আগ্রাসী: ইডেনে মারমুখী রাসেল। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
আইপিএলে আন্দ্রে রাসেলের বিধ্বংসী রূপ দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। মঙ্গলবারই যার ঝলক দেখা গেল ইডেনে। ক্যারিবিয়ান তারকার বিরুদ্ধে কোন জায়গায় বল ফেলবেন বুঝতে পারছিলেন না পীযূষ চাওলা, কে সি কারিয়াপ্পারা। স্পিনাররা বল করতে এলে ওভার প্রতি তিনটি বল উড়িয়ে দিচ্ছেন গ্যালারির উদ্দেশে।
হাইকোর্টের দিকে প্রতি গ্যালারিতে লোক পাঠিয়ে দেওয়া হয় রাসেল ব্যাট করার সময়। ক্যারিবিয়ান তারকা যতক্ষণ ব্যাট করলেন, ততক্ষণ দম ফেলার সময়ও পাননি তাঁরা। ইডেন যেন তাঁর কাছে ময়দানের কালীঘাট মাঠ অথবা তালতলা মাঠের মতো। দেখে মনেই হচ্ছে না শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে তিনি মারছেন। কিন্তু বল গিয়ে পড়ছে গ্যালারির আপার টায়ারে। তিন দিন আগেই শহরে এসে পৌঁছেছেন রাসেল। কিন্তু প্রথম দিনের অনুশীলনে বেশিক্ষণ ব্যাট করেননি। অনুশীলন করেননি শেষ দু’দিন। মঙ্গলবারই স্বমহিমায় দেখা গেল তাঁকে। যদিও বল হাতে এখনও নামতে দেখা যায়নি রাসেলকে।
এক ক্যারিবিয়ান তারকা যখন ইডেন মাতাচ্ছেন, অন্য ক্যারিবিয়ান তারকা তখন হোটেলের ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। মঙ্গলবার সকালেই কলকাতায় এসে পৌঁছে গেলেন সুনীল নারাইন। জেটল্যাগের জন্য অনুশীলনে আসতে পারেননি। পৌঁছে গিয়েছেন কার্লোস ব্রাথওয়েট ও হ্যারি গার্নিও। বুধবার অনুশীলনে যোগ দেবেন তাঁরা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
নাইট সমর্থকদের জন্য নতুন উপহার এনেছেন নারাইন। অ্যাকশন নিয়ে প্রচুর সময় দিয়েছেন। বিস্ময় স্পিনার হিসেবে ২০১২ সালে কেকেআর শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। টানা ছ’টি আইপিএল খেলার পরে অনেকেই তাঁর ডেলিভারি বুঝে গিয়েছেন। ২০১২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত প্রত্যেক আইপিএলে ২০ উইকেটের বেশি ছিল তাঁর। শেষ তিন বার তাঁর উইকেট সংখ্যা কমেছে। গত বার পেয়েছিলেন ১৭টি উইকেট। এ বার নতুন কিছু দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা। নাইটদের স্পিন বোলিং কোচ কার্ল ক্রো জানিয়ে দিয়েছেন, বল ছাড়ার আগে নারাইনের হাত দেখতে পাবেন না কোনও ব্যাটসম্যান। তিনি বলেন, ‘‘ব্যাটসম্যানরা যে নারাইনকে পড়তে পারছে, তা আমরাও বুঝতে পেরেছিলাম। গত বারই অ্যাকশন পরিবর্তন করেছিল নারাইন। এ বার বল লুকিয়ে রাখার কৌশল রপ্ত করেছে। আঙুলে সামান্য চোটের জন্য পিএসএলে খেলেনি। কিন্তু সুস্থ হওয়ার পরে বোলিংয়ের পিছনে প্রচুর সময় দিয়েছে। বল লুকিয়ে রাখার কৌশল ভাল করে রপ্ত করতে পারলে আবার আগের মতো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে নারাইন।’’ শেষ তিন বছর নাইটদের সঙ্গে কাজ করছেন ক্রো। খুব কাছ থেকে দেখেছেন কুলদীপ যাদবকে। ভারতীয় চায়নাম্যানের উন্নতির কারণ কী? ক্রো-র উত্তর, ‘‘কুলদীপের শান্ত স্বভাব ও ভয়ডরহীন মানসিকতাই ওকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ওভারে দু’টি ছয় হলেও ভয় পায় না। সেটাই ওকে আরও এগিয়ে দিচ্ছে। আমার মতে, আইপিএলের সেরা স্পিন বিভাগ কেকেআরে। কারিয়াপ্পা যোগ দেওয়ার পরে তো বটেই।’’
এ দিনই প্রথম অনুশীলন করেন দীনেশ কার্তিক। তাঁর ব্যাটিংয়েও আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়া। অধিনায়ককে দেখে তো মাইক হর্ন বলেই দিলেন, ‘‘এত ভাল অধিনায়ক যাদের দলে রয়েছে। তারা তো ভাল করবেই।’’ প্রত্যেক বারের মতো এ বারও নাইটদের উদ্বুদ্ধ করতে এসেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই দুঃসাহসিক অভিযাত্রী। ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপের আগে ভারতীয় দলকে চাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বিশ্বকাপ জিতে ফেরে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দল।
২০১৪-র ফুটবল বিশ্বকাপেও জার্মানির সঙ্গে কাজ করেছেন। ফাইনালের আগে কী বলেছিলেন ফিলিপ লামদের? হর্নের উত্তর, ‘‘আমি ওদের বুঝিয়েছিলাম, ভাল খেলতে হলে জায়গা তৈরি করতে হবে। শুধু মাঠে নয়, মস্তিষ্কেও। ভেবে নিতে হবে আমরা সেরা। আর মেসিকে ঘিরে রাখতে হবে দু’-তিনজন মিলে। যাতে এক মুহূর্তও মনে না হয় যে আর্জেন্টিনা এই বিশ্বকাপ জিততে পারে। কিন্তু মেসি বেশি কথা বলে না। কথা বলে ওর পা।’’ রোনাল্ডো ও মেসির ফারাক কতটা? বললেন, ‘‘দু’জনে একেবারেই ভিন্ন চরিত্রের মানুষ। আসলে ব্রাজিল, পর্তুগালে ছেলে মেয়েরা অন্য ভাবে বেড়ে ওঠে। তাই অত ডাকাবুকো।’’
বিশ্বকাপের আগে এ বারও ভারতীয় দলকে উদ্বুদ্ধ করার ইচ্ছে ছিল তাঁর। কিন্তু দু’সপ্তাহ পরেই বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ গডউইন অস্টিন (কে-২) জয়ের উদ্দেশে রওনা দেবেন হর্ন। তাই সময় হবে না তাঁর। বলে গেলেন, ‘‘অনেক দলই আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমার সময় নেই। অনেক কাজ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy