Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হাবাস নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করলে বলব পুণে যান

তাঁকে বলা হচ্ছে আটলেটিকো দে কলকাতার ‘পিভট’। তিনি গতি বাড়ালে টিমের গতি বাড়ছে। উইং দিয়ে আক্রমণের জন্য কোচের সেরা অস্ত্র। জন আব্রাহামের টিমকে হারিয়ে আসার পরের দিন দীপাবলির দুপুরে সমীঘ দ্যুতি আনন্দবাজারের সামনে। একান্তে।প্রশ্ন: দীপাবলির আগের দিন নর্থ-ইস্টের বিরুদ্ধে এ রকম চমকপ্রদ জয়। আপনার টিমেও তো অন্ধকার কাটিয়ে আলো এল? দ্যুতি: শুধু আমরা কেন, কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের কাছেও তো দীপাবলিটা স্পেশ্যাল হয়ে গেল। উৎসবের দিনে কিছুটা হলেও আমরা

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

তানিয়া রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২০
Share: Save:

প্রশ্ন: দীপাবলির আগের দিন নর্থ-ইস্টের বিরুদ্ধে এ রকম চমকপ্রদ জয়। আপনার টিমেও তো অন্ধকার কাটিয়ে আলো এল?

দ্যুতি: শুধু আমরা কেন, কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের কাছেও তো দীপাবলিটা স্পেশ্যাল হয়ে গেল। উৎসবের দিনে কিছুটা হলেও আমরা আলো এনে দিতে পেরেছি শহরকে, ভেবেই ভাল লাগছে। হ্যাপি ধী-পা-পা-ব-লি (কেটে কেটে ইংরেজিতে)।

প্র: আপনাকেও দীপাবলির অনেক শুভেচ্ছা। আপনি দেখছি পুরোপুরি ভারতীয় হয়ে গিয়েছেন। সব অনুষ্ঠান সম্পর্কেই জানেন?

দ্যুতি: গত বছর থেকে আইএসএলের জন্য কলকাতায় আছি। এখানকার ফেস্টিভ সিজনটা জানার চেষ্টা করছি। সুযোগ পেলে উপভোগও করি। গত বছর এই দিনে ম্যাচ খেলতে দিল্লি গিয়েছিলাম। প্রচুর বাজি ফাটিয়েছিলাম। মজা হয়েছিল।

প্র: কলকাতার কোন জিনিসটা সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে?

দ্যুতি: এখানকার মানুষ। অদ্ভুত একটা বাঁধনে খুব তাড়াতাড়ি জড়িয়ে ফেলে। ফুটবলের জন্য এই শহরের উন্মাদনা আমাকে প্রথম দিন থেকেই অবাক করেছে। ফুটবল ঘিরে এখানে এত আবেগ! না আসলে জানতেই পারতাম না। ভারতীয় ফুটবলে অনেক প্রতিভা রয়েছে। শুধু একটু মেজেঘষে ব্যবহার করতে পারলেই দেখবেন বিশ্ব ফুটবলে কোথায় উঠে আসে ভারত।

প্র: আইএসএলে আসার আগে ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে ধারণা ছিল?

দ্যুতি: ধারণা পুরোপুরি ছিল না। তবে কিছুটা শুনেছিলাম। খেলতে আসার আগে ভাল করে খোঁজখবর নিয়েছিলাম। ইন্টারনেটে পড়াশুনা করেছিলাম। কিন্তু সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের আমি আগে থেকেই খুব ভাল করে চিনি। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও ক্রিকেট খুব জনপ্রিয়। আমার কাছে ক্রিকেটের মারাদোনা হল সচিন।

প্র: আপনি নিজে কখনও ক্রিকেট খেলেছেন?

দ্যুতি: না, কখনও ক্রিকেট ব্যাট হাতে ধরিনি। মা-ঠাকুমার কাছে গল্প শুনেছি, যখন থেকে হাঁটতে শিখেছি তখন থেকেই নাকি ফুটবল পেলেই তাতে লাথি মারতাম। ফুটবল আমার জীবনের একমাত্র প্যাশান। পড়ার বই ফেলে ফুটবল নিয়ে খেলে বেড়াতাম। বাড়ির লোকও কখনও বারণ করেনি। বরং উৎসাহ দিয়েছে সব সময়।

প্র: আপনার পরিবারের আর কেউ ফুটবল খেলেন?

দ্যুতি: আমার পরিবারে একমাত্র ছেলে আমি। আমার উপরে দুই দিদি। ওদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আমার বাবা যখন মাকে রেখে চলে যান, তখন আমার বয়স দু’আড়াই বছর হবে। মা আর দিদাই বরাবর আমাকে ফুটবলার হওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। আমাকে আজ যে ক’জন চেনে, সবটাই মা আর দিদার জন্য।

প্র: সমীঘ দ্যুতি গত বছর থেকে ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলে চলেছেন। গোল করেছেন। কিন্তু হিউম বা পস্টিগারাই প্রচারের আলোয়। খারাপ লাগে না?

দ্যুতি: আরে ধুর! এ সব নিয়ে আমি ভাবি না। নিজের কাজটা ঠিকঠাক করতে পারলেই আমি খুশি। আমার একমাত্র ভাবনা এটিকে-কে চ্যাম্পিয়ন করা। গত বছর পারিনি। এ বছর ফের চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।

প্র: মুম্বইয়ের কাছে হারের পর নর্থ-ইস্টের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট। আবার এক নম্বরে।

দ্যুতি: জানেন, এই তিন পয়েন্ট টিমের আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা শীর্ষে উঠে এসেছি। এ বার এই প্রথম আমরা এক নম্বরে। মুম্বইয়ের কাছে হারটা কেউই মেনে নিতে পারছিলাম না। গুয়াহাটিতে জেতার জন্য সবাই মরিয়া ছিলাম। সবচেয়ে বড় কথা, পস্টিগা চোট সারিয়ে ফিরেই গোল পেয়েছে। যেটা পুরো দলকে স্বস্তি এনে দিয়েছে।

প্র: নর্থ-ইস্টের বিরুদ্ধে পস্টিগাই ব়ড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছিলেন!

দ্যুতি: ও বিশ্বমানের ফুটবলার। পস্টিগা ভাল করে জানে, কখন কী করতে হবে। ও ফিরে আসায় দলের শক্তি অনেক বেড়েছে।

প্র: পরের ম্যাচ হাবাসের টিমের বিরুদ্ধে। বাড়তি মোটিভেশন কাজ করছে?

দ্যুতি: পুণে ভাল টিম। ভাল খেলছে। অ্যাওয়ে ম্যাচে আমরা ওদের মুখোমুখি হব। ওই ম্যাচে লড়াইটা কিন্তু সহজ হবে না।

প্র: পুণে লিগ তালিকার নীচের দিকে রয়েছে। তা হলে পুণেকে এত গুরুত্ব দিচ্ছেন কেন? হাবাসের জন্য?

দ্যুতি: আইএসএলে এই মুহূর্তে কেউ এগিয়ে বা পিছিয়ে নেই। একটা-দু’টো ম্যাচেই পুরো পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। আপনি পুণের কথা বলছেন, আমি বলছি গোয়ার কথা। যারা এই মুহূর্তে আইএসএলে লাস্ট বয়। পরপর দুটো ম্যাচ ওদের জিততে দিন, দেখবেন কোথায় পৌঁছে গিয়েছে। এ বার লড়াইটা খুব কঠিন। আগে থেকে বলা যাবে না, কারা শেষ চারে যাবে। বা এই টিম ফেভারিট।

প্র: আপনি প্রথম বছর এসেই হাবাসের কোচিংয়ে খেলেছেন। উনিই আপনাকে এখানে এনেছেন। এখন খেলছেন মলিনার কোচিংয়ে। দু’জনের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

দ্যুতি: (রেগে গিয়ে) দেখুন হাবাস নিয়ে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। উনি পুণের কোচ। ওঁকে নিয়ে কিছুই বলতে চাই না। ওঁর সম্পর্কে জানতে হলে আপনি পুণে যান।

প্র: তা হলে মলিনা নিয়েই বলুন।

দ্যুতি: মলিনা খেলা নিয়ে ভীষণ সিরিয়াস। তবে আমাদের উজ্জীবিত করতে মাঝে মাঝে ঠাট্টাও করেন। সহজে মেজাজ হারান না। ভুলত্রুটি হাতে ধরে বুঝিয়ে দেন।

প্র: এ বার এটিকে-র চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কতটা সম্ভাবনা দেখছেন?

দ্যুতি: আমি কেন, টিমের সবাই চায় চ্যাম্পিয়ন হতে। কিন্তু মুখে বললে হবে না। ম্যাচ জিততে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ATK ISL Sameehg Doutie
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE