Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নাভ্রাতিলোভার পাল্টা তোপ মার্গারেটকে

সমকামী-বিবাহকে সমর্থন জানিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান উড়ান সংস্থা কোয়ান্তাস-এর সিইও অ্যালান জয়েস। যিনি নিজেই এক সময় সমকামী সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন।

প্রতিবাদ: মার্গারেট কোর্টের সমকামী বিবাহ নিয়ে মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেন নাভ্রাতিলোভা। ফাইল চিত্র

প্রতিবাদ: মার্গারেট কোর্টের সমকামী বিবাহ নিয়ে মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেন নাভ্রাতিলোভা। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ০৪:৫৯
Share: Save:

নেপথ্যে সমকামিতার বিরুদ্ধে মন্তব্য। আর তার জেরেই টেনিস দুনিয়ার দুই মহিলা কিংবদন্তির মধ্যে বেড়ে গেল দূরত্ব।

দুই কিংবদন্তিই মহিলা। একজন মার্গারেট কোর্ট। আর অপর জন মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা।

ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। সমকামী-বিবাহকে সমর্থন জানিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান উড়ান সংস্থা কোয়ান্তাস-এর সিইও অ্যালান জয়েস। যিনি নিজেই এক সময় সমকামী সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। আর তার পরেই সেই সংস্থার বিমানে আর যাত্রা করবেন না বলে জানান অস্ট্রেলিয়ার সর্বকালের সেরা মহিলা টেনিস খেলোয়াড় মার্গারেট কোর্ট।

চোদ্দো বছর আগে ২০০৩ সালে মার্গারেটের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন পার্কের নামকরণ করা হয়েছিল মার্গারেট কোর্ট এরিনা। কিন্তু মার্গারেট সমকামিতা বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় সেই মার্গারেট কোর্ট এরিনার নাম বদল করতে বলেছেন মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা। যিনি নিজে সমকামী। গত তিন বছর ধরে বিবাহিত জীবনযাপন করছেন প্রাক্তন রুশ মডেল জুলিয়া লেমিগোভা-র সঙ্গে।

চব্বিশটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক চুয়াত্তর বছর বয়স্ক মার্গারেট কোর্ট বর্তমানে ধর্মযাজক। অ্যালান জয়েস-এর সমকামী বিবাহ সমর্থনের পর ‘দ্য ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ান’ পত্রিকার সম্পাদকের কাছে একটি চিঠি লেখেন কোর্ট। যা বৃহস্পতিবারের সংস্করণে ছেপেছে পত্রিকাটি। তার পরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। চিঠিতে কোর্ট লিখেছেন, ‘এটা জেনে খুব হতাশ হলাম যে কোয়ান্তাস সমকামী বিবাহকে শুধু সমর্থনই করছে না, তা প্রসারেও সাহায্য করছে। আমি বিশ্বাস করি বিবাহ একজন পুরুষ এবং মহিলার মধ্যে তৈরি হওয়া পবিত্র সম্পর্ক। কোয়ান্তাস কর্তার বিবৃতির পর ওদের উড়ানে যাত্রা করা আর সম্ভব নয়।’

আরও পড়ুন: মুম্বই নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হলেন আগরকর

শুক্রবার মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা টুইট করেন, ‘মার্গারেট কোর্ট এরিনার নাম পরিবর্তন করার সময় চলে এসেছে...হয়তো পরের যাত্রা মার্গারেটকে করতে হবে নৌকায় চেপে’। নাভ্রাতিলোভা আরও একটি টুইটে মন্তব্য করেন, ‘সমর্থনের জন্য কোয়ান্তাসকে ধন্যবাদ...আর মার্গারেট, আপনি অনেক দূর চলে গিয়েছেন। আপনার লজ্জিত হওয়া উচিত।’

আর তার পরেই হইচই পড়ে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া-সহ গোটা বিশ্বে। বাদ যায়নি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটও। যেখানে কড়া সমালোচনা চলছে কোর্টের। আর এখানেই নাভ্রাতিলোভা পাশে পেয়ে গিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার আর এক খেলোয়াড় ক্যাসে দেলাকোয়া-কে। মার্গারেট কোর্টের উদ্দেশে তাঁর আক্রমণাত্মক টুইট, ‘মার্গারেট কোর্ট, এনাফ ইজ এনাফ...’। কারণ দেলাকোয়ের শিশুসন্তানের ছবি টুইট করে মার্গারেট লিখেছেন, ‘দুঃখ লাগে যখন দেখি এই শিশুটি তাঁর পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত’।

এ দিকে শুক্রবার এই তরজার পর সমকামী বিবাহকে সমর্থন জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল। তবে মার্গারেট কোর্ট এরিনার নাম বদলের জন্য নাভ্রাতিলোভার দাবি সমর্থন করেননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সমকামী বিবাহ নিয়ে মার্গারেটের কথায় মানুষ আঘাত পেতে পারেন। কিন্তু সেটা ওঁর ব্যক্তিগত মত। মার্গারেট দেশের কিংবদন্তি টেনিস খেলোয়াড়। কাজেই নামবদল সম্ভব নয়।’’ এমনকী টেনিস অস্ট্রেলিয়া এবং মার্গারেট কোর্ট এরিনার পরিচালকরাও বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘সমান অধিকারের গুরুত্ব দিই আমরা। মার্গারেট কোর্টকে তাঁর কৃতিত্বের জন্য সম্মান করলেও তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই আমরা’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE