উল্লাস: গোলের পরে সুয়ারেসের কোলে মেসি। লা লিগায়। ছবি: এএফপি
রিয়াল সোসিদাদ ২ : বার্সেলোনা ৪
অবিশ্বাস্য একটা ফ্রি কিক। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে মারা কিকটা শূন্যে বাঁক খেয়ে যখন গোলে ঢুকছে, রিয়াল সোসিদাদের গোলকিপার জেরোনিমো রুল্লি-র অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না।
ফুটবল সম্রাটের পা থেকে বেরোনো সেই ফ্রি কিক দেখে তখন উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। আর তিনি কী করছেন? চমকপ্রদ গোলটা করে লিওনেল মেসি তখন উঠে পড়েছেন লুইস সুয়ারেসের কোলে।
যে গোল দেখার পরে গ্যারি লিনেকারের টুইট, ‘মেসি একটা অবিশ্বাস্য ফ্রি কিকে গোল করল। ও যে ফুটবলটা খেলে সেটা বাকি মানুষ স্বপ্নেও ভাবতে পারবে না।’ সোশ্যাল মিডিয়ার মিলিত প্রতিক্রিয়াটাও মোটামুটি এক— এই লোকটা মানুষ নয়। মেসি ভক্তদের এক জনের টুইট, ‘মেসি খেললে বার্সেলোনার ন’জনে খেলা উচিত। তা হলে বিপক্ষের জন্য ব্যাপারটা নৈতিক হবে।’ একজন এই ফ্রি কিক-কে বলেছেন, ‘অলৌকিক’।
রবিবার রাতে রিয়াল সোসিদাদ ম্যাচের শুরুতে অবশ্য বোঝা যায়নি যে এতটা আধিপত্য নিয়ে খেলা শেষ করবে বার্সেলোনা। শুরুতে ৩৪ মিনিটের মধ্যে ০-২ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল বার্সেলোনা। ১১ মিনিটের মাথায় সোসিদাদের হয়ে প্রথম গোল করেন উইলিয়ান জোসে। ৩৪ মিনিটের মাথায় ২-০ করে দেন জুয়ানমি। সে সময় মনে হচ্ছিল, একটা অঘটনের শিকারই বোধহয় হতে চলেছেন মেসিরা। ইতিহাসও বার্সার পক্ষে ছিল না। সোসিদাদের ঘরের মাঠে সেই ২০০৭ সাল থেকে জিততে পারেনি বার্সেলোনা।
কিন্তু প্রথমে পাওলিনহো এবং তার পরে সুয়ারেসের জোড়া গোলে ম্যাচে ফিরে আসে বার্সেলোনা। তবে চমক হয়ে থাকল মেসির সেই অবিশ্বাস্য ফ্রি কিক। ৮৫ মিনিটের মাথায় ৩০ গজ দূরত্ব থেকে।
শেষ পর্যন্ত ৪-২ গোলে ম্যাচ জিতে উঠে মেসি তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমরা সব রকম বাধা কাটিয়ে স্কোরলাইন উল্টে দিতে পেরেছি। খুব শক্তিশালী একটা দলকে হারাতে পারলাম।’ এই জয়ের ফলে লা লিগা জেতার দিকে অনেকটাই এগিয়ে গেল বার্সেলোনা। এই মুহূর্তে রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ১৯ পয়েন্টে এগিয়ে তারা। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর টিম লিগ টেবিলে চার নম্বরে দাঁড়িয়ে। ভিয়ারিয়ালের কাছে হারের পরে রিয়ালের পক্ষে এখন লিগ জেতা ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এমনকী ওই পারফরম্যান্সের পরে দেখা যাচ্ছে তিন নম্বরে থাকা ভ্যালেন্সিয়াও আট পয়েন্টে এগিয়ে গিয়েছে রিয়ালের চেয়ে। শনিবার রাতেই দেপোর্তিভো লা করুনা-কে ২-১ গোলে হারিয়েছে ভ্যালেন্সিয়া।
ম্যাচ জেতার পরে বার্সা কোচ ভালভার্দে বলেছেন, ‘‘যখন ০-২ পিছিয়ে ছিলাম, মনে হচ্ছিল, অভিশাপটা আমাদের এখনও তাড়া করে চলেছে। এ বারও বুঝি ম্যাচ জিততে পারলাম না। কিন্তু বিরতির আগে গোলটা করতে পারায় খুব সুবিধে হয়ে গেল। ০-২ পিছিয়ে থাকা অবস্থায় আমরা হাল ছেড়ে দিইনি। আক্রমণ চালিয়ে গিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত গোলগুলো এল।’’
এই নিয়ে বার্সেলোনার হয়ে ৩৬৬তম গোল করলেন মেসি। একই সঙ্গে তিনি ভেঙে দিলেন জার্মান কিংবদন্তি গার্ড মুলারের রেকর্ড। একই ক্লাবের হয়ে ইউরোপের প্রথম পাঁচটা লিগে সর্বোচ্চ স্কোরার এত দিন যুগ্মভাবে ছিলেন মুলার এবং মেসি। রবিবারের পরে মেসিই একক ভাবে এই রেকর্ডের মালিক।
এরই মধ্যে বার্সেলোনা শিবিরে অস্বস্তি নিয়ে এসেছে ওসমান ডেম্বেলের চোট। বার্সেলোনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ডেম্বেলে অন্তত ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকবেন। তাঁর হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট লেগেছে। তবে ক্লাব এটাও জানিয়েছে, গত বছর যে রকম অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল, এ বার অবস্থা সে রকম সঙ্কটজনক কিছু নয়। চিকিৎসকদের আশা, মাসখানেক বিশ্রাম নিলেই সুস্থ হয়ে যাবেন ডেম্বেলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy