Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গুরুর মন্ত্র নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আজ নামছেন একতা

লিয়াকতের ছাত্রী একতা রবিবার ১৮ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে। তাঁর কোচ এখনও মজে সেই ম্যাচে।

ফর্মে: একতা বিস্ত। ফাইল চিত্র

ফর্মে: একতা বিস্ত। ফাইল চিত্র

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪০
Share: Save:

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মেয়েদের বিশ্বকাপে ঝলমলে সাফল্যের পরেও মাটিতে পা একতা বিস্তের। বুধবারের শ্রীলঙ্কা ম্যাচের আগে গুরুর কাছে ফোন করে তিনি চেয়ে নিলেন শেষ মুহূর্তের পরামর্শ।

সোমবার রাতেই সুদূর ইংল্যান্ড থেকে আলমোড়ায় তাঁর প্রথম ক্রিকেট কোচ লিয়াকত আলিকে ফোন করেছিলেন একতা। মঙ্গলবার আনন্দবাজারকে সে কথা জানিয়ে লিয়াকত বললেন, ‘‘মেয়েটা এখনও আগের মতোই সরল রয়েছে। জানতে চাইছিল স্পিন খেলতে দক্ষ শ্রীলঙ্কার হাসিনি পেরেরা, দিলানি মানোদরা-দের সমস্যায় ফেলার মন্ত্র। ওকে বলে দিয়েছি সব ঠিকঠাকই হচ্ছে। শ্রীলঙ্কানদের ব্যাকফুটে খেলা। ফ্লাইট আর স্পিডে বৈচিত্র আনতে পারলেই ওরা বিপদে পড়বে।’’

লিয়াকতের ছাত্রী একতা রবিবার ১৮ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে। তাঁর কোচ এখনও মজে সেই ম্যাচে। বলছিলেন, ‘‘২০০৩ বিশ্বকাপে আমার ঘরে বসে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখছিল। সহবাগ-সচিনের ধুন্ধুমার ব্যাটিং দেখে একতা বলেছিল, আমিও একদিন বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারাব। এ বার ইংল্যান্ড যাওয়ার আগে একতাকে সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলাম। একতা তা করে দেখাল।’’

শুধু লিয়াকতই নন। একতাকে নিজের হাতের তালুর মতো চেনেন প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচক রীতা দে। কানপুরের বাঙালি এই প্রাক্তন ক্রিকেটারও ফোন পেয়েছেন ভারতীয় দলের বাঁ হাতি এই অফস্পিনারের। বলছেন, ‘‘একতাকে বলে দিয়েছি বেশি ফ্লাইট দিবি না উপমহাদেশের টিমগুলোকে। সেটা সফল ভাবেই করেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। আশা করি, শ্রীলঙ্কা ম্যাচেও একই লাইনে বল করবে ও।’’

আরও পড়ুন:

লঙ্কা বধের লক্ষে বুধবার ডার্বিতে নামছে ভারত

একতার বাবা কুন্দন সিংহ বিস্ত প্রাক্তন সেনাকর্মী। তাঁর কথায়, ‘‘রবিবার পাকিস্তানকে যে ভাবে আমার ‘বেটি’ উড়িয়ে দিল, তার পর বাবা হিসেবে গর্ব হচ্ছে। গোটা মহল্লায় একতার জন্যই অকাল দিওয়ালি শুরু হয়ে গিয়েছিল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বিরাটদের হারের জ্বালা জুড়িয়ে গিয়েছে।’’ নিজের মেয়ে সম্পর্কে কুন্দন আরও বলছেন, ‘‘লিয়াকত স্যার আর নীতু ডেভিডের জন্যই আমার মেয়ে আজ এই জায়গায়। ওর জন্মের দু’বছর পরেই সেনার চাকরি থেকে অবসর নিই। সংসারে স্বাচ্ছন্দ্য ছিল না। কিন্তু একতা বদলে দিয়েছে পরিবারের ছবিটাই। আরও বদলে যাবে ছবিটা যদি মেয়ে বিশ্বকাপ-সহ ফিরে আসতে পারে।’’

মেয়েদের বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন একতা। তিন ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছেন। ইকনমি ২.৮৯।

বাড়িতে বাবা ছাড়াও মা তারা বিস্ত, দাদা বিনীত ও বোন শ্বেতার সঙ্গে পাকিস্তান ম্যাচের পরেই কথা বলেছিলেন একতা। মঙ্গলবার আর ফোন আসেনি। তা নিয়ে পরিবারে অবশ্য কোনও মনখারাপ নেই। দাদা বিনীত বলছেন, ‘‘বোন কেন ক্রিকেট খেলে তা নিয়ে এক সময় যারা মহল্লায় প্রশ্ন তুলত, আজ সকালে তারাই স্থানীয় মন্দিরে বুধবারের শ্রীলঙ্কা ম্যাচের জন্য পুজো দিচ্ছে। এর চেয়ে তৃপ্তির আর কী হতে পারে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE