আগরতলার উজান অভয়নগরের একটা আদ্যপান্ত সাদামাটা বাড়ি। বাড়িতে খুব একটা চাকচিক্য নেই। কিন্তু, সকাল থেকেই সেখানে সাজ সাজ রব। মায়ের আদুরে মেয়ে টিনার জন্মদিন আগামিকাল। কাছে থাকবে না বলে মনটা একটু খারাপ। পায়েসটুকুও বানিয়ে খাওয়াতে পারবেন না বলে মায়ের আক্ষেপ! বাবারও ঘুম ভেঙেছে অনেকটা সকালে। তাঁর আদরের গুড্ডু এক দিন বাদেই ২২ বছরে পা দেবে যে! কী করবেন, না করবেন তা নিয়ে দিনভর প্ল্যানিং চলছে। আর সেই আনন্দকে হাজার গুণ বাড়িয়ে দিল একটা খবর। তাঁদের মেয়ে ভারতীয় জিমন্যাস্ট হিসেবে অলিম্পিকের ফাইনালে উঠেছে।
টিনা অর্থাৎ দীপা কর্মকারের দিকেই এখন নজর গোটা দেশের। অলিম্পিক্সে জিমন্যাস্টিকসের ভল্ট রাউন্ডে পদক জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন দীপা। খুশির হাওয়া কর্মকার বাড়িতে। সকাল থেকেই শুভেচ্ছা জানাতে আত্মীয়-পরিজনদের ভিড়। দীপার বাবা দুলাল কর্মকার জানান, মেয়ে অলিম্পিক্সের ফাইনাল রাউন্ডে পৌঁছনোয় তিনি ভীষণ খুশি। গতকাল রাত ১টা পর্যন্ত মেয়ের খেলা দেখেছেন। সকালে ঘুম ভাঙে একটা ফোনে। ফোনের ও পারে থাকা মানুষটা এই সুখবরটা দেন। প্রথম ভারতীয় জিমন্যাস্ট হিসেবে মেয়ে অলিম্পিকের ফাইনালে উঠেছে। বাবার আশা মেয়ে সোনা জিতে ফিরবে।
আরও পড়ুন: প্রথম অলিম্পিক্সেই ইতিহাস দীপার, ফাইনালে উঠে এ বার নজরে পদক
কিন্তু, শুরুর দিনগুলো খুব একটা সহজ ছিল না দীপার জন্য। মেয়ের ছবির দিকে তাকিয়ে একনাগাড়ে বলে চলেছিলেন দুলালবাবু। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে আজ যা করেছে, এর পিছনে রয়েছে তাঁর কঠিন অধ্যবসায়। ভারতে জিমন্যাস্টিকস এখনও সেই ভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। তার উপর ত্রিপুরার মতো ছোট জায়গাতে থেকে জিমন্যাস্টিকস চালিয়ে যাওয়াটাই ওর কাছে ছিল চ্যালেঞ্জ।’’ পদক জয়ের আশায় বুক বেঁধেছে ত্রিপুরাবাসী। তাঁদের আশা, ত্রিপুরার মেয়ে পদক জয় করে ফিরলে রাজ্যের জিমন্যাস্টিকসের হালটা খানিকটা পাল্টাবে। দুলালবাবু আরও জানান, আগামিকাল মেয়ের জন্মদিন। আর যাতে মেয়ে পদক নিয়ে ফেরে সেই প্রার্থনা নিয়ে বিভিন্ন মন্দিরে তাঁরা ঘুরবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy