Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

বিরিয়ানি ফেলে ইনজির ভাইপোর নজর এখন ফিটনেসে

বছর খানেক আগেও তিনি বিরিয়ানির প্রচণ্ড ভক্ত ছিলেন। রুটি-চাউলও সমানে চলত। কিন্তু তার পর থেকে নিজেকে বদলে নিয়েছেন পুরোপুরি। বিরিয়ানি ছুঁয়েও দেখেন না। প্রোটিন শেক আর কঠোর ডায়েটের মধ্যে আছেন।

প্রত্যয়ী: পাকিস্তানের ভরসা এখন ইমাম উল হক। ফাইল চিত্র

প্রত্যয়ী: পাকিস্তানের ভরসা এখন ইমাম উল হক। ফাইল চিত্র

কোশিক দাশ
দুবাই শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১৯
Share: Save:

তিনি তাঁর কাকাকে মহান ক্রিকেটার বলে মানেন, কিন্তু কাকার চেয়ে ফিটনেসটা ভাল করার জন্য বদ্ধপরিকর। শুক্রবারের আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৮০ রান করে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ স্কোরার তিনি। ম্যাচটা যখন প্রায় ধরে নিয়েছিলেন, তখনই আউট হয়ে যান। কী ভাবে? না, রান আউট!

ইনি হলেন ইনজামাম উল হকের ভাইপো ইমাম উল হক। প্রথম দিকে বেশ স্বাস্থ্যবানই ছিলেন! ফিটনেসের মানও যে সুউচ্চ অট্টালিকার মতো ছিল, এমন নয়। কিন্তু সে সব দূরে ঠেলে তিনি এখন খুব ফিট। তা, রান আউট হলেও। ইমামের এই পরিবর্তনের নেপথ্য কাহিনিটা পাক শিবির থেকেই পাওয়া যাচ্ছে।

বছর খানেক আগেও তিনি বিরিয়ানির প্রচণ্ড ভক্ত ছিলেন। রুটি-চাউলও সমানে চলত। কিন্তু তার পর থেকে নিজেকে বদলে নিয়েছেন পুরোপুরি। বিরিয়ানি ছুঁয়েও দেখেন না। প্রোটিন শেক আর কঠোর ডায়েটের মধ্যে আছেন। এও শোনা যাচ্ছে, শুরুর দিকে তাঁর ফ্যাটের পরিমাপ ছিল ৯১। সেটা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৫৪। ইমামের ইয়ো ইয়ো টেস্টের ফল কী জানেন? উত্তরটা প্রশ্নকর্তাই দিয়ে দিলেন, ১৯.৫!

যাঁরা ইমামকে কাছ থেকে দেখেছেন, তাঁরা বলছেন, এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে নাছোড় মনোভাব আর জেদের জন্য। ইমাম নিজেকে বদলে ফেলার জন্য বদ্ধপরিকর। তিনি আরও একটা ভুল শুধরে নিতে মরিয়া। কী সেই ভুল? পাকিস্তানের মিডিয়া ম্যানেজারের মাধ্যমে ইমামের যে প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল, তা এ রকম: ‘‘ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে আমি খুব খারাপ শট খেলে আউট হয়েছিলাম। তাতে আমি যেমন হতাশ হয়েছিলাম, বাকিদেরও হতাশ করেছিলাম। তা ছাড়া ও রকম ব্যাটিং করা আমার ধরন নয়। সেই ভুলটা আর করতে চাই না।’’ আফগানিস্তান ম্যাচে যে তিনি ভুল অনেকটা শুধরে নিতে পেরেছিলেন, তা বলছিলেন ইমাম। ‘‘আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি টিম ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ দেব। আফগান ম্যাচে ঠিক করে নিয়েছিলাম, উইকেটে থাকব। সেটাই করেছি।’’

সামনে এ বার ভারত। আগের ম্যাচে খারাপ ভাবে হারতে হয়েছে। এ বার কী ভাবছেন? ইমাম বলছেন, ‘‘আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একটা রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতেছি। এতে টিমের পরিবেশ ভাল হয়ে যায়। ইতিবাচক একটা মনোভাব দেখা যায় দলের মধ্যে। আমরা রবিবারের ম্যাচটাও জিতব।’’

শোয়েব আখতার আগের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সময় ভিআইপি জোনে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘‘এই পাকিস্তান দলটায় শোয়েব মালিক এবং বাবর আজম ছাড়া সে রকম উঁচু মানের ব্যাটসম্যান নেই।’’ ইমাম তাঁকে কিছুটা ভুল প্রমাণ করেছেন। পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ যে আফগানিস্তান সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘বিশ্বের সেরা স্পিন আক্রমণ,’’ সেই আফগান স্পিনারদের অনায়াসে সামলেছেন। ইনজামামের ভাইপো খুব ভালবাসেন বাবর আজমের সঙ্গে ব্যাট করতে। বলছেন, ‘‘বাবর আমার সেরা বন্ধু। আমরা দু’জনে দু’জনের খেলা খুব ভাল বুঝি। তা-ই ওর সঙ্গে আমার জুটিটা জমে ভাল।’’

বিপক্ষ বোলিং আক্রমণ ভয়ঙ্কর হলেও কুছ পরোয়া নেই। কিন্তু পাকিস্তানের এই তরুণ ওপেনার ভয় পান প্রচারমাধ্যমকে। যাদের সমালোচনা মাঝে মাঝে তাঁর রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। যে জন্য খবরের কাগজ, টুইটার বা অন্য কোনও সোশ্যাল মিডিয়া সাইট থেকে দূরে থাকেন। এশিয়া কাপে নায়ক হয়ে উঠতে পারলে হয়তো এই অভ্যাসটা বদলে যাবে ইমাম উল হকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE