বিশ্বকাপে তিনি কেন ভারতীয় দলে নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সুনীল গাওস্কর, রিকি পন্টিংয়ের মতো প্রাক্তনরা। কিন্তু যাঁকে নিয়ে আলোচনা, সেই ঋষভ পন্থ এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি। সোমবার জয়পুরে তিনি নির্বাচকদের উত্তর দিলেন ব্যাটে।
ঋষভের ৩৬ বলে ঝোড়ো ৭৮ রান দেখে এ দিন আবারও দিল্লি ক্যাপিটালসের কোচ রিকি পন্টিং তোপ দাগলেন ভারতীয় নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত নিয়ে। পন্টিং বললেন, ‘‘জানি বিশ্বকাপের দলে সুযোগ না পেয়ে ঋষভ কতটা দুঃখে রয়েছে। আমার মতে, ঋষভকে বিশ্বকাপের দলে না রেখে ভুল করল ভারত। ইংল্যান্ডের পরিবেশে ঋষভের বিধ্বংসী ইনিংস কাজে লাগত।’’
সোয়াই মান সিংহ স্টেডিয়ামের ২২ গজকেই বোধহয় এ দিন নির্বাচকদের জবাব দেওয়ার জন্য বেছে নিয়েছিলেন ঋষভ। ২৬ বলে ছক্কা মেরে ৫০ রান করেছিলেন ঋষভ। সেই সময় বাঁ হাত মুষ্ঠিবদ্ধ অবস্থায় নাড়াতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আর ম্যাচ শেষে বলে গেলেন, ‘‘এ রকম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দিল্লিকে জিতিয়ে দারুণ লাগছে।’’ অবধারিত ভাবেই তাঁর কাছে ছুটে গিয়েছিল বিশ্বকাপে ভারতীয় দল ও নির্বাচকদের নিয়ে প্রশ্ন। যা শুনে এড়িয়ে যাননি দিল্লির এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। সোজা ব্যাটেই খেলেন তিনি। বলেন, ‘‘বিশ্বকাপের দলে সুযোগ না পাওয়াটা যে আমার মনে রেখাপাত করেনি, তা বলব না। তবে আমি খেলায় মনোনিবেশ করেছিলাম।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘ম্যাচে উইকেট কী রকম ব্যবহার করতে পারে, সে ব্যাপারে একটা ধারণা ছিলই। আমি তার সুযোগ নিয়েই দলকে জেতালাম।’’ দিল্লি ক্যাপিটালসের এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল দলের ভাবনা সম্পর্কে। যার উত্তরে পন্থ বলেন, ‘‘আমাদের দলের দুর্দান্ত ব্যাপার হল, দলের প্রত্যেকে জানে তাঁর দায়িত্ব কী। আমাদের কোচেরা জানিয়ে দেন, কী হতে চলেছে এবং আমাদের মাঠে নেমে কী করতে হবে। সেই মতোই এগিয়ে চলেছি আমরা।’’
পন্থের ইনিংস নিয়ে মুগ্ধ বিপক্ষ অধিনায়ক স্টিভ স্মিথও। ম্যাচের পরে তিনি বললেন, ‘‘ব্যাট হাতে রানটা যেখানে নিয়ে যাওয়ার দরকার ছিল, তা করা যায়নি। আর তা হয়েছে রাজস্থানের ব্যাটিংয়ের সময় ‘ডেথ ওভারে’ ক্রিস মরিস ও কাগিসো রাবাডার বল সামলাতে না পারায়। তবে উইকেট দারুণ ছিল। শিখর আজও দুর্দান্ত খেলে গেল।’’ এর পরেই তিনি ঋষভের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলে যান, ‘‘পন্থ বয়সে তরুণ হলেও মারাত্মক ব্যাট করে গেল। রণনীতিতে বেশ কিছু বদল করছিলাম। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। আমরা ঋষভকে আটকাতে পারিনি।’’
দিল্লির আর এক আগ্রাসী ব্যাটসম্যান প্রাক্তন ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সহবাগও আপ্লুত ঋষভের ঝোড়ো ব্যাটিং দেখে। তাঁর টুইট, ‘‘গতকাল ব্যাট হাতে মাহির বীরত্ব দেখলাম। আর আজ দেখলাম বিস্ময় ক্রিকেটার কী করতে পারে। ঋষভ পন্থ—বোলার আর ম্যাচ দু’টোকেই শেষ করে দিয়ে এল।’’
দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার লিগ টেবলে শীর্ষে যাওয়ার দিনে বলছেন, ‘‘ঘরের বাইরে উইকেট ভালই পাচ্ছি আমরা। বরং জানা নেই দিল্লির উইকেট কী রকম হবে। পাওয়ার প্লে-তে শুরুটা ভাল দরকার ছিল। সেটা করে দেখাল শিখর। আমাদের কোচ রিকি বলেছিল, শুরুর দিকের ব্যাটসম্যানরা ম্যাচ শেষ করে আসবে। ঋষভ দায়িত্ব নিয়ে সেই কাজটা করে এল।’’
আর শেষ ম্যাচের মতো এ দিনও যিনি দলের জয়ের রাস্তা তৈরি করে দিয়ে এসেছিলেন, সেই শিখর ধওয়নের মন্তব্য, ‘‘আমি এখন নিরামিষভোজীর মতো ব্যাটিং করছি। গত ম্যাচ থেকেই আমি খেলার স্টাইলে পরিবর্তন এনেছি। দলকে জয়ের রাস্তা তৈরি না করে দিতে পারলে পরে সমস্যা বেড়ে যায়। আমি সেই সঙ্কট যাতে তৈরি না হয়, সেই চেষ্টা করে চলেছি।’’ পরে আরও বলেছেন, ‘‘দরকারে আগ্রাসী ব্যাটিং করাটা আমার কাছে খুব কষ্টদায়ক কাজ নয়। তবে এখন পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। ফলে আমিও নিজের ভাবনায় বদল এনেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy