Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

যৌন হেনস্থার অভিযোগে এফআইআর সাঁতারুর

ওই কিশোরী সাঁতারুর অভিযোগ, গত ছ’মাস ধরেই অশালীন আচরণ করছিলেন কোচ। যিনি বাংলারই এক বিখ্যাত সাঁতারু। বর্তমানে এ রাজ্য ছেড়ে গোয়ায় প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

ফাঁস হওয়া সেই ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি।

ফাঁস হওয়া সেই ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:১৭
Share: Save:

বাংলা ছেড়ে গোয়ায় চলে গিয়েছিল সাঁতারে দেশের হয়ে পদক জিততে চায় বলে। কিন্তু সেখানে গিয়ে কোচের হাতেই যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ এ রাজ্যের এক সম্ভাবনাময় সাঁতারুর। সেই ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়েছে রাজ্যের ক্রীড়া মহলে।

ওই কিশোরী সাঁতারুর অভিযোগ, গত ছ’মাস ধরেই অশালীন আচরণ করছিলেন কোচ। যিনি বাংলারই এক বিখ্যাত সাঁতারু। বর্তমানে এ রাজ্য ছেড়ে গোয়ায় প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত। বুধবার দুপুরে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগকারিণী একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে নিজের অসহায়তার কথা জানায়। বলে, ‘‘দশ বছর বয়স থেকে ওই কোচের কাছে অনুশীলন করছি। সম্প্রতি তাঁর ডাকেই বাংলা ছেড়ে গোয়ায় গিয়েছিলাম। সঙ্গে গিয়েছিল পরিবারও। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর থেকেই কোচ আমাকে যৌন হেনস্থা করতে শুরু করেন। কাউকে বলতে বারণ করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, আমার ভবিষ্যৎ রয়েছে। পরে উপায় না-দেখে সব কিছু ফাঁস করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’’

ওই ভিডিয়োয় কিশোরী সাঁতারুকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘ওই কোচের হাত অনেক বড়। ফলে গোয়ায় পুলিশের কাছে অভিযোগ করার সাহস পাইনি। তাই সেখান থেকে পরিবার-সহ ফিরে এসেছি। মঙ্গলবার পুলিশের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু এখানেও পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি। বলে, গোয়ায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে হবে। তাই সাহায্য চাই।’’ এ ছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্য চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোচের কুকীর্তির একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করেছে অভিযোগকারিণী। সে নিজের মোবাইল ফোনে গোপনে তুলে রেখেছিল ওই ভিডিয়ো। যে ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার।

কিশোরীর এই ভিডিয়ো প্রকাশের পরেই নড়েচড়ে বসেন বাংলার সাঁতার প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত কর্তারা। রাজ্য সংস্থা বেঙ্গল অ্যামেচার সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন (বাসা)-এর সচিব স্বপন আদক এখন ভোপালে। তিনি খবর পেয়েই যোগাযোগ করেন রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে। তার পরেই চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ ওই কিশোরীর বাড়ি যায়। রাতে রিষড়া থানায় গিয়ে এফআইআর করেন কিশোরীর বাবা। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ের যা সাফল্য, তা কোচের জন্যই। কিন্তু তিনি যে এই সর্বনাশ করবেন, তা ভাবতে পারিনি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। এ বার আইন অনুয়ায়ী, তদন্ত শুরু হবে। যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সেই কোচের দু’টি মোবাইল ফোনই বন্ধ ছিল। তাই চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ বাসা সচিব। তিনি ফোনে ভোপাল থেকে বলেন, ‘‘একটি বাচ্চা মেয়ের সঙ্গে এই আচরণে স্তম্ভিত হয়ে যাচ্ছি। দোষী প্রমাণিত হলে ওই কোচের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হোক।’’ এই ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্য সাঁতারের সব স্তরের ব্যক্তিত্বেরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Swimmer BASA Video Leak Sexual Harassment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE