংরেজি ভাষাটা ভাল করে জানি না। ফলে মাঠে ও মাঠের বাইরে আমি কী চাইছি তা জানাতে সমস্যা হচ্ছে না। ফলে মন দিয়ে ফুটবলটাও খেলতে পারছি।’’
কোরো জোড়া হ্যাটট্রিক করলেও চার ম্যাচে এফসি গোয়া গোল হজম করেছে ন’টি। দলের এই দুর্বল রক্ষণের সুবিধা কি প্রতিপক্ষরা নিতে পারে? জানতে চাইলে কোরো বলছেন, ‘‘নিজেদের দিনে আমরা যে কোনও প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দিতে পারি। তা আপাতত দেখিয়ে দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy