৯০ মিনিট শেষে সবাই যখন বন্ধু। সবাই সবাইকে জড়িয়ে ধরলেন এ ভাবেই। রবিবার যুবভারতীতে। ছবি: আইএসএল।
পাশে দাঁড়ানো বোধহয় একেই বলে। দলের সঙ্গে থাকা মানে বোধহয় এটাই। একক কেউ নয়, ম্যাচ জেতাও যেমন দলগত, হারলেও তার দায় দলেরই। চুম্বকে এটাই বুঝিয়ে দিলেন এটিকে কোচ টেড শেরিংহ্যাম।
আরও পড়ুন
পুণের কাছে গুনে গুনে ৪ গোল খেল এটিকে
আইএসএল-এর উত্তাপ এখনও লাগেনি কলকাতায়
যাঁর উপর সব থেকে ভরসা ছিল, সেই দেবজিৎ মজুমদারই এ দিন সব থেকে বেশি ডোবালেন। তাঁর ভুলেই দুটো গোল হজম করতে হল। গোলের নীচে হঠাৎ দেবজিৎ কেন এতটা অসহায় হয়ে পড়লেন? তা হয়তো ড্রেসিংরুমের অন্দরে আলোচনা হবে। কিন্তু ৪-১ গোলে হারের ম্যাচ শেষেও এটিকে কোচ তাঁর গোলকিপারকে একটুও অভিযুক্ত না করে তাঁর পাশেই দাঁড়ালেন। বুঝিয়ে দিলেন আসলে ভুলটা দলগত। যেটা করে দেখাল পুণে, সেটা পারল না এটিকে। শেরিংহ্যাম বলেন, ‘‘সব দোষ দেবজিতের উপর চাপিয়ে দেওয়াটা ঠিক হবে না। প্রথম গোলটা ভুল ছিল। তার জন্য ওকে দোষ দিতে পারি না। দ্বিতীয় গোল দুরপাল্লার হেড ছিল, আমাদের মিডফিল্ডের সেটা ক্লিয়ার করা উচিত ছিল। তৃতীয় ও চতুর্থ গোল ডিফ্লেকশন থেকে। আমার মতে, দেবজিতকে দোষ দেওয়ার মতো কিছু হয়নি। কখনও কখনও এমন হয় ফুটবলে।’’ এর সঙ্গে শেরিংহ্যাম জুড়ে দেন, ‘‘প্রথম ম্যাচে ও দারুণ খেলেছিল। সব সময় গোলকিপারের ভুল থাকে না।’’
গোলের পর কোচ শেরিংহ্যামের আলিঙ্গনে বিপিন।
এ ভাবে দলের কোচ যে তাঁর পাশে দাঁড়াবেন তা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেননি দেবজিৎ মজুমদার। সঙ্গে প্রতিপক্ষের খেলারও প্রশংসা করেছেন তিনি। যেখান থেকে খেলায় ফেরার কথা ছিল এটিকের সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েছিল দল বলে দাবি শেরিংহ্যামের। না হলে সমতায় ফেরার পর ম্যাচের আরও বাকি ছিল ৪০ মিনিট। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারলে জিতেই মাঠ ছাড়তে পারত দল। কিন্তু সমতায় ফেরার আধা মিনিটের মধ্যেই গোল হজম করে বসে। শেরিংহ্যাম বলেন, ‘‘সমতায় ফেরার পর দল ঘুমিয়ে পড়েছিল। ওরা সুযোগগুলো কাজে লাগিয়েছে আমরা যেটা পারিনি।’’
দেবজিতের পাশে যেমন দাঁড়িয়েছেন, যে ভাবে প্রতিপক্ষের প্রশংসা করেছেন সে ভাবেই বিপিনের ফ্রিকিকের প্রশংসা করতেও ভোলেননি কোচ। বলেন, ‘‘আমরা কিন্তু অসাধারণ একটা ফ্রিকিক দিয়ে ম্যাচে ফিরেছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় গোল হজম করেই আমরা চাপে পড়ে গিয়েছিলাম।’’ দলের কোনও সমালোচনাও তেমন ভাবে শোনা যায়নি শেরিংহ্যামের গলায় বরং তাঁর দাবি, একটা দল হিসেবেই খেলেছে সবাই। সে রক্ষণ হোক বা আক্রমণ। যদিও ফলাফলে তার কোনও প্রতিফলন নেই। ম্যাচের শুরুটা ভাল করতে না পারার আফসোস রয়েছে তাঁর। শেরিংহ্যামের দাবী, শুরুটা ভাল করতে না পারলেও প্রথমার্ধের খেলার রাশ পুণের হাত থেকে কলকাতা নিয়ে নিয়েছিল।
ম্যাচ শেষে খোশমেজাজে পুণে কোচ পপোভিচ।
অন্য দিকে পুণে কোচ র্যাঙ্কো পপোভিচ ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলছেন রোহিত কুমারের গোলকেই। বলেন, ‘‘দ্বিতীয় গোলই আমাদের ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। আমরা কমপ্যাক্ট হয়ে খেলতে চেয়েছিলাম। আমরা জানতাম না ৪-১ গোলে জিতব। তবে আমরা স্মার্ট ফুটবল খেলেছি।’’ মার্সেলোর প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ হতে দেখা গেল পপোভিচকে। বলে দিলেন, ‘‘যা চেয়েছিলাম ওর থেকেই তাই পেয়েছি। ও দলের সঙ্গে খেলে, দলের জন্য খেলে। লিগের সেরা প্লেয়ার ও। আশা করছি এই খেলা আমরা ধরে রাখতে পারব।’’
যাঁর গোলে ম্যাচের মোড় ঘুরে গেল সেই রোহিত কুমার কিন্তু গোলের কথা ভাবেনইনি। শুধুই কর্নার লক্ষ্য করে উঠে গিয়েছিলেন বক্সের মধ্যে। রোহিত কুমার বলেন, ‘‘আমি কর্নার দেখে ভেবেছিলাম ওটার জন্য ঝাঁপাব। আর এটা কিন্তু দারুণ আমরা খেলায় ফিরেছি। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল ভাল খেলে জেতা। আমি প্রতিদিন নিজেকে উন্নত করি। সবাই ভারতীয় দলে খেলতে চায়। আমিও আলাদা নই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy