Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
আকাশে মেঘ ও বিদ্যুতের খেলা, সাদা চাদরে ঢাকা ইডেন

নাইটদের সমর্থন করতে হাজির নগরকোটিও

চোট পেয়ে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যাওয়ার সময় নগরকোটির মনে হয়েছিল যেন পরিবার ছেড়ে বেশ কয়েক দিনের জন্য দূরে কোথাও চলে যাচ্ছেন।

চমক: কলকাতায় নগরকোটি। মঙ্গলবার বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র

চমক: কলকাতায় নগরকোটি। মঙ্গলবার বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৮ ০৪:৪১
Share: Save:

গোড়ালিতে চোট পেয়ে এ মরসুমের আইপিএল থেকে ছিটকে গিয়েছেন তিনি। তাঁর জায়গায় দলে সুযোগ পেয়ে নজর কেড়েছেন কর্নাটকের পেসার প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। তবুও ভেঙে পড়েননি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী পেসার কমলেশ নগরকোটি। আসলে তাঁকে ভেঙে পড়তে দেননি দলের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) বেঙ্কি মাইসোর। কেকেআর সিইও-র উদ্যোগেই ‘টিম স্পিরিট’ বাড়াতে জয়পুর থেকে নগরকোটিকে উড়িয়ে আনা হল কলকাতায়। বুধবার কেকেআর বনাম রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচে ফের দেখা যাবে সেই পরিচিত মুখটি।

চোট পেয়ে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যাওয়ার সময় নগরকোটির মনে হয়েছিল যেন পরিবার ছেড়ে বেশ কয়েক দিনের জন্য দূরে কোথাও চলে যাচ্ছেন। মন খারাপ করে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময়ে কমলেশ ভেবেছিলেন এ মরসুমে আর হয়তো সতীর্থদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। সে ভাবেই নিজের মনকে সান্তনা দিয়েছিলেন তরুণ ক্রিকেটার। কিন্তু কে জানত, রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে প্লে-অফ ম্যাচেই আরও এক বার ইডেনমুখী হবেন তিনি।

মঙ্গলবার রাতে বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর পথে আনন্দবাজার-কে কমলেশ বলেন, ‘‘আমাদের দলের বোঝাপড়া অসাধারণ। ঠিক একটা পরিবারের মতোই সবাই মিলে মিশে থাকতাম। ভেবেছিলাম এ মরসুমে আর হয়তো এই সুযোগ পাব না। কিন্তু দেখুন আরও একবার আমি কলকাতায়। এটাই আমার কাছে বড় পাওনা যে দল আমাকে ভুলে যায়নি। প্লে-অফে উঠলেও আমার কথা মনে রেখে আমাকে ফিরিয়ে এনেছে।’’

নজরদারি: বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ঢাকা গোটা ইডেন। আজ, বুধবার এখানে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম রাজস্থান রয়্যালস এলিমিনেটর। এই ম্যাচে যে হারবে, বিদায় নেবে সে দল। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

চোট পাওয়ার পরে বাড়ি ফিরে কেমন ছিলেন এত দিন? তরুণ পেসারের উত্তর, ‘‘চোট পেলেও কখনও মনে হয়নি যে আমি দল থেকে বেরিয়ে গিয়েছি। বেশির ভাগ দিনই অ্যান্ড্রু লিপাস স্যর (কেকেআরের ফিজিও) ফোন করে আমার খবর নিতেন। জিজ্ঞাসা করতেন আমার কোথায় সমস্যা হচ্ছে। এক বারও আমাকে দলের বাইরের ক্রিকেটার মনে করেননি। এমনকি চোট পাওয়ার পরে উনিই আমার এমআরআই-এর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।’’

দলের সঙ্গে যোগ দিলেও এ মরসুমে খেলা হচ্ছে না নগরকোটির। কারণ অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠলেও ম্যাচ খেলার মতো পরিস্থিতিতে নেই তিনি। পাশাপাশি তাঁর পরিবর্ত ক্রিকেটারও বেছে নিয়েছে কেকেআর। তবুও চোট সারানোর জন্য জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে নিয়মিত রিহ্যাব করেছেন। সুস্থ হয়ে মাঠে ফেরার তাগিদে পায়ের শক্তি বাড়ানোরও ব্যায়াম করতে হয়েছে নগরকোটিকে। রাজস্থানের তরুণ পেসার বলছেন, ‘‘জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে যাওয়ার পর থেকেই রিহ্যাব শুরু করি। সকাল ও বিকেল দু’বেলাই পায়ের শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম করতে হয়েছে আমাকে। এখনও সেগুলো চলছে।’’

এলিমিনেটর ও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে বৃষ্টি হলে কী হতে পারে

• এলিমিনেটর অথবা কোয়ালিফায়ার ম্যাচে কোনও ‘রিজার্ভ ডে’ বা বাড়তি দিন নেই। প্লে-অফ ম্যাচের জন্য ১২০ মিনিট অতিরিক্ত সময় নির্ধারিত রয়েছে।

• প্লে-অফে রাত ১০.১০-এর মধ্যে বৃষ্টি থেমে গেলে কোনও ওভার কাটা হবে না। • প্রথম ইনিংস ২০ ওভার হওয়ার পরে বৃষ্টি শুরু হলে দেখতে হবে বিপক্ষ যেন সর্বনিম্ন ৫.১ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পায়। সে ক্ষেত্রে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে নির্ধারণ করা হবে ম্যাচের ভাগ্য।

• ম্যাচের শুরু থেকে বৃষ্টি হলে আইপিএলের নিয়ম বলছে, প্রত্যেক দল যেন সর্বনিম্ন পাঁচ ওভার করে ব্যাট করার সুযোগ পায়। সেটাও সম্ভব না হলে সুপার ওভারের সাহায্যে ম্যাচের ফল নির্ধারিত হবে। তবে সেই সুপার ওভার রাত একটা কুড়ির মধ্যে শুরু করতে হবে।

• ম্যাচ যদি একেবারেই করা সম্ভব না হয় তা হলে গ্রুপ পর্বে পয়েন্ট তালিকায় যারা এগিয়ে ছিল, তারাই জিতবে। এলিমিনেটরে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচ ভেস্তে গেলে পয়েন্ট তালিকায় তিন নম্বরে থাকার জন্য দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে কেকেআর।

• দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারেও যদি বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়, তা হলে কেকেআরকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাবে তাদের বিপক্ষ। কারণ নাইটদের থেকে পয়েন্টে এগিয়ে চেন্নাই ও হায়দরাবাদ।

• ফাইনালের জন্য ‘রিজার্ভ ডে’ রয়েছে।

কয়েক দিন আগে একটি ‘চ্যাট শো’-য় রবিন উথাপ্পা বলেছিলেন, আগামী তিন বছর দল নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হবে না কেকেআরকে। তিনি যে খুব একটা ভুল কিছু ভাবেননি তা বুঝিয়ে দিয়েছে দলের তরুণ ব্রিগেডের পারফরম্যান্স। শিবম মাভি, শুভমন গিলের পাশাপাশি প্রসিদ্ধও অসাধারণ বল করেছেন। সতীর্থদের পারফরম্যান্স দেখে কমলেশের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি, মাভি ও শুভমন খুব ভাল বন্ধু। আইপিএলে ওদের খেলতে দেখে আমি খুশি হয়েছি। পাশাপাশি খারাপও লেগেছে। বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে বসে ভাবছিলাম, চোট না পেলে আমিও হয়তো ইডেনের ৬৫ হাজার দর্শকের সামনে নায়ক হয়ে উঠতে পারতাম। তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রসিদ্ধও ভাল বোলার। গতির সঙ্গে দু’দিকেই বল সুইং করাতে পারে।’’

নগরকোটির মতে, ফাইনালে চেন্নাইয়ের প্রতিপক্ষ হিসেবে তিনি কেকেআরকেই দেখছেন। ১৮ বছর বয়সি তরুণ পেসার নির্দ্বিধায় বলে দিলেন, ‘‘কোনও চিন্তা নেই। আমরাই ফাইনালে উঠছি।’’ কিছুক্ষণ থেমে তিনি যোগ করেন, ‘‘এসেছি যখন ট্রফি নিয়েই বাড়ি ফিরব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE