অবিচল: ফাইনালে হেরেও দুঃখিত নন মাশরফি। ফাইল চিত্র
শুধুই স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা। সঙ্গে লড়ে হারার আফসোস। তামিম ইকবাল, শাকিব-আল-হাসানদের ছাড়াই ভারতকে সারাক্ষণ চাপে রাখার তৃপ্তি মাশরফি মর্তুজাদের শিবিরে। মাত্র ২২২ রানের পুঁজি নিয়েও শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করার গর্বে ভরপুর।
এ সবেরই প্রতিফলন পাওয়া গেল মাশরফির কথায়। যিনি উত্তেজনায় ঠাসা এশিয়া কাপ ফাইনালে হারার পরে সাংবাদিকদের বললেন, ‘‘আমাদের গর্ব হওয়া উচিত। তবে আমাদের এই ব্যর্থতা থেকে শিখতে হবে। প্রতিবারই এই ধরনের প্রতিযোগিতার শেষে এসে কোনও না কোনও জায়গায় ভুল করে ফেলছি আমরা। আজ আমরা শুরুটা ভাল করেছিলাম। কিন্তু সে ভাবে এগোতে পারিনি। তা সত্ত্বেও নিজেদের নিয়ন্ত্রণেই রেখেছিলাম সব কিছু। কিন্তু একেবারে শেষে সেই নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারিনি।’’
বোলারদের প্রশংসা করলেও দলের স্পিনারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের স্পিনাররা মাঝের ওভারগুলোতে ভাল বোলিং করলে হয়তো ছবিটা অন্য রকম হত। উইকেটে বল ঘুরলে তো স্পিনারদের এগিয়ে দিতেই হবে। মেহেদি সারা টুর্নামেন্টে ভাল বোলিং করেছে, মাহমুদুল্লাহ-ও গত ম্যাচে ভাল বোলিং করেছিল। নাজমুল ইসলামেরও আরও ভাল বল করা উচিত ছিল। কিন্তু প্রতিপক্ষের লক্ষ্য যেখানে মাত্র ২২৩, সেখানে আর বোলারদের দোষ দিই বা কী করে?’’
শেষ ওভারের লড়াই নিয়ে মাশরফি বলেন, ‘‘আমরা চাইছিলাম ওদের কোনও একজন ব্যাটসম্যান একটা বল মিসহিট করুক। পঞ্চম বলে কুলদীপ সেটা করেওছিল, স্টাম্পে লাগতে পারত সেটা। কিন্তু আমাদের ভাগ্য ভাল ছিল না।’’ বাংলাদেশ অধিনায়ক স্বীকার করে নেন ৩০-৪০ রান কম তোলেন তাঁরা। বলেন, ‘‘২১ ওভারে বিনা উইকেটে ১২০ রান তুলেছিলাম আমরা। পরের ১৪-১৫ ওভারে যদি ঝুঁকি না নিয়ে ব্যাট করতাম তা হলে হয়তো আরও ৬০-৭০ রান উঠত, তবে একটা উইকেট পড়ত বড়জোর। মুশফিক ভাল ব্যাট করতে পারেনি। অনেকগুলো রান আউট হয়েছে। তীব্রতা মানে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হওয়া নয়। ভাল শুরু করলে তা বজায় রাখতে হয়। এই উইকেটে আমরা ২৫০-২৬০ রান তুলতেই পারতাম।’’
বাংলাদেশের এই লড়াইয়ের জন্য তাদের প্রশংসা করেছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালিও। টুইটারে তিনি নিজের দলকে অভিনন্দন জানানোর পরে লেখেন, ‘‘দুর্দান্ত লড়াইয়ের জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন।’’ এমনকী টুইটারে বীরেন্দ্র সহবাগ, ভিভিএস লক্ষ্মণরাও বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। এক সময় বাংলাদেশকে তাচ্ছিল্য করা সহবাগ লেখেন, ‘‘শাকিব-তামিমদের ছাড়াও যে লড়াইটা করল বাংলাদেশ, সে জন্য ওদের টুপি খুলে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আর লক্ষ্মণ লেখেন, ‘‘বাংলাদেশ দৃঢ় মনোভাব দেখিয়ে দুর্দান্ত লড়াই করেছে। কখনও হাল না ছেড়ে নিজেদের উজাড় করে দিয়েছে। এই মানসিকতার জন্য অভিনন্দন।’’
লড়াকু এই মনোভাবই অদূর ভবিষ্যতে মাশরফিদের সাফল্য এনে দিতে সাহায্য করবে বলে আশা সে দেশের ক্রিকেটমহলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy