Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কেউ গুরু নয়, নিজেই ইয়র্কার শেখেন রাবাডা

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তিনি এবং বুমরা সেরা দুই পেসার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে শাসন করবেন। ‘‘এটা যদি কেউ বলেন, তা হলে প্রশংসা হিসেবেই ধরে নেব,’’ বলছেন রাবাডা।

অস্ত্র: কলকাতার বিরুদ্ধে দিল্লির প্রধান হাতিয়ার রাবাডা। ফাইল চিত্র

অস্ত্র: কলকাতার বিরুদ্ধে দিল্লির প্রধান হাতিয়ার রাবাডা। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:২৪
Share: Save:

বর্ণবিদ্বেষের অভিশপ্ত সময় দেখতে হয়নি তাঁকে। উন্মুক্ত প্রজন্মের প্রতিনিধি হতে পেরে কাগিসো রাবাডা ধন্যবাদ দিচ্ছেন ভাগ্যকে। শুক্রবার ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে দিল্লি ক্যাপিটালসের প্রধান অস্ত্র হতে যাচ্ছেন তিনি। তার আগে সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার বলেছেন, ‘‘আমি ভাগ্যবান যে, নিজের প্রতিভা মেলে ধরার মতো পরিবেশ এবং সুযোগ পেয়েছি। ভাগ্যবান যে, সমর্থন পেয়েছি। সব বাচ্চার সেই সৌভাগ্য হয় না।’’ একই সঙ্গে তিনি মুখ খুলেছেন যশপ্রীত বুমরাকে নিয়েও।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তিনি এবং বুমরা সেরা দুই পেসার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে শাসন করবেন। ‘‘এটা যদি কেউ বলেন, তা হলে প্রশংসা হিসেবেই ধরে নেব,’’ বলছেন রাবাডা। তবে দু’জনের মধ্যে কে বেশি ভাল, সেই তর্কে ঢুকতে চান না। ‘‘আমি জানি না, কে এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা। সব দেশের হাতেই খুব ভাল পেস বোলিং আক্রমণ আছে। সেই কারণে আমি মনে করি, ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ খুব আকর্ষণীয় হবে।’’

দিল্লির মাঠে সুপার ওভারে আন্দ্রে রাসেলকে করা তাঁর ইয়র্কারকে আইপিএলের সেরা বল আখ্যা দিয়েছেন অনেকে। জানতে চাওয়া হয়, ইয়র্কার শেখার ব্যাপারে তাঁর আদর্শ কে? ওয়াকার ইউনিস না অ্যালান ডোনাল্ড? কাকে অনুসরণ করতে চেয়েছেন তিনি? রাবাডা বলেন, ‘‘বিশেষ কাউকে দেখে আমি ইয়র্কার শিখিনি। ক্রিকেট খেলতে খেলতেই শিখেছি। আমার শুধু মনে হয়েছিল, এটা একটা ভাল বল।’’

তিনি নজর কাড়লেও খুব ভাল জায়গায় নেই দিল্লি ক্যাপিটালস। রাবাডান মনে করছেন, হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ ভাল ভাবে শেষ করতে না পারাই এর কারণ। ‘‘দলটা বয়সে তরুণ। ম্যাচ শেষ করতে গিয়ে অসুবিধায় পড়েছি। আমি নিজে যখন প্রথম বার আইপিএল খেলতে এসেছিলাম, তখন একই জিনিস হয়েছিল। কাছে এসেও শেষ পেরেকটা পুঁতে দিতে পারিনি।’’ যোগ করছেন, ‘‘শ্রেয়স, ঋষভের মতো ক্রিকেটারেরা অভিজ্ঞ হচ্ছে। আমরা সকলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি। সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, প্রত্যেক ম্যাচ থেকে শেখা।’’

বর্ণবিদ্বেষের কারণে দীর্ঘকাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের অনেক নামী ক্রিকেটারই তাই বিশ্ব মঞ্চে নিজের প্রতিভা দেখানোর সুযোগ পাননি। রাবাডা দক্ষিণ আফ্রিকার উন্মুক্ত প্রজন্মের নাগরিক। উন্মুক্ত প্রজন্মের নাগরিক বলা হয় তাঁদের, যাঁরা বর্ণবিদ্বেষ পর্বের পরে জন্মেছেন। রাবাডার বাবা-মা অবশ্য তরুণ বয়সে অভিশপ্ত ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন। কর্মজীবনে থিতু হতে গিয়ে তাঁদের নানা অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ‘‘বাবা-মা আমার জন্য যা করেছেন, তা নিয়ে বলার মতো ভাষা নেই আমার। বর্ণবিদ্বেষের সময় তাঁদের জীবন মোটেও সহজ ছিল না,’’ বলে রাবাডা যোগ করছেন, ‘‘এখন আমার সামনে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই আমার ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অনগ্রসর বাচ্চাদের সাহায্য করতে চাই।’’ রাবাডার ফাউন্ডেশন ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে তৈরি হলেও অন্যান্য খেলা এবং পড়াশুনোতেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। বর্ণবিদ্বেষ পরবর্তী প্রজন্মের প্রতিনিধি হলেও দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন অন্য সমস্যা রয়েছে। ‘কোলপাক’ নামক প্রথা মেনে বেশি টাকা আয়ের জন্য দেশ ছেড়ে অনেকে ইংল্যান্ডে খেলতে চলে যাচ্ছেন। ২০১৭-তে যেমন কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে চলে যান কাইল অ্যাবট। রাবাডান বলছেন, এটা যাঁর যাঁর নিজের ব্যাপার। ‘‘প্রত্যেক মানুষ তাঁর মতো করে ভাবতে পারেন। কোলপাক স্পর্শকাতর একটি বিষয়। আমার কাছে দেশের হয়ে খেলাটাই খুব বড় একটা সম্মান। দেশের জার্সিতে সব সময় নিজের সেরাটা দিতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket IPL 2019 Delhi Capitals Kagiso Rabada
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE