রবিবার রাতে স্টেডিয়াম ছেড়ে হোটেলে যাওয়ার জন্য টিম বাসে উঠতে যাচ্ছিলেন হার্দিক পাণ্ড্য। তখনই তাঁর কানে আসে সঙ্গীতের আওয়াজ। ড্রেসিংরুমের উল্টো দিকে স্টেডিয়াম লাগোয়া বাস্কেটবল ক্লাবে তখন চলছিল ডান্ডিয়া নাচ। খোঁজ নিয়ে নাকি তা জানতেও পারেন হার্দিক। জানার পরে নাকি সেখানে গিয়ে নাচতেও চেয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন তারকা। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এমনই জানালেন দলের সঙ্গে থাকা এক কর্তা।
আসলে হার্দিকের জীবন যে বদলে গিয়েছে। তিনি এখন ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন ম্যাচউইনার। তাঁর মারা বিশাল বিশাল ছয়গুলো নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। কী ভাবে মারেন এত বড় বড় শট? রবিবার ভারতকে ম্যাচ জিতিয়ে উঠে সাংবাদিক বৈঠকে হার্দিক বলেন, ‘‘আমি কিন্তু ছোটবেলা থেকেই ছয় মেরে এসেছি। তফাত হল, এখন আমি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শটগুলো খেলছি।’’
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারলেও হার্দিক পাণ্ড্যর দুরন্ত পাওয়ার হিটিংয়ের ক্ষমতা দেখেছিল ক্রিকেট দুনিয়া। ওই ইনিংসটাই কি আপনার ক্রিকেট জীবন বদলে দিয়েছে? হার্দিক বলছেন, ‘‘আপনারা সে রকম ভাবতে চাইলে ভাবতে পারেন। আমার কোনও সমস্যা নেই। তবে তার আগে আইপিএলেও আমি কিন্তু এ রকম ভাবে খেলেছি।’’
ছেলের মধ্যে যে ম্যাচউইনার হওয়ার মশলা আছে, তা অনেক দিন আগে থেকেই জানতেন বাবা হিমাংশু পাণ্ড্য। সোমবার মুম্বইয়ে নিজেদের নতুন বাড়ি থেকে ফোনে তিনি বলছিলেন, ‘‘ছোট থেকে এ রকম পরিস্থিতিতে ও বহুবার ম্যাচ জিতিয়েছে। তবে সে ক্লাব ম্যাচে বা ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচে। আমি জানতাম ভারতকেও ও এই ভাবে একদিন না একদিন ম্যাচ জিতিয়ে ফিরবে। এই সিরিজে সেটাই করে দেখাচ্ছে হার্দিক।’’
আরও পড়ুন: শাস্ত্রীর নির্দেশে চারে নেমে খুশিই হয়েছিলেন হার্দিক
ছেলেকে নিয়ে আরও একটা স্বপ্ন দেখেন একসময় মোটর মেকানিক হিসেবে দিন যাপন করা হিমাংশু। কী সেই স্বপ্ন? ‘‘ওকে ছোট্টবেলা থেকে প্রচুর ছয় হাঁকাতে দেখেছি। আমার বিশ্বাস, এক দিন হার্দিক ভারতের হয়ে নেমে এক ওভারে ছ’টা ছয় মারবে।’’
সেটা ভবিষ্যতের কথা। বর্তমানে হার্দির যে ক্রিকেটটা খেলছে, সেটা তাঁকে ড্রেসিংরুমের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেটার করে তুলেছে। রবিবার রাতে টিম হোটেলে ফিরে জয়োৎসবে অংশ নেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। জয়ের কেক কাটতে হয় হার্দিককে। সেই কেকের টুকরো আবার তাঁর মুখে তুলে দেন বিরাট নিজেই। তার আগে খেলার শেষে ড্রেসিংরুমে ফিরে হার্দিককে সঙ্গে নিয়ে একটা ভিডিও তুলে টুইটারে তা পোস্ট করেন বিরাট। যেখানে নতুন তারকার প্রশংসা করে তাঁকে ‘সুপারস্টার’ও বলে দেন অধিনায়ক কোহালি।
আন্তর্জাতিক স্তরে তাঁর ছেলের সফল হওয়ার পিছনে আরও একটা কারণের কথা বলেছেন হিমাংশু। ‘‘ছোটবেলা থেকেই টেনশন ব্যাপারটা ওর মধ্যে দেখিনি। তা সে স্কুলে পরীক্ষা থাকলেও ওর মনোভাব বদলাত না। সেই টেনশনহীন। ছোট থেকেই ভয়ডরহীন ছিল ও।’’ এই ‘ভয়ডরহীন’ ক্রিকেটই এখন অস্ত্র হার্দিকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy