হিমা দাস
হিমা দাস। এক সপ্তাহও হয়নি অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটারের দৌড়ে সোনা জিতে জাতে তুলেছেন দেশকে। অথচ এখন তাঁরই জাতের খোঁজে তোলপাড় গুগল।
ট্রেন্ড বলছে, ‘হিমা দাস’ লিখলেই গুগল সার্চ অপশনে প্রথমে আসছে তাঁর ‘কাস্ট’। অর্থাৎ অ্যাথলিট হিমার এই পরিচয়টা জানতেই সব চেয়ে বেশি আগ্রহী তাঁর প্রিয় দেশবাসী। গুগল বলছে, এই তল্লাশি-তালিকায় শীর্ষে হিমারই রাজ্য অসম। ঠিক তার পরেই অরুণাচলপ্রদেশ। পিছিয়ে নেই বাকিরাও।
অসমের ধানি জমি থেকে দৌড় শুরু করা এই হিমা কিন্তু ফিনল্যান্ডের ফিনিশিং ট্র্যাক ছুঁয়েই পাগলের মতো খুঁজছিলেন জাতীয় পতাকাটাকে। আঁক়ড়ে ধরেছিলেন তেরঙা, আর তাঁর চোখ বেয়ে দু’গালে মুক্তোর মতো চিকচিক করছিল জল।
গুগল সূত্রের খবর, হিমার পদক জয়ের দিন থেকেই তাঁর জাতের খোঁজ নিতে শুরু করেছে জাতি।
ঠিক যেমনটা হয়েছিল, রিয়ো অলিম্পিক্সে পদকজয়ী ব্যাডমিন্ডন তারকা পি ভি সিন্ধুর ক্ষেত্রে। বিষয়টি জানার পরে একে ‘দুঃখজনক’ বলে সমাজতত্ত্ববিদ আন্দ্রে বেতেই-এর মত, ‘‘আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এটা তেমন অস্বাভাবিক নয়। কোটা-ই তো কাস্ট-কে বাঁচিয়ে রেখেছে। সংরক্ষণ ব্যবস্থা আছে বলেই জাতপাত নিয়ে আমাদের এত মাথাব্যথা। হিমার বিষয়টা আলাদা, নিশ্চিত নিন্দনীয়। কিন্তু পিছিয়ে পড়া জনজাতি হওয়ার কারণেই কে কতটা সুবিধা পেল, তা জানার আগ্রহ এখনও রয়ে গিয়েছে। এটাই বাস্তব।’’
দিল্লি থেকে ফোনে নেটিজেনদের এই প্রবণতাকে স্পষ্টতই ‘অভদ্রতা’ বললেন সমাজতত্ত্ববিদ আশিস নন্দী। তবে তাঁরও বক্তব্য, ‘‘এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কৃতী মানুষের ‘কমিউনিটি লোকেশন’ অনেকেই জানতে চান। জানতে চান, তিনি কোন আর্থ-সামাজিক পরিবেশ থেকে উঠে এসেছেন। এই যেমন ঘটনাচক্রে বাঙালির সঙ্গে অলস তকমা জুড়ে গিয়েছে। হিমার জাতি-পরিচয় জানতে চেয়ে নেটিজেনরা বোধ হয় সেটাও যাচাই করে নিতে চাইছে।’’
অসমের নগাঁও জেলার ধিঙে, কান্দুলিমারি গ্রামে দাদার সঙ্গে ফুটবল পেটাতে যেতেন হিমা। গরু চরে বেড়ানো অসমান সেই মাঠ আজও কান্দুলিমারির একমাত্র সম্বল। মঙ্গলবার সেই মাঠের
উন্নয়নের জন্য জেলাশাসককে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। হিমার বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা
রঞ্জিত ও মা জুনালি দাসকে অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী। তুলে দেন অভিনন্দনপত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy