চেলসি বনাম ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড! লিগ টেবলে যে যেখানেই থাকুক, এ হেন ম্যাচ ঘিরে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হবেই। কিন্তু সেই উত্তেজনার আঁচ থেকে দূরে থাকতে চেয়েছিলেন চিরবিতর্কিত জোসে মোরিনহো। ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগেও বলেছিলেন, ‘‘চেলসি ক্লাব আর ওদের সমর্থকদের আমি সম্মান করি। এই ম্যাচটা জিতলেও চূড়ান্ত সংযম দেখিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই।’’
সকলেই তাই উন্মুখ হয়ে ছিলেন শনিবার স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ম্যান ইউ ম্যানেজার কী করেন দেখার জন্য। এবং ঘটনা হচ্ছে ৯৬ মিনিট ধরে শান্ত, স্থিতধী জোসেকেই দেখা গিয়েছে। এমনকি চেলসি সমর্থকেরা তাঁকে একটা সময় প্রবল বিদ্রুপ উপহার দিলেও তিনি শুধু ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি খেলিয়ে হাতের তিনটি আঙুল তাদের দিকে তুলে দেখিয়েছিলেন। মনে করিয়েছিলেন, চেলসিতে থাকার সময় তিনি তাঁর পুরনো ক্লাবকে তিন বার ইপিএল চ্যাম্পিয়ন করেছেন।
ব্যাস এতটুকুই।
অথচ এই ম্যাচটায় আগোগোড়াই ছিল রুদ্ধশ্বাস মেজাজ। ২১ মিনিটে ১-০ এগিয়ে যায় মাউরিসিয়ো সাররির ‘দ্য ব্লুজ’। খেলার ২১ মিনিটে উইলিয়ানের কর্নারে অসাধারণ হেডে গোল দেন আন্তোনিয়ো রুডিগার। অবশ্য, এই গোলের জন্য পুরোটাই দায়ী পল পোগবা। তিনিই রুডিগারকে মার্ক করছিলেন। অথচ উইলিয়ানের কর্নারে মারা শট শূন্যে উড়ে আসার সময় পোগবা নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ ভাবে ম্যাচে ফেরে ‘রেড ডেভিলস’। সৌজন্য অ্যান্থনি মার্সিয়াল। ৫৫ ও ৭৭ মিনিটে জোড়া গোল করে।
চেলসি ২ ম্যান ইউ ২
৯৫ মিনিট পর্যন্ত খেলার ফল ছিল ম্যান ইউয়ের পক্ষে ২-১। মনে হচ্ছিল, পোগবারাই জিততে চলেছেন। এবং কথা রেখে সত্যিই মোরিনহো দারুণ সংযম দেখিয়েছেন!
কিন্তু ছবিটা পাল্টে গেল নাটকীয় ভাবে। খেলা শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগে জটলা থেকে রোজ বার্কলে ২-২ করে দিতেই। রিজার্ভ বেঞ্চে হতাশ মুখে বসেছিলেন মোরিনহো।
এ বার তাঁর সামনে দু’বার মুষ্ঠিবদ্ধ হাত নিয়ে ছুটে আসেন চেলসির সহকারী প্রশিক্ষক মার্কো লাননি। এবং অবশেষে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় পর্তুগিজ ম্যানেজারের। নিজের চেয়ার থেকে লাফিয়ে উঠে কার্যত তিনি তেড়ে যান লাননির দিকে। কোনও রকমে তাঁকে আটকান নিরাপত্তারক্ষীরা। ক্ষিপ্ত জোসেকে শান্ত করতে ছুটে আসেন চেলসির ম্যানেজার সাররিও।
হঠাৎ এতটা রেগে গেলেন কেন জোসে?
ম্যাচ শেষের সাংবাদিক সম্মেলনে এসে স্বভাবতই এমন প্রশ্নের সামনে পড়তে হল তাঁকে। পর্তুগিজ ম্যানেজারের জবাব, ‘‘শুরুটা কিন্তু আমি করিনি। খুব খারাপ ভাবে সাররির সহকারী আমার দিকে ইঙ্গিত করছিল। পরে অবশ্য ও দুঃখ প্রকাশ করেছে। আমিও সেটা মেনে নিয়েছি। মানছি আমিও মাথা গরম করে ঠিক করিনি। যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। গল্প শেষ। এটা নিয়ে আর ভাবতে চাই না।’’ সঙ্গে ম্যাচ নিয়ে তাঁর বিশ্লেষণ, ‘‘দারুণ খেলা হয়েছে। তবে এই ফলটা কিন্তু সঠিক ফল নয়। আমাদেরই জেতার কথা। গোটা ম্যাচ জুড়ে আমরাই সেরা ছিলাম। এমনকি প্রথমার্ধে পিছিয়ে থাকার সময়টাতেও।’’
সঙ্গে মোরিনহো প্রশংসায় ভরিয়ে দেন জোড়া গোল করে দিনের নায়ক মার্সিয়ালকেও। তাঁর কথা, ‘‘ছেলেটা যে ভাবে উন্নতি করছে তাতে আমি নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছি। ক্রমশ ও একজন সম্পূর্ণ ফুটবলার হয়ে উঠছে। তবে আমরা দল হিসেবে দারুণ খেলেছি। আশাকরি আর কয়েকটা ম্যাচের পরে লিগ টেবলেও ভাল জায়গায় চলে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy