Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দুরন্ত মাঝমাঠই আজ ফারাক করে দেবে ফাইনালে

মাঠের প্রান্তসীমার দিকে কাছাকাছি কোনও জায়গা—যেখানে বিপক্ষ ফুটবলার বলের কাছে পৌঁছে গিয়ে বিপদের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেন তা আগাম বুঝে ফেলা, প্রচুর ছোট ছোট পাস খেলা, মাঝমাঠে বলের দখল রাখার জন্য ফুটবলার বাড়িয়ে রাখা যাতে আচমকা শটে গোল না হয়— এ সবই দেখা গিয়েছে এ বারের বিশ্বকাপে।

মারিয়ো কেম্পেস
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ০৪:২১
Share: Save:

দুর্দান্ত একটা বিশ্বকাপ হয়ে গেল রাশিয়ায়। যেখানে মাঠের মধ্যে বল থামানোও সমান গুরুত্ব পেল এ বার। আর এই বল থামানোর বিষয়টা ফলাফলের ব্যাপারেও কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে। আর তারই ফল বাঁক খাওয়ানো ফ্রি-কিক বা বা কর্নার কিক থেকে দুরন্ত সব গোল।

মাঠের প্রান্তসীমার দিকে কাছাকাছি কোনও জায়গা—যেখানে বিপক্ষ ফুটবলার বলের কাছে পৌঁছে গিয়ে বিপদের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেন তা আগাম বুঝে ফেলা, প্রচুর ছোট ছোট পাস খেলা, মাঝমাঠে বলের দখল রাখার জন্য ফুটবলার বাড়িয়ে রাখা যাতে আচমকা শটে গোল না হয়— এ সবই দেখা গিয়েছে এ বারের বিশ্বকাপে।

সব দলের অনুশীলনেই রক্ষণের চেয়ে আক্রমণের ব্যাপারটা গুরুত্ব পায় বেশি। এই বিশ্বকাপে খেলাগুলো দেখে সেটাই বোঝা গিয়েছে। একটা দল সেটপিস থেকে গোল করলেও, দেখা গিয়েছে বিপক্ষের সেটপিসের সময় গোল খাচ্ছে। উরুগুয়ে খিমেনেস-এর গোলে উল্লাস করলেও ঠিক সে ভাবেই ওদের বিরুদ্ধে গোল করে গিয়েছে রাফায়েল ভারান। ইংল্যান্ডের হয়ে যেমন মাগুয়্যের গোল করতে সহায়তা করেছেন, কিন্তু তিনিই কলম্বিয়ার ইয়েরি মিনাকে আটকাতে পারেননি।

এর একটা ব্যাখ্যা হল, অনুশীলনে সেট পিসের সময় কোচের হাতে ‘কিকার’-রা রয়েছেন। যারা হেড দিয়ে রক্ষণে বল বিপন্মুক্ত করছেন, তাঁরা তখন বিপক্ষ। কিন্তু অনুশীলনে যারা কিক নিচ্ছেন, ম্যাচের সময় তো তারা আবার বিপক্ষ হয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা ফাঁকা জায়গাগুলোতে পৌঁছে যাচ্ছেন মাঠে বলের গতিবিধি দেখে। ফলে রক্ষণে ফাঁকা জায়গার সুযোগ নেওয়ার অনুশীলন ঠিকঠাক হলেও, ফাঁকা জায়গা ভরাটের অনুশীলন হয় কিছুটা কম মাত্রায়। কিছু দল নিশানা বানিয়েছে ঠিক এই জায়গাটাকেই।

এ বার আসা যাক, মাঠের মধ্যে বল যখন না থেমে গড়াচ্ছে সেই সময়ে। তখন কিন্তু অর্থবহ পাস করতে হবে নিজের দলের উদ্দেশে। রবিবার বিশ্বকাপ ফাইনালে যে ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়া খেলছে—এই দুই দলের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে এই ব্যাপারগুলোই মিলছে। জমাট মাঝমাঠ। যার এক দিকে কঁতে পোগবা। অন্য দিকে রাকিচিত, মদ্রিচ।

এনগোলে কঁতে প্রতি তিরিশ সেকেন্ড অন্তর এই বিশ্বকাপে বল বিপন্মুক্ত করেছেন। আর মিস পাস তিনি করেন প্রতি ছয় মাসে একটা। খেলাটা দারুণ ভাবে বুঝে মাঝমাঠ পরিচালনা করেছেন কঁতে। বিপক্ষের আক্রমণের সময় বল কোথায় পৌঁছাতে পারে, তা আগাম বুঝে নিতেও দক্ষ এই ফরাসি ফুটবলার। বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে মারুয়ান ফেলাইনির উদ্দেশে ভেসে আসা বিষাক্ত ক্রসগুলিকে ও একাই নির্বিষ করে দিয়েছিল। ফলে বিপক্ষের বলের রসদ বন্ধ হয়ে যায়।

লুকা মদ্রিচ যে রকম। ৩৩ বছর বয়সেও দেখলাম, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সময়ে বলের দখল হারাননি। বল কেড়েছেন। পাস বাড়িয়েছেন। কিন্তু গোলের সামনে কখনও ফাউল করে বল থামাতে দেখা যায়নি। এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা ফরোয়ার্ড মদ্রিচই।

আর একজন ইভান রাকিতিচ। ক্রোয়েশিয়া মাঝমাঠে মদ্রিচ ও রাকিতিচ একে অপরের পরিপূরক। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দু’টো গোলের সময়ই রাকিতিচদের মাঝমাঠ একাধিক পাস খেলে ফাঁকা জায়গা তৈরি করে ফেলেছিল।

দুর্দান্ত এই সব মিডফিল্ডারদের জন্যই ফাইনালে গিয়েছে ফ্রান্স আর ক্রোয়েশিয়া। এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই।

spom

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE