ফাইনালে ওঠার উল্লাসে রশিদরা। ছবি: আইপিএল
বিদায় কেকেআর। ফাইনালের আশা শেষ নাইটদের। ইডেন গার্ডেন্সে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে ১৩ রানে হার মানল কলকাতা নাইট রাইডার্স। ২০১৬-র পর ফের একবার আইপিএল ফাইনালে শিখর ধওয়ন, কেন উইলিয়ামসনরা।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের মত হাইভোল্টেজ ম্যাচ। তার উপরে ছিল বৃষ্টির ভ্রুকুটি। ১৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে শুরু করেন দুই নাইট ওপেনার সুনীল নারিন এবং ক্রিস লিন। ১৩ বলে ২৬ রান করে আউট হন নারিন। ১৬ বলে ২২ রান করে রান আউট হয়ে যান তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা নীতীশ রানাও। ক্রিজ লিনের সঙ্গে তাঁর একটা ছোট পার্টনারশিপ শুরু করলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। চাপের ম্যাচে রান পেলেন না রবিন উথাপ্পা(২), অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক(৮)। সানরাইরার্স হায়দরাবাদের বোলিং বিক্রমের দাপটে ক্রিজ লিন(৪৮) কিছুটা লড়াই করলেও বড় রান করতে ব্যর্থ। তবে ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে যাঁর ব্যাট জ্বলে ওঠার খুবই প্রয়োজন ছিল সেই আন্দ্রে রাসেল-এর অবদান ৭ বলে ৩ রান। ছয় নম্বরে নেমে শেষ পর্যন্ত লড়লেন শুভমান গিল(৩০)।শেষ ওভারে কেকেআর-এর প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। কিন্তু শুভমান আউট হতেই সব আশা শেষ হয়ে যায় নাইটদের। শেষ পর্যন্ত কেকেআর আর ফাইনাল ম্যাচের মধ্যে ব্যবধান গিয়ে দাঁড়াল মাত্র ১৩ রান। স্বপ্নভঙ্গের আবহ নেমে এল কেকেআর ডাগ আউটে।
আজ ব্যাট হাতে ঝলসে উঠেছিল তাঁর ব্যাট। বল হাতে সেই রশিদ খানের কামালে একে একে ডাগ-আউটে ফিরে গেলেন তিন নাইট ব্যাটসম্যান। বোলিং ফিগারও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেশ ঈর্ষনীয়—৪-০-১৯-৩। ২ উইকেট নিয়ে নাইটদের আশায় জল ঢাললেন সিদ্ধার্থ কল। শাকিব নিলেন একটি উইকেট। শেষ ওভারে পরপর ২ উইকেট নিয়ে কেকেআর-এর সব আশা শেষ করলেন ইডেনের ‘পয়া’ ক্রিকেটার কার্লোস ব্রাথওয়েট। নাইটদের ইনিংস শেষ হয় ১৬১ রানে। ম্যাচের সেরা স্বাভাবিকভাবেই রশিদ খান।
ঘরের মাঠে টস জিতে দীনেশ কার্তিক স্বাভাবিকভাবে ফিল্ডিংয়েরই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কলকাতার বিরুদ্ধে হায়দরাবাদের জার্সিতে শিখর ধবনের সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। শুরুটা ভালই করে দিয়েছিল এই জুটি। শিখর ধবন যখন আউট হলেন তখন হায়দরাবাদের রান ৫৬। ধবন আউট হলেন ব্যাক্তিগত ৩৪ রানে। তাঁর জায়গায় তিন নম্বরে ব্যাট করতে এসে কেন উইলিয়ামসন পিচে জাঁকিয়ে বসার বিপরীতে ৩ রান করেই ফিরে গেলেন প্যাভিলিয়নে।
ঋদ্ধি তখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দলের যখন ৮৪ রান তখন ঋদ্ধি ফিরলেন ৩৫ রান করে। ২৭ বলে তাঁর এই ৩৫ রানের ইনিংসে ছিল ৫টি বাউন্ডারি। সঙ্গে ততক্ষনে নেমে পড়েছেন এক প্রাক্তন নাইট। তাঁর থেকে হয়তো চেনা মাঠে টিম ম্যানেজমেন্ট অনেকটাই আশা করেছিল। কিন্তু সেই সাকিব আল হাসান ২৪ বলে ২৮ রান করে রান আউট হয়ে গেলেন কুলদীপের দৌলতে। এর পর দীপক হুদা ১৯, ইউসুফ পঠান ৩, কার্লোস ব্রাথওয়েট ৮ রান করে ফেরেন।
আরও পড়ুন: এ বারের আইপিএলের সেরা ৫ ক্যাচ
আরও পড়ুন: ‘কাউন্টি ক্রিকেট না খেলে ঠিকই করেছে বিরাট’
শেষ বেলায় রশিদ খানের দুরন্ত ব্যাট সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ১৭৪ রানে পৌঁছতে সাহায্য করে। ১০ বলে রশিদের ৩৪ রান করে অপরাজিত থাকেন রশিদ। হাঁকান ৪টি ওভার বাউন্ডারি ও ২টি বাউন্ডারি। ভুবনেশ্বর কুমার ৫ রানে অপরাজিত থাকেন। নির্ধারিত ওভারে হায়দরাবাদ শেষ করে ১৭৪/৭এ। কলকাতার হয়ে জোড়া উইকেট নেন কুলদীপ যাদব। একটি করে উইকেট শিবম মাভি, সুনীল নারিন ও পীযুষ চাওলার।
আগামী রবিবার ওয়াংখেড়ের মাঠে মেগা ফাইনাল। সেখানে কঠিন লড়াই দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় চেন্নাই সুপার কিংস। কেন উইলিয়ামসন না কি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি— কার হাতে ওঠে একাদশ আইপিএল ট্রফি, এখন সেটারই অপেক্ষা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy