আই লিগের সেরা ডিফেন্ডার কালোন পিয়ারলেসের অন্যতম ভরসা। ছবি: নিজস্ব চিত্র।
মহমেডান স্পোর্টিং-এর ঝড় সামলাতে তৈরি পিয়ারলেসের ডিফেন্ডার ভারনি কালোন। নেরোকার জার্সিতে আই লিগের সেরা ডিফেন্ডার হয়েছেন আনসুমানা ক্রোমার দেশের এই ডিফেন্ডার। ইতিমধ্যেই কলকাতা লিগে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন তিনি।
ইস্টবেঙ্গল ও ভবানীপুরের বিরুদ্ধে ম্যাচের সেরা হয়েছেন কালোন। লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বিকেলে আনন্দবাজারকে বুক ঠুকে পিয়ারলেসের ডিফেন্ডার বললেন, ‘‘সোমবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। মহমেডানের থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে নিতে পারলে ইতিহাস তৈরি করার দিকে আমরা আরও এক ধাপ এগিয়ে যাব। আমরা প্রস্তুত।’’
‘মিনি ডার্বি’তে সাদা-কালো সুনামিতে উড়ে গিয়েছিল মোহনবাগান। শুরু থেকেই করিম ওমোলজা, তীর্থঙ্কর সরকাররা প্রচণ্ড গতিতে আক্রমণ তুলে এনেছিলেন মোহনবাগানের পেনাল্টি বক্সে। তাঁদের দৌরাত্ম্যে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে মোহনবাগানের রক্ষণ। সোমবার শুরু থেকেই আক্রমণের রাস্তা নিতে পারে সাদা-কালো শিবির। আক্রমণই যে রক্ষণের সেরা অস্ত্র, তা তো সবারই জানা। মহমেডান স্পোর্টিংয়ের আক্রমণ বুক চিতিয়ে আটকানোর জন্য তৈরি কালোন। চোয়াল শক্ত করে তিনি বলছেন, ‘‘মহমেডান শক্তিশালী দল। কোনও সন্দেহই নেই। তবে আমি ঘাবড়াচ্ছি না। এর থেকেও কঠিন ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। নিজের ক্ষমতার উপরে আমার বিশ্বাস রয়েছে।’’
সোমবারের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে সবাই। লিগ তালিকার যা পরিস্থিতি তাতে শীর্ষে পিয়ারলেস। জহর দাসের ছেলেদের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে ইস্টবেঙ্গল। মহমেডান রয়েছে তিন নম্বরে। মোহনবাগানকে লিগ জয়ের দৌড় থেকে ছিটকে দেওয়ার পরে লিগের গন্ধ পেতে শুরু করেছে মহমেডানও। তাদের সমর্থকরাও প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটাবেন সোমবার। সমর্থকরাই তো দীপেন্দুর দলের দ্বাদশ ব্যক্তি। এই সমর্থন তো মহমেডান স্পোর্টিং মাঠে পাবেন না পিয়ারলেসের ফুটবলাররা। কালোন বলছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল-ম্যাচে ওদের মাঠে কী হল? ওদের সমর্থকরা মারাত্মক রেগে গিয়ে গ্যালারি থেকে বোতলও ছুড়ছিলেন। সোমবার মহমেডানের জন্যই সমর্থন করবেন ওদের সমর্থকরা। তাও আমরা জানি। মাঠ খারাপ নিয়ে অনেকেই হাহুতাশ করছেন। আফ্রিকার মাঠও খুব খারাপ। মাঠের পরিস্থিতি, ভক্তদের সমর্থন নিয়ে আমি একদমই ভাবছি না। ছেলেদের একটা কথাই বলেছি, নিজের উপরে বিশ্বাস রাখো। মাঠে নেমে নিজের সেরাটা উজা়ড় করে দাও।’’ কালোনের মন্ত্রে উদ্দীপ্ত হচ্ছেন সতীর্থ মনোতোষ চাকলাদার, অভিনব চাকলাদার, জিতেন মূর্মূরা।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আনসুমানা ক্রোমাকে মাঠের বাইরে রেখেই নামছে পিয়ারলেস। অনেকেই মনে করছেন, কালোনের দলের আক্রমণভাগে রক্তাল্পতা রয়েছে। ক্রোমার দেশের ডিফেন্ডার বলছেন, ‘‘ক্রোমা দারুণ প্লেয়ার, এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহই নেই। কলকাতা লিগে দারুণ খেলেছে। ক্রোমা আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আমাদের উজ্জীবিত করে ও। দলটাকে উৎসাহ দেয়। খারাপ সময়ের জন্য প্রত্যেক মানুষকেই তৈরি থাকতে হয়। ক্রোমা দলে নেই বলে আমরা চাপ নিচ্ছি না। ম্যাচটা জিতে আমরা ক্রোমাকেই উৎসর্গ করতে চাই। আমাদের দলে রয়েছে অ্যান্টনি উলফ। আশা করি, ক্রোমার অভাব ও অনুভব করতে দেবে না।’’
এত কিছুর পরেও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত কালোনের মতো ফুটবলারদের। এ বার প্লেয়ার ট্রান্সফারের নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। সেই নিয়ম অনুযায়ী জানুয়ারির আগে কোনও ফুটবলার আর সই করতে পারবেন না কোনও ক্লাবে। পিয়ারলেস রক্ষণের ‘জিব্রাল্টার রক’ বলছেন, ‘‘অনেকের মুখে কলকাতা লিগের কথা শুনেছিলাম। কলকাতা লিগ খেলার ইচ্ছা ছিল। তাই পিয়ারলেসের প্রস্তাব পেয়ে চলে আসি। পরে যখন প্লেয়ার ট্রান্সফারের নিয়মের কথা শুনি আমি অবাক হয়ে যাই। পিয়ারলেস ছেড়ে যাওয়ার জন্য কর্তাদের কাছে ঘ্যানঘ্যান করতে পারতাম। কিন্তু, আমি তো পুরোদস্তুর পেশাদার ফুটবলার। নিজের কেরিয়ার সুরক্ষিত করার জন্য চুক্তি ভেঙে যেতে চাইনি। পিয়ারলেসের হয়ে যুদ্ধটা জিততে চাই।’’
যুদ্ধে নামার আগে আত্মবিশ্বাসী শোনায় ভারনি কালোনকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy