Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কোহালিদের ট্রেনিং গুরুর প্রাপ্তি শামি

শঙ্করের হাতে পড়েই চোটপ্রবণ মহম্মদ শামির ফিটনেস বদলে গিয়ে। গত মরসুম কোনও টেস্ট ম্যাচেই চোটের কারণে বসতে হয়নি ভারতীয় দলের সদস্য বাংলার এই পেসারকে।

মহড়া: আফগান ম্যাচের প্রস্তুতিতে মগ্ন শামি। এপি

মহড়া: আফগান ম্যাচের প্রস্তুতিতে মগ্ন শামি। এপি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০৫:৩৫
Share: Save:

কয়েক দশক আগে জুনিয়র ভারতীয় অ্যাথলেটিক দলের সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনিই ভারতীয় ক্রিকেট দলের স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিং কোচ। গত বিশ্বকাপের পর থেকেই বিরাট কোহালির দলকে তিনি নিয়ে গিয়েছেন ফিটনেসের চরম শিখরে। সেই শঙ্কর ভাসু মনে করছেন, একদম পূর্ণ ম্যাচ ফিট মহম্মদ শামিকে দীর্ঘদিন পাওয়া তাঁর কাছে একটা বিশেষ প্রাপ্তি।

৫০ বছর বয়সি ভারতীয় দলের এই স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিং কোচের কথায়, ‘‘বিরাট কোহালির মতো ফিটনেস সচেতন ক্রিকেটার যে কোনও কোচের কাছেই একটা গর্বের বিষয়। সারা বছর ধরেই ওর অনুশীলনে কোনও খামতি নেই। ও জানে ফিটনেস ধরে রাখার গুরুত্ব। যে কোনও একটি বিষয় নিয়ে ওর প্রচুর প্রশ্ন। কিন্তু সেই বিষয়ে এক বার ঠিক উত্তর পেয়ে গেলে সেই অনুশীলন ও করেই যাবে।’’

শঙ্করের হাতে পড়েই চোটপ্রবণ মহম্মদ শামির ফিটনেস বদলে গিয়ে। গত মরসুম কোনও টেস্ট ম্যাচেই চোটের কারণে বসতে হয়নি ভারতীয় দলের সদস্য বাংলার এই পেসারকে। যে প্রসঙ্গ উঠলে সম্মতিসূচক মাথা নেড়ে হাসতে হাসতে শঙ্কর বলেন, ‘‘এক বছর আগেও ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি শামি। সেই সময়ে ব্যক্তিগত জীবনেও সমস্যায় ছিল ও। কিন্তু ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ করে দলে ফেরার পরে ওকে নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠেনি।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘শামিকে বলে দিয়েছিলাম, ২০ দিন কঠোর অনুশীলনের করার পরে ফের আগের মতো জীবনযাপন করলে ম্যাচ ফিট থাকা সম্ভব নয়। ধারাবাহিক ভাবে অনুশীলন করে যেতে হবে। শামি তার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল। এখন অনুশীলনই ওর জীবন। চোট আর কাবু করতে পারছে না শামিকে।’’

শঙ্কর আরও বলছেন, ‘‘শামি মাংস খায়। কিন্তু ভাজাভুজি খাওয়া একদম বন্ধ করে দিয়েছে। দিনের প্রথম ভাগে ও বেশি খায় না। কিন্তু দিনের দ্বিতীয় ভাগে ও বেশি খাবার গ্রহণ করে। এ ভাবে নিয়ম মেনে চলে ও কিন্তু নিজের শরীরের মেদ একদম ঝরিয়ে ফেলেছে।’’

শামির পরেই শঙ্কর উল্লেখ করছেন যশপ্রীত বুমরার কথা। বলছেন, ‘‘বুমরা যখন প্রথম ভারতীয় দলে আসে, তখন ও এতটা ফিট ছিল না। কিন্তু এই মুহূর্তে ও ফিটনেসের শিখরে রয়েছে ঠিক খাদ্যাভাস, পর্যাপ্ত ঘুম ও কঠোর পরিশ্রম করে। তার ফলটা ও পেয়েছে হাতেনাতে। আগে ১৩৭ কিমি বেগে বল করত। সেই বুমরার বলের গতি এখন ১৪৭ কিমি।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘একই কথা প্রযোজ্য ভুবনেশ্বর সম্পর্কে। এখন ওর বলের গতি বেড়ে হয়েছে ১৪০ কিমি।’’ শঙ্কর উৎফুল্ল এই কারণেই যে বড় কোনও চোট-আঘাতে কাবু হয়ে পড়েনি বিরাট কোহালির ভারতীয় দলের পেস ব্যাটারি।

পাশাপাশি তিনি জানিয়ে দিচ্ছেন, অনুশীলনের মতো ভারতীয় দলের প্রত্যেকের খাদ্যাভ্যাসও আলাদা। ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে মিথ, দলের প্রতিটি ক্রিকেটারই নাকি অধিনায়ক বিরাট কোহালির মতো সিদ্ধ খাবার খান। এ দিন এ সম্পর্কে ভারতীয় দলের এই স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিং কোচ বলেন, ‘‘বিরাট ও দীনেশ কার্তিক ওজন নিয়ে অনুশীলন করে। বুমরা ও কে এল রাহুল আবার জাম্পিং ড্রিলগুলো বেশি করতে চায়। একে বলে প্লায়োমেট্রিক ব্যায়াম। এতে গতি ও শক্তি বাড়ে।’’ যোগ করেন, ‘‘বিজয় শঙ্কর ভাত খেলেও একজন ভাল অ্যাথলিট। ও এমন কিছু খাবার পছন্দ করে যেগুলি না খেলেই ভাল। কিন্তু অনুশীলন করে ও ঠিক নিজেকে ফিট রেখে দিয়েছে।’’ রসিকতা করে বলেন, ‘‘হার্দিক পাণ্ড্য পারলে একটা হাতি আস্ত খেয়ে নিতে পারবে। কিন্তু তাও ওর মেদ বাড়ে না। ফিটনেস অনুশীলন করে ও নিজেকে ফিট রেখে দিয়েছে। আসলে গতি ও শক্তি বাড়ানোর অনুশীলন করতে হবে আধুনিক ক্রিকেটে খাপ খাওয়াতে হলে। শুধু জিমে গিয়ে অনুশীলন করলে হবে না। এই ভারতীয় দল সেটাই করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE