Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জ্বরের জন্য পুণেতে খেলাই হত না রাসেলের

গত বারের চ্যাম্পিয়ন কেকেআর অধিনায়ক আবার কলম ধরলেন আনন্দবাজারের জন্য। নাইট সংসারের সব হালহকিকত জানাচ্ছেন গৌতম গম্ভীর আন্দ্রে রাসেল কী ইনিংসটাই না খেলল! দুর্ধর্ষ। কিন্তু শুনলে অবাক হবেন, পঞ্জাব ম্যাচটা আর একটু হলে মিস করতে চলেছিল ও। শনিবার ব্রেকফাস্ট করছি, একজন সাপোর্ট স্টাফ এসে বলল রাসেলের জ্বর হয়েছে। পুণের ম্যাচে ও না-ও খেলতে পারে। শুনে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। তা হলে কি ব্র্যাড হগকে খেলাব? নাকি প্যাট কামিন্সকে একটা সুযোগ দেব? পারমুটেশন-কম্বিনেশন নিয়ে ভাবছি, হঠাৎ রাসেলের মেসেজ এল— আমি খেলতে চাই।

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২১
Share: Save:

আন্দ্রে রাসেল কী ইনিংসটাই না খেলল! দুর্ধর্ষ। কিন্তু শুনলে অবাক হবেন, পঞ্জাব ম্যাচটা আর একটু হলে মিস করতে চলেছিল ও। শনিবার ব্রেকফাস্ট করছি, একজন সাপোর্ট স্টাফ এসে বলল রাসেলের জ্বর হয়েছে। পুণের ম্যাচে ও না-ও খেলতে পারে। শুনে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। তা হলে কি ব্র্যাড হগকে খেলাব? নাকি প্যাট কামিন্সকে একটা সুযোগ দেব? পারমুটেশন-কম্বিনেশন নিয়ে ভাবছি, হঠাৎ রাসেলের মেসেজ এল— আমি খেলতে চাই।

দারুণ খুশি হলাম ঠিকই। কিন্তু পাশাপাশি এটাও মনে হল যে, এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পুরো ফিট রাসেলকে পাচ্ছি কি না, সেটা নিয়ে নিঃসন্দেহ হওয়া দরকার। বোলারদের মিটিংয়ে রাসেলের সঙ্গে দেখা করলাম। জানেন তো, এই মিটিংগুলোর কর্তা আমাদের বোলিং কোচ ওয়াসিম আক্রম। যেখানে বোলারদের সঙ্গে স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আলোচনা হয়। তা রাসেল বলল, আমি ‘অন’। এটাই হল আন্দ্রে রাসেল— বিনয়ী কিন্তু আত্মবিশ্বাসী, মজার কিন্তু পেশাদার, মাঠে ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস কিন্তু মাঠের বাইরে নম্র দানব।

সিএলআর জেমসের লেখা ‘বিয়ন্ড আ বাউন্ডারি’ বইটা আমি পড়িনি। কিন্তু শুনেছি ওটা একটা মাস্টারপিস। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান সংস্কৃতি, সমাজ, জাতি, আরও অনেক কিছু আছে ওই বইটায়। জানি না ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটারের ব্যক্তিত্ব নিয়ে ওখানে কী লেখা আছে। কিন্তু আমি নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ওরা শুধু রাম আর রেগে মিউজিকে আটকে নেই। ওদের আপাত পাগলামির মধ্যেও শৃঙ্খলা আছে। রাসেল যেমন শনিবার আমাদের দেখাল ম্যাচ কী ভাবে বের করতে হয়, তেমনই শুক্রবার ওর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান সতীর্থ জেসন হোল্ডার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ বাঁচানো একটা সেঞ্চুরি করল। রাসেলের ওই মোহক ছাঁটের তলায় যথেষ্ট ক্রিকেটীয় বুদ্ধি কিন্তু রয়েছে।

ওহ, একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। এক বার আমি রাসেলকে বলেই ফেলেছিলাম যে ওর মোহক বা গোলাপি জুতো বা সোনালি রঙের ‘ডক্টর ড্রে’ হেডফোন, কোনওটাই আমার তেমন পছন্দ নয়। শুনে আলতো হাসল শুধু। যেন বলছে, ‘‘স্কিপার, তুমি কতটুকুই বা বোঝো? নিজে তো কালো আর ধূসরের বাইরে কোনও দিন গেলে না।’’ ওই শেষ বার রাসেলের কিছু পাল্টানোর চেষ্টা করেছিলাম।

ও রকম সহজাত জাঁকজমক নিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি না করাই বোধহয় ভাল। রাসেলের ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং বা সুনীল নারিনের ডেলিভারি বা লেগ সাইডে সূর্যর পিকআপ স্ট্রোক— এগুলো তাদের মতো থাক না। কিন্তু আমার নিজের পশ্চাৎদেশে একটা পদাঘাত দরকার। প়ঞ্জাবের বিরুদ্ধে ওই জঘন্য শটটা খেলার জন্য। এক একটা দিন থাকে না, যখন কিছুই ঠিক হয় না, শনিবার আমার সে রকম গেল। মনে হয় টাইমিংয়ের কথা ভুলে আমি বলটা হিট করার বড্ড বেশি চেষ্টা করছিলাম। আমাদের কী ভাবে ব্যাট করা দরকার ছিল, সেটা মনে হয় ইউসুফ পাঠান দেখিয়ে দিল। ওর ব্যাটিংয়ে একটা শান্ত ভাব ছিল। মনে রাখবেন, পাঠানের মতো ব্যাটসম্যান প্রচারের আলোয় থাকতে অভ্যস্ত। ওর পক্ষে পার্শ্বভূমিকায় থাকাটা তাই সহজ নয়। ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে পরের ম্যাচ খেলতে আমরা এখন দিল্লিতে। পাস আর টিকিটের জন্য ফোন, কল ওয়েটিং, টেক্সট আর হোয়াটসঅ্যাপের বন্যার মধ্যে রবিবার ক্রিকেট থেকে একটা দিনের জন্য ছুটি নিয়েছিলাম। ফোনগুলো ধরার মাঝে সুইমিং পুল আর জিমে কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। যাদের যাদের চিনি, তাদের সবার কাছে সাহায্য চেয়েছি। কিন্তু তা-ও সন্ধে পর্যন্ত খানতিরিশেক টিকিট কম পড়েছে। এখানেও দেখলাম রাসেল দারুণ ফর্মে! ওর পুরনো ফ্র্যাঞ্চাইজি দিল্লি ডেয়ারডেভিলসে রাসেলের যা বন্ধুবান্ধব আছে, তাদের কাছ থেকে দশটা টিকিট জোগাড় করেছে। আর কুড়িটা হলেই...

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE