শ্যামসুন্দর মিত্র (১৯৩৬-২০১৯)
চলে গেলেন বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক শ্যামসুন্দর মিত্র। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
অনেক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন বাংলার এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। যকৃৎ ও হৃদরোগের সমস্যা ছিল তাঁর। কলকাতার এক বিখ্যাত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা বেজে ১৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলার প্রাক্তন ব্যাটসম্যান।
তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে যান বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল। এ ছাড়াও সিএবি-র পক্ষ থেকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে গিয়েছিলেন দুই শীর্ষকর্তা।
শ্যামসুন্দরের মৃত্যুতে ময়দানে নেমে আসে শোকের ছায়া। বাংলা ক্রিকেটের অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবেই দেখছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। প্রাক্তন ক্রিকেটার পলাশ নন্দী বলেন, ‘‘বাংলা ক্রিকেটের জন্য খুব বড় ক্ষতি। শ্যামদা আমাদের স্তম্ভ ছিলেন। ভারতের হয়ে একাধিক টেস্ট খেলার ক্ষমতা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমরা তাঁকে দেখতে পাইনি। আমি যখন বাংলা দলে সুযোগ পাই, তখন শ্যামদার ক্রিকেটজীবন প্রায় শেষের দিকে। তবুও মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দুই ইনিংসে ওঁকে সেঞ্চুরি করতে দেখেছিলাম। আমার দেখা সেটা ওঁর সেরা ম্যাচ। এ ছাড়া মোহনবাগানকে প্রচুর ম্যাচ জেতাতেও দেখেছি।’’
১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বাংলার হয়ে খেলেছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫৯ ম্যাচে তাঁর রান ৩০৫৮। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর ব্যাটিং রীতিমতো সাড়া ফেলেছিল একটা সময়। ডান হাতি ব্যাটসম্যান হওয়ার পাশাপাশি মিডিয়াম পেস বোলিংও করতেন। তাঁর উইকেটসংখ্যা ১৫। ব্যাট হাতে ১৫৫ রানের ইনিংস তাঁর সর্বোচ্চ।
বাংলার রঞ্জি ট্রফিজয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শ্যামদা প্রতিভা চিনতে পারতেন। জুনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতেন। ওঁর মতো ক্রিকেট জ্ঞান আমি খুব কমই দেখেছি। আমার যখনই কোনও সমস্যা হত, শ্যামদার কাছে চলে যেতাম। টেকনিক্যাল সমস্যা থেকে মানসিক সমস্যা, সব ব্যাপারেই সাহায্য পেয়েছি। প্রত্যেক বিষয়েই তাঁর থেকে পরামর্শ নিতাম। বাংলা ক্রিকেটে পঙ্কজ রায় থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো ব্যাটসম্যান দেখেছি। শ্যামদাও তাঁদের মতোই এক জন।’’
সম্বরণ জানিয়েছেন, স্কুল ইন্ডিয়ার হয়ে খেলার সময় তাঁকে মোহনবাগানে সই করান শ্যামসুন্দর মিত্র। তাঁর হাত ধরেই প্রথম চাকরি সম্বরণের। বলেন, ‘‘এত উপকার পেয়েছি যে, শ্যামদাকে জীবনে ভুলতে পারব না। ওঁর মৃত্যুতে আমি শোকস্তব্ধ।’’ বাংলাকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি নির্বাচক হিসেবেও বহু দিন কাজ করেছেন। ২০০৮-’০৯ মরসুমে সিএবি-র পক্ষ থেকে জীবনকৃতি সম্মান দেওয়া হয় তাঁকে। বাংলার কোচ অরুণ লালের কথায়, ‘‘সুপারস্টার হিসেবে চিনতাম শ্যামদাকে। ওঁর ব্যাটিং দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি। কিন্তু সতীর্থদের কাছ থেকে শুনেছি, একাধিক ম্যাচ জেতানোর গল্প।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy