আগ্রাসী: ১৫ বলে ৩২ রান হার্দিক পাণ্ড্যর। বৃহস্পতিবার। আইপিএল
ভারতের বিশ্বকাপ দল নির্বাচনের সময় নির্বাচক প্রধান এম এস কে প্রসাদ বলেছিলেন, উইকেটকিপিংয়ের জন্যই বাদ পড়েছেন ঋষভ পন্থ। কিন্তু চলতি আইপিএলে পন্থের কিপিং নজর কেড়েছে অনেকেরই। কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গে ম্যাচে দুরন্ত একটি ক্যাচ ধরেছিলেন। বৃহস্পতিবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধেও একটা দারুণ ক্যাচ ধরলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের উইকেটকিপার পন্থ। সূর্যকুমার যাদবের খোঁচাটা প্রথম স্লিপেরও দূর দিয়ে যাচ্ছিল। ডান দিকে উড়ে গিয়ে সেই ক্যাচ ধরেন পন্থ। কিন্তু দিল্লি-জনতার প্রত্যাশা তো ছিল আরও বেশি। ব্যাট হাতেও তাঁর বিধ্বংসী ইনিংস দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। দিল্লির বাঁ হাতি খেললেন ১১ বল। রান মাত্র ৭। হার মানলেন জাতীয় দলে সতীর্থ যশপ্রীত বুমরার কাছে। ঋষভ ফিরলেন। ঘরের মাঠে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বোলিংয়ের সামনে তাসের ঘরের মতোই ভেঙে পড়ল দিল্লি। ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবলের দুই নম্বরে উঠে এল রোহিত শর্মার দলও। দিল্লির শুরুটা যে খুব খারাপ ছিল, তা কিন্তু বলা যাবে না। কিন্তু পৃথ্বী (২৪ বলে ২০) এবং শিখর ধওয়ন (২২ বলে ৩৫) ফেরার পরেই পাল্টে গেল ছবিটা। লেগস্পিনার রাহুল চাহারই গড়ে দিলেন জয়ের রাস্তা। বল পড়ে থমকে যাচ্ছিল। সেই উইকেটেই দুই ওপেনার-সহ দিল্লি ক্যাপিটালস দলের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারকে ফিরিয়ে রাহুল চমক দিলেন। ম্যাচের পরে যা নিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের উইকেটকিপার কুইন্টন ডি কক বলে গেলেন, ‘‘দ্বিতীয় ওভারেই পরেই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, এই মন্থর উইকেটে রান তাড়া করা সহজ হবে না দিল্লির। সত্যি বলতে, উইকেটকিপিং করতে গিয়ে বারবার বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছিলাম।’’ বিষণ্ণ দিল্লি অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার মেনে নিলেন, তাঁরা কোনও সময়েই মুম্বই বোলারদের পাল্টা আক্রমণ করতে পারেননি।
বিশ্বকাপের ১৫ জনের দল থেকে বাদ পড়ার পরে এ দিনই প্রথম ম্যাচ খেলতে নামলেন পন্থ। তবে প্রথম ২০ ওভারে নজর কেড়ে নিলেন পাণ্ড্য ভাইয়েরা। ক্রুণাল পাণ্ড্য ২৬ বলে অপরাজিত ৩৭ করলেন। হার্দিক করলেন ১৫ বলে ৩২। যার মধ্যে রয়েছে হেলিকপ্টার শটে মারা বিশাল ছয়ও। ম্যাচের সেরা তিনিই। ক্রুণালের ব্যাট থেকেও এল হেলিকপ্টার শট। যদিও তাতে চার রান হয়। পাণ্ড্য ভাইদের দাপটে ২০ ওভারে মুম্বই করল ১৬৮-৫। এক সময় মনে হচ্ছিল, দেড়শোর বেশি হয়তো তুলতে পারবে না মুম্বই। কিন্তু ক্রিস মরিস এবং কাগিসো রাবাডার করা শেষ দুই ওভারে উঠল ৩৩ রান।
এক দিকের ডাগআউটে সচিন তেন্ডুলকর, জাহির খান। অন্য ডাগআউটে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রিকি পন্টিং। ঔজ্জ্বল্যের দিক দিয়ে বাইশ গজের ক্রিকেটারদের চেয়ে এই ম্যাচে দু’দলের প্রাক্তনরাই এগিয়ে ছিলেন অনেকটা। ফিরোজ শাহ কোটলায় ঘণ্টা বাজিয়ে ম্যাচ শুরু করেন এমনই একজন প্রাক্তন ক্রিকেটার। সৌরভ।
কোটলার বাইশ গজ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আগেই। মন্থর উইকেট স্ট্রোক খেলার পক্ষে সমস্যা তৈরি করেছে অনেক ম্যাচেই। দিল্লির বিরুদ্ধে পিচ দেখেই হয়তো দলে বেশ কয়েকটা পরিবর্তন করে মুম্বই। এই ম্যাচে তিন স্পিনারে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা। ক্রুণাল পাণ্ড্য, রাহুল চাহারের সঙ্গে রয়েছেন অফস্পিনার জয়ন্ত যাদবও। টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সময় মুম্বই অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেছিলেন, ‘‘জানি, এই পিচটা কী রকম ব্যবহার করতে পারে। সেই মতো তৈরি আছি আমরা।’’ উল্টো দিকে দিল্লি অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার বলেন, ‘‘টস জিতে রোহিতকে ব্যাট নিতে দেখে অবাকই হয়েছিলাম।’’
মুম্বইয়ের শুরুটা অবশ্য খারাপ হয়নি। প্রথম উইকেটের জুটিতে ৬.১ ওভারে ওঠে ৫৭ রান। কিন্তু অমিত মিশ্রের স্টাম্পের ওপর থাকা সোজা বল ভুল লাইনে খেলে বোল্ড হন রোহিত। এই আইপিএলে তিনি ওপেন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সে রকম বিধ্বংসী কোনও ইনিংস খেলতে পারেননি রোহিত। এ দিন চেনা ছন্দে দেখা যাচ্ছিল রোহিতকে (২২ বলে ৩০, তিনটি চার, এটি ছয়)। কিন্তু অমিত মিশ্রের শিকার হয়ে ফিরে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy