সোমবার সকালে কলকাতা বিমানবন্দরে ইডেন জয়ের নায়ক কার্তিক, ক্রুণাল। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ইডেনের মতোই ব্যাটসম্যানদের জন্য আতঙ্ক নিয়ে উপস্থিত হতে পারে লখনউয়ের বাইশ গজও। মঙ্গলবার ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ নবাবদের শহরে। ২৪ বছর পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরছে সেখানে। নতুন স্টেডিয়ামের উদ্বোধন হতে চলেছে এই ম্যাচ দিয়েই। কিন্তু নতুন স্টেডিয়ামের পিচে যে ব্যাটসম্যানেরা খুব একটা সুখের সময় কাটাতে পারবেন না, তা আগাম জানিয়ে দিলেন সেখানকার অন্যতম পিচ প্রস্তুতকারক। তাঁর মতে, অল্প রানের খেলা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি মঙ্গলবার।
লখনউয়ের স্থানীয় এক পিচ প্রস্তুতকারক জানিয়েছেন, প্রথমে ব্যাট করে যে দল ১৩০ রানের গণ্ডি পার করে ফেলতে পারবে, তারাই জিতবে। তিনি বলেন, ‘‘ম্যাচে যে বেশি রান হবে না, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। পিচে লম্বা লম্বা শুকনো ঘাস রাখা হয়েছে। এখনই বেশ কিছু ফাটল দেখা গিয়েছে। আমার মতে, মন্থর গতির উইকেটই হবে। বলা যায়, স্পিনারদের জন্য আদর্শ উইকেট। যে দলের স্পিনারেরা ভাল বল করবে, তারাই জিতবে।’’
ভারতীয় দলে চায়নাম্যান কুলদীপ যাদবের জন্য এই মন্তব্য সুখবর হলেও, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের জন্য জন্য নয়। ইডেনের গতিময় উইকেটেও দারুণ বল করেছেন কুলদীপ। লখনউয়ের স্পিন-সহায়ক উইকেটে ড্যারেন ব্র্যাভোরা তাঁর রহস্যময় বোলিং উদ্ধার করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছেই। কুলদীপের পাশাপাশি উইকেটের চরিত্র দেখে যদি আজ যুজবেন্দ্র চহালকে খেলানো হয়, তা হলেও অবাক হওয়ার থাকবে না। কুলদীপ, চহাল ও ক্রুণাল পাণ্ড্য— এই স্পিনার ত্রয়ীকে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানেরা সামলাতে পারবেন বলে তাঁদের অতি বড় ভক্তরাও সম্ভবত আশা করতে পারছেন না।
আরও পড়ুন: কোহালির জন্মদিনে ধোনির বার্তা, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ অনুষ্কার
লখনউয়ে স্থানীয় পিচ প্রস্তুতকারক আরও জানিয়েছেন যে, ওড়িশার থেকে মাটি এনে এই পিচ বানানো হয়েছে। স্থানীয় মাটি দিয়ে পিচ বানানো হলে মঙ্গলবার রানের বন্যা দেখতে পেত নবাবদের শহর। তাঁর কথায়, ‘‘ওড়িশার বোলাঙ্গির থেকে মাটি আনিয়ে পিচ বানানো হয়েছে। মন্থর গতির উইকেট বানানোর জন্য এই মাটি বিখ্যাত। দু’দলের ব্যাটসম্যানকে অনেক পরিশ্রম করে রান সংগ্রহ করতে হবে। পাশাপাশি আড়াআড়ি বাউন্ডারির দৈর্ঘ্য কম নয়। বড় শট নিলেও সমস্যায় পড়তে পারে ব্যাটসম্যানেরা।’’
ভারতীয় বোর্ডের প্রধান পিচ প্রস্তুতকারক দলজিৎ সিংহকে এই পিচ গড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। শুরু থেকেই এই পিচ বানানোর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাঁর সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার তিন পিচ প্রস্তুতকারক রবীন্দ্র চৌহন, শিব কুমার ও সুরেন্দ্র।
মন্থর পিচের পাশাপাশি আরও একটি সমস্যা হয়ে উঠতে পারে— শিশির। যা আবার ব্যাটসম্যানদের সুবিধে করে দিতে পারে। মন্থর উইকেটে যতই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকুক স্পিনারদের, শিশিরে বল ভিজে গেলে তাঁরা সমস্যায় পড়বেন। এখন অনেক জায়গায় এমন শিশির পড়ছে যে, বল ভাল করে ধরতেই পারছেন না স্পিনাররা। শিশির পড়ে মন্থর হয়ে যেতে পারে আউটফিল্ডও। স্থানীয় পিচ প্রস্তুতকারকও মেনে নিচ্ছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আউটফিল্ড বেশ দ্রুতগতির। সহজেই বাউন্ডারি পেরিয়ে যাচ্ছে বল। কিন্তু উত্তর ভারতে ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে। রাতে শিশিরে ঢেকে যাবে মাঠ। তখন আউটফিল্ডও মন্থর হতে শুরু করবে। যা সমস্যা বাড়াবে ব্যাটসম্যানদের।’’
ইডেনে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বিভ্রান্তিকর পিচে পরীক্ষা দিতে হয়েছে দু’দলকে। কম রানের খেলা হয়েছে। বোলাররা বেশি সুবিধে পেয়েছেন, ব্যাটসম্যানেরা সব সময়ই ছিলেন চাপে। প্রথমে ব্যাট করে ১০৯ রানে আটকে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে সেই রান তুলতে গিয়ে দ্রুত পাঁচ উইকেট হারায় ভারত। ক্যারিবিয়ান পেসার ওশেন থমাস ঝোড়ো গতিতে বেসামাল করে দিয়েছিলেন ভারতীয় ওপেনারদের। পিচ যেমনই হোক, চাপে থাকা ভারতীয় ব্যাটিংয়ের জন্য ফের পরীক্ষা আজ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy