Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সুযোগ নষ্ট করে টাই মনোজদের

মঙ্গলবার রাতে জ্বর হওয়ার কারণে বুধবার মাঠে নামতে পারেননি বাংলার নির্ভরযোগ্য পেসার অশোক ডিন্ডা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৪৭
Share: Save:

কথায় আছে, ক্রিকেট মহান অনিশ্চয়তার খেলা। বুধবার বিজয় হজারে ট্রফিতে বাংলা বনাম কেরল ম্যাচে আরও একবার তা প্রমাণ হয়ে রইল। ২৩৬ রান তাড়া করতে গিয়ে ম্যাচের শেষ বলে শেষ রানটি নিতে গিয়ে আউট হলেন কণিষ্ক শেঠ। ব্যস। ক্রিজের উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির গড়া ৭৩ রানের লড়াকু ইনিংস নিমেষের মধ্যে মূল্যহীন হয়ে গেল। পুরো ম্যাচ দাপট দেখিয়েও শেষ ওভারে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে বাংলা।

মঙ্গলবার রাতে জ্বর হওয়ার কারণে বুধবার মাঠে নামতে পারেননি বাংলার নির্ভরযোগ্য পেসার অশোক ডিন্ডা। যদিও বোলিং বিভাগে তাঁর অভাবটা চোখে পড়তে দেননি সায়ন ঘোষ (২-৫৬), কণিষ্ক শেঠরা। দুই উইকেট পেলেন মনোজ তিওয়ারিও। ডিন্ডার জায়গায় কণিষ্কের সঙ্গে বোলিং ওপেন করেন মুকেশ কুমার। জলজ সাক্সেনা (১০৩) সেঞ্চুরি করা সত্ত্বেও পঞ্চাশ ওভারে ছ’উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রানে বিপক্ষকে আটকে দেয় বাংলা। জবাবে আট উইকেট হারিয়ে সেই রানেই বাংলাকে বেঁধে দিলেন কে সি অক্ষয়রা।

২৩৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শেষ ওভারে বাংলার জিততে বাকি ছিল সাত রান। সন্দীপ ওয়ারিয়র (২-৩৮) ও কে সি অক্ষয়ের (২-৪৫) দুরন্ত বোলিং মনোজদের শেষ বল পর্যন্ত ম্যাচ নিয়ে যেতে বাধ্য করে। আর তখনই জমে ওঠে নাটক। শেষ বলে বাকি এক রান। স্ট্রাইকে ছিলেন কণিষ্ক শেঠ। ম্যাচের নায়ক হয়ে ওঠার সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন তিনি। কেরলের অন্যতম সেরা ফিল্ডার অরুণ কার্তিকের হাতে বল ঠেলে রান নিতে গিয়ে রান আউট হন তিনি। একই সঙ্গে দুই পয়েন্ট হাতছাড়া হয় মনোজদের।

শুরুটা ভালই করেছিলেন শ্রীবৎস গোস্বামী ও অভিমন্যু ঈশ্বরন। অথচ সেট হওয়ার পরে নিজেদের উইকেট ছুড়ে আসেন দুই বঙ্গ ওপেনার। ২১ রান করে বাঁ-হাতি স্পিনার কে সি অক্ষয়ের শিকার হলেন অভিমন্যু। ২৬ রানের মাথায় অক্ষয়ের বলেই মারতে গিয়ে আউট হন শ্রীবৎস। এ দিন তিন নম্বরে বিবেক সিংহর জায়গায় পাঠানো হয় ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়কে। মনোজ তিওয়ারির সঙ্গে ৪১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ব্যক্তিগত ৩৫ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় তাঁকে।

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে পরের তিনটি উইকেটের পতন। ৪০ বল খেলে ২৪ রানে আউট হন অনুষ্টুপ মজুমদার। ঠিক পরের বলেই রান আউট হন বিবেক সিংহ। এক দিক থেকে পরপর উইকেট পড়তে থাকলেও অন্য দিকে উইকেট কামড়ে পড়ে ছিলেন মনোজ। ৯২ বল খেলে ৭৩ রানে অপরাজিত তিনি। যাঁকে নিয়ে আগের দিন সাইরাজ বাহুতুলে বলেছিলেন, ‘‘গত ম্যাচে খুব ভাল ব্যাট করেছে মনোজ। তাই এই ম্যাচের আগে ওর ফর্মই বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে বাংলাকে।’’ আত্মবিশ্বাস বাড়ালেও একটুর জন্য পুরো পয়েন্ট হাতছাড়া হয় মনোজদের। গ্রুপ বি-তে সাতটি দলের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে বাংলা। পরের রাউন্ডে উঠতে গেলে প্রথম দু’টি দলের মধ্যে শেষ করতে হবে মনোজদের। বাকি এখনও তিনটি ম্যাচ। পরের ম্যাচে বাংলার প্রতিপক্ষ উত্তর প্রদেশ। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির গ্রুপ পর্বে যাদের কাছে হারতে হয়েছিল মনোজদের। বিজয় হজারে ট্রফিতে দু’টি ম্যাচের মধ্যে দু’টি হেরে তালিকার শেষে রয়েছে সুরেশ রায়নারা। নক-আউটের লড়াইয়ে টিকে থাকতে গেলে দু’দলেরই পরের ম্যাচে মরণ-বাঁচন লড়াই। টুর্নামেন্টের লড়াইতে বাংলা টিকে থাকতে পারে কি না, এটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE