ব্রেক্সিট
ইউরো কাপ
উইম্বলডন।
লন্ডনে পা রেখে আমার মনে হচ্ছে এটাই এখানকার জনগণের এই মুহূর্তে আগ্রহের র্যাঙ্কিং।
গত চব্বিশ ঘণ্টায় আমার লন্ডনের বন্ধুবান্ধবদের বা তাদের পরিচিতদের যার সঙ্গেই আড্ডাটাড্ডা হল, দেখলাম বেশির ভাগই ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে। অথচ বিলেতের কাগজ-টিভি চ্যানেলে তো দেখছি, ইংল্যান্ডের বেশি মানুষ ব্রিটেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে। তা হলে কি আমি উইম্বলডনের কাছাকাছি যে ফ্ল্যাটে আছি তার আশপাশের মানুষজনের ভাবনা অন্য রকম?
প্রতিবেশী দেশে হইহই করে চলা ইউরো নিয়ে অবশ্য আমার এখানে মনে হচ্ছে, প্রায় সবার ভাবনা এক— ওয়েন রুনিরা যত দিন ফ্রান্সে টিকে আছে, তত দিনই ইউরো কাপ নিয়ে ইংল্যান্ডের মাথাব্যথা। সোমবার উইম্বলডন শুরুর দিনই ইংল্যান্ডের প্রথম নকআউট ম্যাচ। হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে, সে দিন তাদের জাতীয় ফুটবল দলের কোনও খারাপ রেজাল্ট হলেই ইংরেজদের গরিষ্ঠ অংশ ফের টেনিসমুখী হয়ে পড়বে।
তবে আপাতত উইম্বলডন নিয়ে খুব বেশি আগ্রহ দেখছি না লন্ডনের রাস্তাঘাটে। যদিও আমার ব্যক্তিগত ধারণা, উইম্বলডনের সবুজ কোর্টে এক বার বল পড়লেই বছরের এই সময়টার বিলেতবাসীর চিরকালীন পক্ষকাল টেনিস-জ্বরে ভোগা শুরু হয়ে যাবে। সে ইউরোয় ইংল্যান্ড টিকে থাক বা না থাক। আজই উইম্বলডনে ঢুঁ মারতে গিয়েছিলাম। প্রতিবারের মতো অল ইংল্যান্ড ক্লাবের ঘাসের কোর্টগুলো সবুজে সবুজ দেখাচ্ছে। তবে যতক্ষণ খেলা না হচ্ছে বলা মুশকিল সেন্টার কোর্ট, স্টেডিয়াম কোর্ট বা আগে যেটাকে ফেভারিটদের ঘাতক এক নম্বর কোর্ট বলা হত, এখনকার সেই ‘কোর্ট নম্বর টু’-র মতো মেন কোর্টগুলো এ বার কেমন? ফাস্ট না স্লো? বল পড়ে ঠিক বাউন্স নিচ্ছে, না একটু নিচু হচ্ছে?
ক্রিম আর স্ট্রবেরির ঐতিহ্যের পাশপাশি উইম্বলডন এ জন্যও বাকি তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যামের চেয়ে আলাদা যে, এখানে যখন-তখন যে কেউ অঘটন ঘটিয়ে দিতে পারে। সে কারণে আমি অন্তত মনে করি না, ফাইনালের আগে জকোভিচ বা ফেডেরারের কারও মুখোমুখি হতে হচ্ছে না বলে অ্যান্ডি মারের ড্র-টা সহজ। মারের দিকেও কিন্তু ওয়ারিঙ্কা, সঙ্গা, গাস্কে, লোপেজ, কিরগিওস, ট্রোইকি, ডমিনিক থিয়েম কিংবা একশো ভাগ ফিট হয়ে ওঠা দেল পোত্রো ছাড়া আমার এ বারের দুই ডার্ক হর্স আলেকজান্ডার জেরেভ আর জিলেস মুলার-ও আছে।
সাড়ে ছ’ফুটি জার্মান টিনএজার জেরেভ গত সপ্তাহেই হ্যালে ফেডেরারকে সেমিফাইনালে হারিয়েছে। যে এটিপি গ্রাসকোর্ট ওপেন উইম্বলডনের মতোই ঘরবাড়ি রজারের। কত বার যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইয়ত্তা নেই। আর ছয়-চারের মুলারের বয়সটা একটু বেশি বত্রিশ হলেও ইদানীং দুর্ধর্ষ সার্ভ-ভলি টেনিস খেলছে। তার উপর বাঁ-হাতি বলে ওর একটা বাড়তি সুবিধে, বৈচিত্র থাকবে ঘাসে। যেমন বছর কয়েক আগে ‘আউটসাইডার’ হিসেবে কিভিতোভা মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছিল।
এ বার অবশ্য মেয়েদের সিঙ্গলস মনে হচ্ছে, দুই ঘোড়ার রেস। সেরেনা ঘাসে সব সময়ই ফেভারিট আর ওকে যদি উইম্বলডনে কেউ আটকাতে পারে তো সেটা মুগুরুজা-ই। ছিপছিপে চেহারা কিন্তু পাওয়ার টেনিসে ওস্তাদ যে স্প্যানিশ মেয়ে কয়েক সপ্তাহ আগেই রোলাঁ গারো ফাইনালে সেরেনাকে চূড়ান্ত হতাশ করেছিল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy