অলিম্পিক্স উদ্বোধনে জহরা।
ইসলামিক দেশগুলোর জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন জহরা নেমাতি। খোদ অলিম্পিক্সে।
বিশ্বের গ্রেটেস্ট শো-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম বার কোনও মহিলাকে ইরানের পতাকাবাহক হিসেবে দেখা গেল। ইরানের মতো দেশ যেখানে পুরুষকেন্দ্রিক খেলায় ঐতিহ্যগতভাবে নিষিদ্ধ মহিলা সমর্থকরা, সেখানে দেশের হয়ে জহরার পতাকাবাহকের ভূমিকা এক কথায় অবিশ্বাস্য। আরও এক চমকপ্রদ ঘটনা, তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। হুইলচেয়ারে বসেই ইরানকে নেতৃত্ব দিলেন।
একত্রিশ বছরের জহরা শনিবার অবশ্য আরও একটা নজির গড়লেন। বিশ্ব তিরন্দাজিতে ইতালির পাওলা ফ্যান্টাটোর পরে তিনি দ্বিতীয় মহিলা তিরন্দাজ যিনি অলিম্পিক্স এবং প্যারাঅলিম্পিক্সে একসঙ্গে নামার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। জহরা বলেছেন, ‘‘আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছতে চাই। যাতে আমার পরিবার এবং প্রিয়জনদের কাছে একটা বার্তা দিতে পারি— আমি ঠিক আছি। দুর্বল হয়ে পড়িনি।’’
ইরানের হয়ে অনেক আগে থেকে অলিম্পিক্সে অংশগ্রহণ করার স্বপ্ন দেখতেন জহরা। সেটা তিরন্দাজি নয়, তাইকোন্ডে ছিল তাঁর প্রথম পছন্দ। কিন্তু একটা গাড়ি দুর্ঘটনা সব প্রায় শেষ করে দিয়েছিল ব্ল্যাক বেল্ট অধিকারিনীর। তবে জহরা হারেননি। অস্কার পিস্টোরিয়াসের মতো জীবন যুদ্ধে জয়ী হয়ে ফিরে এসেছেন। তাইকোন্ডে আর চালাতে পারেননি ঠিকই। তবে অলিম্পিক্সে ইরানের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন রিওতেই পূর্ণ করলেন। এ দিন বলেছেন, ‘‘আমি যে কোনও একটা স্পোর্টসে নিজেকে দাঁড় করাতে চেয়েছিলাম। দুর্ঘটনার আগে কোন স্পোর্টসে আমার আগ্রহ ছিল, সেটা এখন অপ্রাসঙ্গিক। আমি খুশি তিরন্দাজি আমার স্বপ্নপূরণ করেছে।’’
জহরার কৃতিত্ব নতুন প্রজন্মকে নিশ্চয়ই উদ্বুদ্ধ করবে। তবে তার চেয়েও বেশি অনুপ্রেরণা জোগাবে ইরানে, যেখানে মহিলাদের কোণঠাসা করে রাখার প্রথা। কে বলতে পারে, হুইলচেয়ারের পতাকাবাহী মহিলাকে দেখে সেই প্রথায় কোনও বদল হয়ে যায় কি না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy