দুরন্ত: সেই ক্যাচ। শূন্যে শরীর ছুড়ে বল তালুবন্দি স্টোকসের। টুইটার
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই ১০৪ রানে জয়। ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ওঠার পরে উচ্ছ্বসিত ইংল্যান্ড শিবির। দলের অধিনায়ক অইন মর্গ্যান খেলা শেষে বলেই দিলেন, ‘‘দিনটা আজ আমাদের ছিল। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং—তিন বিভাগেই দুরন্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছে ছেলেরা। আশা করছি, গোটা বিশ্বকাপে এ ভাবেই খেলে যাবে দল।’’
ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে করা ৩১১ রান তাড়া করতে নেমে ৩৪.১ ওভারে আদিল রশিদের বলে দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দাইল ফেহলুকওয়েও-এর ক্যাচ মিড উইকেটে লাফিয়ে ২.২ মিটার (প্রায় ৭ ফুট তিন ইঞ্চি) উপর থেকে ডান হাতে ছোঁ মেরে তুলে নেন বেন স্টোকস। খেলার পরে স্টোকসের সেই দুরন্ত ক্যাচ নিয়েই শুরু হয়েছে প্রশংসার বন্যা। বলা হচ্ছে, বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ক্যাচ। ইংল্যান্ডের বড় ব্যবধানে জয়ের দিনে প্রধান আকর্ষণ স্টোকসের এই ক্যাচ। যা সর্বকালের সেরা ক্যাচ কি না, তর্কও উঠে গেল।
ক্যাচ দেখে বিস্ফারিত চোখে দু’হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢাকার ছবি পোস্ট করে স্টুয়ার্ট ব্রড টুইট করেন, ‘‘লাউঞ্জে দাঁড়িয়ে ক্যাচটা দেখার পরে এটাই আমার প্রতিক্রিয়া।’’ প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার ইয়ান বিশপের টুইট, ‘‘সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্যাচ ধরতে দেখলাম বেন স্টোকসকে। দুর্দান্ত অ্যাথলিট।’’ শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন ক্রিকেটার রাসেল আর্নল্ডও বলছেন, ‘‘দুর্দান্ত! অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরল বেন স্টোকস। অন্যতম সেরা ক্যাচ। এগুলো অনুশীলন করা যায় না।’’ মাইকেল ভনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ক্রিকেট ম্যাচে সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে অলরাউন্ডারদের জ্বলে ওঠার উপরে। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে বেন স্টোকসের এই পারফরম্যান্স দলকে উজ্জীবিত করবে।’’ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন ক্রিকেটার হার্সেল গিবসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দুর্দান্ত ক্যাচ।’’ প্রাক্তন ইংল্যান্ড ক্রিকেটার গ্রেম সোয়ান বলছেন, ‘‘অবিশ্বাস্য! জীবনের সেরা ক্যাচ নিতে দেখলাম স্টোকসকে।’’ প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বিষাণ সিংহ বেদীও বলছেন, ‘‘শূন্যে লাফিয়ে বিষ্ময় ক্যাচ ধরল বেন স্টোকস।’’
ম্যাচ জিতে সেই ক্যাচের সম্পর্কে ইংল্যান্ড অধিনায়ক মর্গ্যানও বলে যান, ‘‘ব্যাটে, বলে, ফিল্ডিংয়ে দুরন্ত ছন্দ দেখাল স্টোকস। প্রকৃত ম্যাচ উইনার। বিশেষ করে ফেহলুকওয়েও-এর ক্যাচটা! অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে বলটা তালুবন্দি করল স্টোকস। দলে এ রকম একজন ম্যাচ উইনার থাকলে দলের বাকিরাও সেই পারফরম্যান্স দেখে অনুপ্রেরণা পাবে।’’
ব্যাট হাতে ৭৯ বলে ৮৯ রান। বল হাতে ২.৫ ওভারে ১২ রানে ২ উইকেট। তার পরে এই দুরন্ত ক্যাচ। খেলার পরে স্টোকস এই ক্যাচ সম্পর্কে বলছেন, ‘‘বলটা যখন আমার দিকে আসছিল, তখন যেখানে আমার থাকার কথা তার চেয়ে এগিয়ে গিয়েছিলাম। তাই প্রথমে সেকেন্ডের ভগ্নাংশে একটু চিন্তিত হয়ে পড়ি। কিন্তু দলে আমার একটা ডাক নাম রয়েছে ‘দ্য ক্ল’। হয়তো সেই কারণেই সঠিক জায়গায় না দাঁড়িয়েও ক্যাচটা তালুবন্দি করতে পেরেছি।’’
ইংল্যান্ড অধিনায়ক মর্গ্যান বলছেন, ‘‘যে কোনও ম্যাচ জিতলেই ভাল লাগে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এ ভাবে জয় পেলে তার তৃপ্তি আলাদা। আমরা যে পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম, সে রকম উইকেট ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও ছেলেরা যে রকম পরিণতবোধ ও ঝকঝকে ক্রিকেট খেলল সেটা প্রমাণ করে, গত দু’বছরে আমরা কতটা উন্নতি করেছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মন্থর পিচে জোফ্রা আর্চারও নিখুঁত নিশানায় গতিতে দুর্দান্ত বল করে গেল। প্রতি দিন উন্নতি করছে জোফ্রা। যার সুবিধা পাচ্ছে ইংল্যান্ড।’’ মন্থর পিচের কথা উল্লেখ করেছেন বেন স্টোকসও। তিনি বলছেন, ‘‘এই ধরনের পিচে ব্যাট করতে হত বুদ্ধি করে। সে ভাবেই আমাদের লক্ষ্য ছিল ৩০০ থেকে ৩১০-এর মধ্যে রানটা রাখা। সেই মানসিকতা নিয়েই ইনিংস এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি।’’
ম্যাচ হেরে হতাশ দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি। বলছেন, ‘‘ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং—তিন বিভাগেই নজর কাড়তে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। শুরুতে ইমরান তাহিরকে বল করতে আনার পরিকল্পনা খেটেও গিয়েছিল। কিন্তু ইংল্যান্ডের ব্যাটিং আজ দারুণ হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy