টি-টোয়েন্টিতে চারের থেকে ছয় বেশি মেরেছে আন্দ্রে রাসেল। ছবি এএফপি।
বিনোদন ও উত্তেজনায় ঠাসা দু’টি জয় দিয়ে এ বার আইপিএলের শুরুটা আমরা দারুণ করেছি। এই দুই জয়ই আমাদের পক্ষে বেশ স্বস্তিদায়ক। পরের চারটি ম্যাচই বাইরে। তার আগে ঘরের মাঠে এই সাফল্য দলকে মানসিক ভাবে অনেক চাঙ্গা করেছে। সমর্থকদেরও ধন্যবাদ জানাতেই হবে। এই সাফল্যের পিছনে তাঁদেরও অবদান কম নয়। এত বছর হয়ে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গে আছি। এখনও ইডেনের গ্যালারির গর্জন শুনলে উত্তেজনায় কাঁপি।
শনিবার দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় আমাদের জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। কারণ, এই লিগে একটা হার বা জয় মাঝে মাঝে তিন-চারটে জয় বা হারের সমান হয়ে দাঁড়ায়। তাই কোটলায় আমাদের আবার শূন্য থেকে শুরু করতে হবে। আর ছেলেদের এটাও মনে রাখতে হবে যে, ক্রিকেটের এই আসরে নিশ্চয়তা বলে কিছু নেই।
ছোটবেলায় একটা কথা আমার মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ছন্দে থাকলে কখনও আত্মতুষ্টিতে ভুগতে নেই। সারা জীবন এই শিক্ষা সঙ্গে নিয়েই ক্রিকেট খেলেছি। ফর্ম এমন একটা জিনিস, যাকে সব সময় শ্রদ্ধা করতে হয় এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হয়। যে কোনও সময়, কোনও কারণ ছাড়াই ফর্ম তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারে। তাই ছন্দ ধরে রাখতে হলে তার প্রতি যত্নবান হতে হবে।
নাইট শিবিরে আমরা সব সময় পরষ্পরকে মনে করিয়ে দিই যে, দলই সবার উপরে। কোনও এক বা দু’জন ম্যাচ জেতালেও আসলে জেতে কিন্তু দলের এগারোজনই। আর সেই এগারোর বাইরে থাকা সদস্যরাও সেই সাফল্যের বাইরে থাকে না। উল্টো দিকে হারের ক্ষেত্রেও নিয়মটা একই। ছেলেরা আশা করি এই কথা মাথায় রেখেই মরসুমটা কাটাবে।
তবে এই মুহূর্তে একজনকে নিয়ে না লিখলেই নয়। সে আন্দ্রে রাসেল। ওর ক্ষেত্রে এটা যদিও নতুন কিছু নয়। পরিসংখ্যান দেখলেই বুঝতে পারবেন, ছেলেটা টি-টোয়েন্টিতে চারের থেকে ছয় মেরেছে বেশি। আর কত ম্যাচে যে ব্যাটে ঝড় তুলেছে ও, তার হিসেব দেওয়া কঠিন। শুধু ব্যাট নয়, বল হাতেও বহু ম্যাচ জিতিয়েছে আন্দ্রে। আমার মনে হয়, টি-টোয়েন্টিতে ও বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার হয়ে উঠতে পারে। এত দিনে হয়তো হয়েও গিয়েছে। জামাইকার ক্রিকেট বলতে সবার আগে যে ক্রিস গেলের নামই মনে আসে, এ কথা অনেকেই বলবেন। কিন্তু আন্দ্রের এই ফর্ম চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে হয়তো জামাইকান ক্রিকেট-চর্চায় গেলের আগে ওর নামই উঠে আসবে। নাইট শিবিরে আন্দ্রে রাসেল একটা বিশেষ চরিত্র। দারুণ হাসিখুশি। মজা করে সবসময় ড্রেসিং রুম মাতিয়ে রাখে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, ও কখনও বেশি উত্তেজিত হয় না। আবার কখনও বেশি ভেঙেও পড়ে না। ম্যাচের পরে ড্রেসিং রুমে ওর পাশে বসেও বোঝা যায় না ১৫ বলে ৫০ করে ফিরেছে, না শূন্য রানে আউট হয়েছে। অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, সুনীল নারাইন কেন প্রতি ম্যাচে ওপেন করছে না? আসলে বিপক্ষ ও পরিস্থিতি পাল্টানোর সঙ্গে বিভিন্ন ক্রিকেটারকে বিভিন্ন ভূমিকা পালন করতে বলা হয়। কারণ, প্রত্যেক দলের মতো আমরাও ব্যাটিং ও বোলিংয়ের মধ্যে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করি। এর পিছনে অনেক গবেষণা ও পরিকল্পনা থাকে। সেটা শুধু আমি করি না। অনেকে মিলে করে। আগে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জোগাড় করা হয়। পরে সে গুলো কাজে লাগিয়ে যথাসম্ভব বেশি রান করার বা উইকেট তোলার ছক তৈরি করা হয়। (গেমপ্ল্যান/চিভাচ স্পোর্টস)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy