প্রত্যয়ী: অলিম্পিক্সকে পাখির চোখ করছেন শ্রীকান্ত। ফাইল চিত্র
সদ্য শেষ হওয়া মরসুম খুব ভাল না গেলেও প্রিমিয়ার ব্যাডমিন্টন লিগে দুরন্ত ছন্দে আছেন। টানা আট ম্যাচ জিতে তাঁর দল বেঙ্গালুরু র্যাপ্টর্সকে চ্যাম্পিয়নও করলেন। যে ধারাবাহিকতা তাঁকে নতুন মরসুমে ছন্দ ধরে রাখতে সাহায্য করবে বলে মনে করেন কিদম্বি শ্রীকান্ত।
‘‘পিবিএল শুরু হয় মরসুমের শেষে। যখন এই প্রতিযোগিতা শেষ হয়, নতুন মরসুম শুরু হতে আর কিছুদিন বাকি থাকে। তাই পিবিএলের ছন্দ নিয়ে আগামী মরসুমের গোড়াতেই ভাল শুরু করার সুযোগ থাকে। গত বার যেমন ভিক্টর অ্যাক্সেলসেন (বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর, বেঙ্গালুরু দলে ছিলেন) খুব ভাল ছন্দে ছিল পিবিএলে। যে ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মালয়েশিয়া ওপেনেও জিতেছিল। দুর্ভাগ্যবশত পরে চোটের জন্য ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি ও,’’ পিবিএল ফাইনালের আগে টিম হোটেলে বলছিলেন বেঙ্গালুরু র্যাপ্টর্সের নায়ক।
গত বার ভিক্টরের মতো তিনিও চান আসন্ন মরসুমে এই ছন্দ ধরে রাখতে। বলেন, ‘‘আশা করি এই প্রতিযোগিতায় ভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে যে ভাবে এই ছন্দটা ধরে রেখেছি, সেটা আমাকে নতুন মরসুমে ধারাবাহিকতা পেতে সাহায্য করবে।’’ পাশাপাশি অধিনায়কের দায়িত্ব কী রকম উপভোগ করছেন, সেটাও জানাতে ভুললেন না প্রাক্তন বিশ্বসেরা ভারতীয় তারকা। ‘‘ভাবিনি এ ভাবে টানা ম্যাচগুলো জিতব। আসলে আমি দলের অধিনায়ক। আমার উপরে দল ভরসা করেছে। তাই মনে হল আমাকেও দায়িত্বটা সামলাতে হবে। আমি এই অধিনায়কত্বের চাপটা খুব উপভোগ করছি।’’
২০১৭ মরসুমে চারটি সুপার সিরিজ জেতার পরে গত মরসুমে তিনি সে ভাবে সফল না হলেও সেটা নিয়ে বেশি ভাবছেন না পুল্লেলা গোপীচন্দের ছাত্র। তাঁর কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ খেতাব জেতা। শ্রীকান্ত বলেন, ‘‘অনেকে বলছেন, গত মরসুম আমার ভাল যায়নি। আমি কিন্তু সে রকম মনে করি না। গোটা মরসুমে প্রথম চার থেকে ছ’জনের মধ্যে আমার র্যাঙ্কিং ঘোরাফেরা করেছে। তা ছাড়া আমার কাছে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে যাওয়ার নয়, বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল টুর্নামেন্ট জেতা।’’
বিশ্ব ব্যাডমিন্টন সংস্থার নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন শ্রীকান্তদের ন্যূনতম ১২টা প্রতিযোগিতা খেলা বাধ্যতামূলক। এই কড়া সূচি মেনে চলার ধকল গত মরসুম থেকে শুরু হয়েছে। প্রথমে চোট-আঘাত ভোগালেও শ্রীকান্ত মনে করেন ধীরে ধীরে এই চাপটা সহ্য করতে পারবেন। অবশ্য শুধু সূচি নয়, আসন্ন মরসুমে অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জনের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে শ্রীকান্তদের। তার জন্য প্রাথমিক শর্ত হল বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে (৩০ এপ্রিল, ২০২০ বিশ্ব ব্যাডমিন্টন সংস্থা যা প্রকাশ করবে) প্রথম ১৬ জনের মধ্যে থাকতে হবে। শ্রীকান্ত অবশ্য আশাবাদী অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জন করা তো বটেই, পদক জেতার লক্ষ্যেও ভারতীয় দল ভাল পারফর্ম করবে। ‘‘আমার কাছে অলিম্পিক্সের ব্যাডমিন্টনে লড়াই এশিয়ান গেমসের চেয়ে খুব একটা আলাদা নয়। ভিক্টর (ডেনমার্ক), রাজীব ওসেফের (ইংল্যান্ড) মতো কয়েকজনকে বাদ দিলে তো এশিয়ার দেশগুলোই দাপট দেখায় অলিম্পিক্সে। তাই আমরা ভাল খেলতে পারলে টোকিয়োতে ভারতের পদক জেতার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।’’ বলেন তিনি।
টোকিয়োর দিকে লক্ষ্য রেখে শ্রীকান্তদের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। যে লক্ষ্যে ফিটনেসকে প্রচণ্ড গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে এখন অনেক ম্যাচই দেখা যাচ্ছে খুব কাছাকাছি শেষ হচ্ছে। তাই প্রশ্ন উঠছে, ফিটনেস না দক্ষতা, কোনটা মোক্ষম সময়ে বেশি কাজে লাগে একজন খেলোয়াড়ের। শ্রীকান্তের ভোট ফিটনেসের দিকে। তিনি বলে দিলেন, ‘‘দক্ষতা খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনও সন্দেহ নেই, কিন্তু দক্ষতা দেখানোর সুযোগ পেতে গেলেও একজন খেলোয়াড়কে কোর্টে কিন্তু টিকে থাকতে হবে। অনেক সময়ই দেখা যায়, এক একটা ম্যাচ এক ঘণ্টা বা ৭০ মিনিটও খেলতে হয়। ফিটনেস না থাকলে অতক্ষণ লড়াই করার সুযোগই তো পাওয়া যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy